এই বীর বাহাদুর বান্দরবানের সংসদ সদস্য নয়, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা মাতৃহীন হাতি শাবক। মাত্র আড়াই মাস বয়সী হাতি শাবকটি মায়ের সাথে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বাঁশখালী জলদি রেঞ্জের সংরক্ষিত বন সংলগ্ন বিলে খাদ্যের সন্ধানে গিয়ে কাদামাটিতে আটকা পড়ে। পরে হাতির পাল শাবকটি উদ্ধার প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে চলে যায়।
হাতি শাবকটিকে কাদামাটিতে আটকা পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন বন কর্মীদের খবর দেয়। এমন খবর পেয়ে বন কর্মীরা মরণাপন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে নিবিড় পরিচর্যা ও চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তুলার জন্য ডুলাহাজারা সাপারি পার্কের বন্যপ্রাণী হাসপাতালে হস্তান্তর করেন।
পার্ক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর আড়াই মাস বয়সী মরণাপন্ন হাতি শাবকটি বাঁশখালীস্থ জলদি রেঞ্জের বন কর্মীরা উদ্ধার করে পার্কে প্রেরণ করে। সেই সময় হাতি শাবকটি বাঁচিয়ে রাখা দূরহ মনে করেছিল হাসপাতালের ভেটেরিনারি চিকিৎসক জুলকার নাঈম। কিন্তু তারা হাল ছাড়েনি, নিয়মিত পরিচর্যা ও পরিমাণ মতো লেকটুজেন দুধ পান করিয়ে সুস্থ করে তুলে। প্রথম দিকে প্রতিদিন ৯০০ গ্রাম পরিমাণ ১০ বার দুধ পান করিয়ে সুস্থ করে তুলেন।
সুস্থ হওয়ার পর হাতি শাবকটির নাম রাখা হয় বীর বাহাদুর। অনেকে বীর বাহাদুর নাম শুনলে মনে করেন বান্দরবান-৩০০নং আসনের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর। প্রকৃতপক্ষে এই বীর বাহাদুর একটি হাতি শাবক। যার বর্তমান বয়স ১ বছর ২ মাস ২৮ দিন। তবে এই বয়সেও হাতি শাবকটিকে দৈনিক ৭ বার আড়াই লিটার করে লেকটোজেন দুধ পান করাতে হচ্ছে। এখন হাতি শাবকটি আস্তে আস্তে কলাগাছের নরম অংশ ও খেতে অভ্যস্ত হয়েছে। তবে হাতি শাবকটি বেশ হৃষ্টপুষ্ট।
হাসপাতালের কর্মী জুয়েল দাবি করেছেন- শাবকটি বেশ দুষ্ট। হাসপাতালের বেষ্টনীতে দাপিয়ে দিন কাটাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আরও অন্তত ১ বছর নিয়মিত দুধ পান করাতে হবে। বীর বাহাদুর পুরুষ লিঙ্গের। ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের টেকনাফের বনাঞ্চল থেকে ৩ মাস বয়সী স্ত্রী লিঙ্গের একটি হাতি শাবক উদ্ধার করে পার্কে প্রেরণ করা হলে সেই হাতি শাবকটি একই কায়দায় লালন-পালন করে পার্ক কর্তৃপক্ষ।
এই হাতি শাবকটি বর্তমান বয়স প্রায় সাড়ে ৪ বছর। নামকরণ করা হয়েছে যমুনা। যমুনাকে প্রশিক্ষিত করে হাতি বেষ্টনীতে বড় হাতিগুলোর সাথে রাখা হয়েছে।
এদিকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি প্রসবকালীন সময়ে মা হাতি মারা গেলেও ১ দিন বয়সী পুরুষ লিঙ্গের একটি হাতি শাবক টেকনাফের বনাঞ্চল থেকে সাফারি পার্ক হাসপাতালে প্রেরণ করে বনবিভাগ। বর্তমানে হাতি শাবকটি ১০দিন পূর্ণ হলেও বেশ সুস্থ্য ও সবল রয়েছে। নিয়মিত দুধ পান করানো হচ্ছে। নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে হাতি শাবকটি বেড়ে উঠছে আগের দুটির মতোই।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ধারণা, একদিন বয়সী হাতি শাবক লালন-পালনে অভিজ্ঞতা তাদের এই প্রথম। তবে হাতি শাবকটি যেভাবে রয়েছে, সুস্থই রয়েছে। তবে এই হাতি শাবকটির নামকরণ এখনও করা হয়নি। পরে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শাবকটির নামকরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ ধ প ন কর ন বয়স
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরে চুরির মামলার ২ আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
বন্দরে বসতঘরে চুরির ঘটনার মামলার ২ চোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হলো বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দা ছোট মসজিদ এলাকার কাজীমুদ্দিনের ছেলে সাব্বির(২২) ও একই এলাকার ইয়াজল হোসেন মিয়ার ছেলে অলিদ(৪০)। এ ব্যাপারে গৃহিনী শান্তা বেগম বাদী হয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন। যার নং ১(১১)২৫।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে পুলিশ। ধৃতদের সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উল্লেখিত মামলায় আদালত প্রেরণ করেছে পুলিশ।
গত রোববার (২ নভেম্বর) রাতে বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ৪ অক্টোবর বন্দর উপজেলা ফরাজীকান্দা এলাকায় এ চুরির ঘটনাটি ঘটে।
মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদিনী বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা গ্ ছোট মসজিদস্থ তার পিতার বাড়িতে বসবাস করে আসছে। বিবাদী একই এলাকার সম্পর্কে বাদিনী চাচাত ও ফুফাত ভাই ।
গত ৩ অক্টোবর বাদিনী নানা মৃত্যুবরন করলে বাদিনীসহ তার পরিবারের লোকজন মুন্সিগঞ্জস্থ নানা বাড়িতে যায়। পরের দিন গত ৪ অক্টোবর বাদিনী তার পিতার বাড়িতে এসে রুমে প্রবেশ করলে সবকিছু এলোমেলো দেখতে পায়।
সন্দেহ হলে ঘরের ভিতর তল্লাশী করিলে দেখতে পাড আমাদের দুটি এড্রয়েট মোবাইল সেট,মাটির ব্যাংকে রক্ষিত ১০ হাজার টাকা,দামী ব্রান্ডের ব্লুটোথসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি করে নিয়ে যায় ।
ঘরের বিভিন্ন স্থানে খোজ করিয়াও বর্নিত মালামালের কোন সন্ধান পাওয়া যায় নাই। বিবাদীরা ইতিপূর্বেও আমার বাড়িতে চুরি করেছিল এবং আমাদের প্রতিবেশিরা আমাদের অনুপস্থিতিতে বাড়ির চারপাশে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছে বলে জানায়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে। পরে আটককৃতকে পুলিশ আইনের ৩৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।