কথায় আছে না, মানি টকস! দুর্বার রাজশাহীর খেলোয়াড়রা সেটারই যেন প্রমাণ দিলেন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। পারিশ্রমিক পাননি বলে অনুশীলন বয়কট করেছিলেন। ম্যাচ না খেলার হুমকি দিয়েছিলেন। পরিস্থিতি সামলে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা নগদ অর্থ পরিশোধ করে তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। মাঠে এবার খেলোয়াড়রা ফ্র্যাঞ্চাইজির মুখে হাসি ফোটালেন।  
টাকা পেয়েই ‘দুর্বার’ দুর্বার রাজশাহী। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি, ২০২৫) সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৬৫ রানে হারিয়ে জয়ে ফিরেছে রাজশাহী। ব্যাটিং-বোলি-ফিল্ডিং তিন বিভাগে সমানতালে জ্বলে উঠে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে সিলেটকে।
আগের দিন দলের ম্যানেজার মেহরাহ হোসেন অপি বলেছিলেন, ‘‘বিপিএলই তাদের (খেলোয়াড়দের) আয়ের বড় উৎস। ক্রিকেটারদের আয়ের উৎস যদি ভালো থাকে সেটার প্রতিফলন মাঠেও ঘটবে আমার বিশ্বাস।’’ বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের কথার প্রতিফলন ২২ গজে দেখা মিলল। রাতে পারিশ্রমিক পেয়ে আজ দুপুরেই জ্বলে উঠেছেন তারা।
আরো পড়ুন:
মা হারালেন খালেদ, চিটাগং কিংসের শোক
সিলেটের সামনে ১৮৪ রানের চ্যালেঞ্জ
সিলেটের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১৮৪ রান করে রাজশাহী। জবাবে তাদেরকে আটকে দেয় ১১৯ রানে। সাত ম্যাচে যা তাদের তৃতীয় জয়। সিলেটের সাত ম্যাচে পঞ্চম হার।
নানা জটিলতা কাটিয়ে আজ রাজশাহীর ক্রিকেটাররা মাঠে কেমন পারফর্ম করেন সেটা ছিল দেখার। হোটেল থেকে মাঠ, মাঠে নেমে ম্যাচ খেলা এবং সবশেষে জয় তুলে নেওয়া, সব কিছুতেই খেলোয়াড়দের নিবেদনে কোনো ঘাটতি চোখে পড়েনি। বরং পুরো দলকে প্রাণবন্ত মনে হয়েছে।
পারফরম্যান্সে সেই ছাপ দেখা গেল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন রায়ান বার্ল। ২৭ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার। এছাড়া অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ২২ বলে ৩২, জিসান আলম ১৮ বলে ২০ রান করেন। ১৯ রানের দুইটি ইনিংস আসে মোহাম্মদ হারিস ও ইয়াসির আলীর ব্যাট থেকে। শেষ দিকে মৃত্যুঞ্জয়ের ১৪ রানে লড়াকু পুঁজি পায় রাজশাহী।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও যে-ই মাঠে গিয়েছেন ছোট কিন্তু কার্যকারী ইনিংস খেলে দলের ব্যাটিংয়ে অবদান রাখেন। তাতে ইনিংস বড় করতে না পারার ভুল কেটে যায়।
সিলেটের বোলিংয়ে তেমন আলো ছড়ায়নি। পেসার রুয়েল মিয়া ৩২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ছিলেন দলের সেরা। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন নাহিদুল ও নিহাদুজ্জামান। ৪ ওভারে ৩৯ ও ৩ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন যথাক্রমে রিচ টপলি ও আরিফুল হক।
সিলেটের ব্যাটিং ছিল ছন্নছাড়া। দুই ওপেনার দুই অঙ্কে পৌঁছার আগেই সাজঘরে ফেরেন। তৃতীয় উইকেটে জাকির হাসান ও জর্জ মুনসে ৫৮ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কিন্তু এনামুলের দুর্দান্ত ক্যাচে জাকির (৩৯) সাজঘরে ফেরার পর সিলেটের ব্যাকগিয়ারে চলা শুরু হয়ে যায়। এরপর তারা আর ম্যাচে ফেরেননি। অফস্পিনার ডেয়ালের বল স্লগ খেলতে গিয়ে থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন ২৮ বলে ৩৯ রান করা জাকির। সেখানে এনামুল দৌড়ে, ড্রাইভ দিয়ে ক্যাচ নেন। মুনসের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। শেষ দিকে জাকের আলী ৩ ছক্কায় ২০ বলে ৩১ রান করে পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়ে আনেন।
ম্যাচ পরিচালনার সঙ্গে এনামুল ৩ ক্যাচ নিয়ে ফিল্ডিংয়ে অবদান রাখেন দারুণভাবে। বল হাতে ৩ উইকেট নিয়ে সানজামুল ছিলেন তাদের সেরা। ২টি করে উইকেট নেন তাসকিন, মৃত্যুঞ্জয় ও ডেয়াল।
শঙ্কা কাটিয়ে মাঠে ফিরে রাজশাহীর ক্রিকেটাররা দুর্দান্ত পারফলম্যান্সে জয়ে ফিরেছে। এই ধারাবাহিকতা সামনে থাকে নাকি সেটাই দেখার।
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল উইক ট ন র ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
ফোনে খালেদা জিয়া বললেন, ‘ভাই, জিয়াকে ড্রয়িংরুমে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’
৭৫-এর উত্তপ্ত নভেম্বর
শেখ মুজিব হত্যার পর বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ছিল দ্বিধাগ্রস্ত এবং দেশ প্রতিদিন অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা সর্বজনাব নজরুল ইসলাম তাজউদ্দীন আহমেদ, মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও আবদুস সামাদ আজাদকে আটক করেন এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী করে রাখেন। বাতাসে প্রতিনিয়ত নানা গুজব উড়ছিল ও সাধারণ নাগরিকগণ ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। সেনানিবাসেও অস্থিরতা বিরাজ করছিল এবং ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যে, নিজেদের মধ্যে যে-কোনো সময়ে সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে আর্মিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি ছিল।
পদাতিক বাহিনীর মধ্যে, বিশেষ করে ঢাকা ব্রিগেডের ১ম, ২য় ও ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসারগণ মেজর ফারুক, রশিদ ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠছিল এবং আর্মির চেইন অফ কমান্ড পুনঃস্থাপনের জন্য তৎকালীন ব্রিগেড অধিনায়ক কর্নেল শাফায়াত জামিলও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন। কারণ তাঁর অধীনস্থ অফিসার ও সৈন্যগণই তাঁর সার্বিক কর্তৃত্ব উপেক্ষা করে শেখ মুজিব হত্যায় জড়িত ছিল। এ পরিস্থিতিতে সেনাসদরে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফও সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসারদের অনিয়ম ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা বলে উত্তেজিত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।
মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী (অব.) বীরবিক্রম