ভুল চিকিৎসায় ২ জনের মৃত্যু: টাকা দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা
Published: 17th, January 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় দুজন মারা যাওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে টাকা দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মীমাংসার অংশ হিসেবে নিহত দুই ব্যক্তির পরিবারকে ৩ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে বলে শোনা যাচ্ছে।   
এই দফারফার চেষ্টার সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও জড়িত বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়া দুই ব্যক্তির স্ত্রীকে হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের চাকরির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক ডা.                
      
				
তিনি বলেন, “হাসপাতালে অনেক রোগী মারা যায়। এজন্য রোগীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না। এ ধরনের কোনো তহবিলও নেই।”
নিহত জহিরুলের বড়ভাই মাসুক মিয়া জানিয়েছেন, ঘটনার দিনই একটি রাজনৈতিক দলের একাধিক নেতা বিষয়টি মীমাংসার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। তাকে আগামী ২৫ জানুয়ারি হাসপাতালে যেতে বলেছে।
তিনি বলেন, “রোগী মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, সেই কমিটির ডাকে আমি বৃহস্পতিবার হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কমিটির কাছেও ওই প্রস্তাবের কথাটি তুলে ধরেছি। তাছাড়া হাসপাতালের পরিচালক চাকরির যে প্রস্তাব দিয়েছে সে কথাও কমিটিকে জানিয়েছি।”
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, ভুল ইনজেকশনে রোগী মারা যাওয়ায় রোগীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, বুধবারের ঘটনার পর এ ওয়ার্ড থেকে অন্তত ছয়জন অস্ত্রোচারের রোগী পালিয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, খাদ্যনালিতে ছিদ্র থাকায় পেটে ব্যথাজনিত সমস্যা নিয়ে গত ১২জানুয়ারি হাসাপাতালে ভর্তি হন জেলার নিকলীর নোয়াপাড়া গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক জহিরুল ইসলাম (২৮) এবং হার্নিয়ার অপারেশনের জন্য গত ৭ জানুয়ারি ভর্তি হন কটিয়াদীর পূর্ব সহস্রাম গ্রামের মনিরুজ্জামান মল্লিক (৩২)। দুজনেরই গত বুধবার অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অপারেশনের আগে প্রস্তুতি হিসেবে সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে নার্স নাদিরা বেগমের ভুল ইনজেকশন প্রয়োগের ফলে ১০ মিনিটের মধ্যে মারা যান দুই রোগী।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই নার্স অ্যান্টিবায়োটিকের পরিবর্তে অ্যানেসথেশিয়ার ইনজেকশন দেওয়ায় তাদের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় সার্জারি বিভাগের ডা. অজয় সরকারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। অভিযুক্ত নার্সকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও রুজু হচ্ছে।
ঘটনার দিন নিহত দুজনের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল তারা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করবে। কিন্তু দুদিন হয়ে গেলেও কেউ থানায় মামলা করতে যায়নি।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা আল মামুন জানিয়েছেন, নিহত দুজনের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেনি। যদি মামলা হয় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/রুমন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ জন র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ফোনে খালেদা জিয়া বললেন, ‘ভাই, জিয়াকে ড্রয়িংরুমে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’
৭৫-এর উত্তপ্ত নভেম্বর
শেখ মুজিব হত্যার পর বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ছিল দ্বিধাগ্রস্ত এবং দেশ প্রতিদিন অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা সর্বজনাব নজরুল ইসলাম তাজউদ্দীন আহমেদ, মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও আবদুস সামাদ আজাদকে আটক করেন এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী করে রাখেন। বাতাসে প্রতিনিয়ত নানা গুজব উড়ছিল ও সাধারণ নাগরিকগণ ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। সেনানিবাসেও অস্থিরতা বিরাজ করছিল এবং ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যে, নিজেদের মধ্যে যে-কোনো সময়ে সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে আর্মিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি ছিল।
পদাতিক বাহিনীর মধ্যে, বিশেষ করে ঢাকা ব্রিগেডের ১ম, ২য় ও ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসারগণ মেজর ফারুক, রশিদ ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠছিল এবং আর্মির চেইন অফ কমান্ড পুনঃস্থাপনের জন্য তৎকালীন ব্রিগেড অধিনায়ক কর্নেল শাফায়াত জামিলও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন। কারণ তাঁর অধীনস্থ অফিসার ও সৈন্যগণই তাঁর সার্বিক কর্তৃত্ব উপেক্ষা করে শেখ মুজিব হত্যায় জড়িত ছিল। এ পরিস্থিতিতে সেনাসদরে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফও সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসারদের অনিয়ম ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা বলে উত্তেজিত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।
মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী (অব.) বীরবিক্রম