জেমস বর্গ। দীর্ঘদিন কাজ করছেন শরীরের ভাষা নিয়ে। তাঁর মতে, মানুষ অভিব্যক্তির ৯৩ শতাংশই শরীরী ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে সক্ষম। মাত্র ৭ শতাংশের জন্য তাকে শাব্দিক ভাষা ব্যবহার করতে হয়। এ শরীরী ভাষা দিয়েই আমরা বুঝতে পারি কার মনের অবস্থা কেমন, শরীরের অবস্থা কেমন। বাক্প্রতিবন্ধীদের কথা যদি বলতে হয়, তবে ওদের মুখ থেকে শব্দটি বেরোয় না। যেটি বেরোয়, সেটি বোঝার সাধ্য কার? তাদের অঙ্গভঙ্গি দেখেই বোঝা যায় তারা কী বলতে চায়। সারাদিন বাইরে ঘুরে ঘুরে বাড়িতে ফিরলে মা যেমন সন্তানের চেহারার দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারেন, সারাদিন কিছু খায়নি। সম্পর্কোন্নয়নের জন্য এই শরীরী ভাষা জানাটা ভীষণ জরুরি।
যদি থেমে যায় কিংবা সরে যায় দূরে: কেউ যখন আপনার কাছে আসবে তাকে ভালোমতো পর্যবেক্ষণ করুন। আপনি যদি তার কাছাকাছি যেতে চান, তবে নিজেও খানিকটা এগিয়ে যান। যদি দেখেন আপনার সঙ্গী ওখানে থেমে গেছে কিংবা দূরে সরে গেছে, তবে বুঝতে হবে সে আপনার কাছাকাছি আসতে চাইছে না। যদি আপনার কাছে একটু একটু করে এগিয়ে আসে, বুঝতে হবে সে আপনাকে পছন্দ করে।
মাথা নাড়ানোর ভঙ্গি: সঙ্গীর মাথা নাড়ানো দেখেও বোঝা যায় অনেক কিছু। কারও প্রতি সহানুভূতি, রাগ, অভিমান প্রকাশ করা যায় কেবল মাথা নাড়িয়েই। কেউ মাথা নিচু করে থাকলে বুঝতে হবে আপনার কাছ থেকে কিছু লুকাতে চাইছে বা সে লজ্জিত; অথবা সে আপনাকে সম্মান দেখাচ্ছে। আপনি যদি বস হন, তবে আপনার সামনে অধস্তন কেউ যদি মাথা উঁচু করে থাকে, বুঝতে হবে সে আপনাকে তোয়াক্কা করে না।
মনের কথা চোখে: কেউ মিথ্যা বলছে কিনা, নার্ভাস কিনা বোঝা যায় চোখের দিকে তাকালে। আমাদের অনেক আবেগ আছে, যা চোখ দিয়েই বোঝা যায়। বলা যায়, মনের কথাগুলোই চোখ বলে দেয়।
অনুকরণের ভাষা: খেয়াল করে দেখুন তো কেউ আপনাকে অনুকরণ করছে কিনা? এই অনুকরণের ভাষা কথায় হতে পারে, কাজে হতে পারে, অঙ্গভঙ্গিতেও হতে পারে। যদি বুঝতে পারেন কেউ আপনাকে অনুকরণ করছে, তবে সে আপনার কাছাকাছি আসতে চায়।
কেউ কিছু লুকোচ্ছে?: খেয়াল করুন, কেউ আপনার সামনে এসে নার্ভাস বা বিচলিত হয়ে পড়ছে কিনা। এটি বোঝা যাবে তার কথা বলার ভঙ্গিতে। গলার স্বরে। তার চোখের ভ্রু দেখেও বোঝা যায়।
যেভাবে বদলাবেন: নিজের শরীরের ভাষা বোঝার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চর্চা করা। ধরা যাক, আজ সারাদিন আপনি যাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন, তাদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলেছেন কিংবা তাদের সঙ্গে আপনার শরীরের অঙ্গভঙ্গি কেমন ছিল, সেটি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আবার করুন। u
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।
সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।
জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।
তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।
এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ রিকোভারীবৃন্দ।