Samakal:
2025-06-16@08:59:24 GMT

শরীরের ভাষা পড়ে মানুষ বুঝুন

Published: 18th, January 2025 GMT

শরীরের ভাষা পড়ে মানুষ বুঝুন

জেমস বর্গ। দীর্ঘদিন কাজ করছেন শরীরের ভাষা নিয়ে। তাঁর মতে, মানুষ অভিব্যক্তির ৯৩ শতাংশই শরীরী ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে সক্ষম। মাত্র ৭ শতাংশের জন্য তাকে শাব্দিক ভাষা ব্যবহার করতে হয়। এ শরীরী ভাষা দিয়েই আমরা বুঝতে পারি কার মনের অবস্থা কেমন, শরীরের অবস্থা কেমন। বাক্‌প্রতিবন্ধীদের কথা যদি বলতে হয়, তবে ওদের মুখ থেকে শব্দটি বেরোয় না। যেটি বেরোয়, সেটি বোঝার সাধ্য কার? তাদের অঙ্গভঙ্গি দেখেই বোঝা যায় তারা কী বলতে চায়। সারাদিন বাইরে ঘুরে ঘুরে বাড়িতে ফিরলে মা যেমন সন্তানের চেহারার দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারেন, সারাদিন কিছু খায়নি। সম্পর্কোন্নয়নের জন্য এই শরীরী ভাষা জানাটা ভীষণ জরুরি। 
যদি থেমে যায় কিংবা সরে যায় দূরে: কেউ যখন আপনার কাছে আসবে তাকে ভালোমতো পর্যবেক্ষণ করুন। আপনি যদি তার কাছাকাছি যেতে চান, তবে নিজেও খানিকটা এগিয়ে যান। যদি দেখেন আপনার সঙ্গী ওখানে থেমে গেছে কিংবা দূরে সরে গেছে, তবে বুঝতে হবে সে আপনার কাছাকাছি আসতে চাইছে না। যদি আপনার কাছে একটু একটু করে এগিয়ে আসে, বুঝতে হবে সে আপনাকে পছন্দ করে।
মাথা নাড়ানোর ভঙ্গি: সঙ্গীর মাথা নাড়ানো দেখেও বোঝা যায় অনেক কিছু। কারও প্রতি সহানুভূতি, রাগ, অভিমান প্রকাশ করা যায় কেবল মাথা নাড়িয়েই। কেউ মাথা নিচু করে থাকলে বুঝতে হবে আপনার কাছ থেকে কিছু লুকাতে চাইছে বা সে লজ্জিত; অথবা সে আপনাকে সম্মান দেখাচ্ছে। আপনি যদি বস হন, তবে আপনার সামনে অধস্তন কেউ যদি মাথা উঁচু করে থাকে, বুঝতে হবে সে আপনাকে তোয়াক্কা করে না।
মনের কথা চোখে: কেউ মিথ্যা বলছে কিনা, নার্ভাস কিনা বোঝা যায় চোখের দিকে তাকালে। আমাদের অনেক আবেগ আছে, যা চোখ দিয়েই বোঝা যায়। বলা যায়, মনের কথাগুলোই চোখ বলে দেয়। 
অনুকরণের ভাষা: খেয়াল করে দেখুন তো কেউ আপনাকে অনুকরণ করছে কিনা? এই অনুকরণের ভাষা কথায় হতে পারে, কাজে হতে পারে, অঙ্গভঙ্গিতেও হতে পারে। যদি বুঝতে পারেন কেউ আপনাকে অনুকরণ করছে, তবে সে আপনার কাছাকাছি আসতে চায়। 
কেউ কিছু লুকোচ্ছে?: খেয়াল করুন, কেউ আপনার সামনে এসে নার্ভাস বা বিচলিত হয়ে পড়ছে কিনা। এটি বোঝা যাবে তার কথা বলার ভঙ্গিতে। গলার স্বরে। তার চোখের ভ্রু দেখেও বোঝা যায়। 
যেভাবে বদলাবেন: নিজের শরীরের ভাষা বোঝার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চর্চা করা। ধরা যাক, আজ সারাদিন আপনি যাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন, তাদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলেছেন কিংবা তাদের সঙ্গে আপনার শরীরের অঙ্গভঙ্গি কেমন ছিল, সেটি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আবার করুন। u

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আপন র ক ছ আপন ক

এছাড়াও পড়ুন:

পশ্চিমবঙ্গের চার শ্রমিককে বিদেশি বলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা ভারতের

আসাম রাজ্যের পর গোটা ভারত থেকেই বাংলাদেশি বলে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো (পুশইন) হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা–ই নয়, প্রমাণের অভাবে আবার তাঁদের অনেককে ফিরিয়েও আনতে হচ্ছে বলে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত অঞ্চল থেকে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরই সংবাদমাধ্যম।

দক্ষিণ ও মধ্য বাংলার দুই জেলা বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের চার পরিযায়ী শ্রমিক মহারাষ্ট্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে মহারাষ্ট্র পুলিশ তাঁদের ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তুলে দেয়। এরপর বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। এ চারজনই আবার মুসলমান।

মুম্বাইয়ে কাজ করতে যাওয়া মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমানের এই চার পরিযায়ী শ্রমিককে মহারাষ্ট্র পুলিশ বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। কোনো রকম যাচাই না করেই তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজ্য পুলিশের উদ্যোগে গতকাল রোববার বিকেলে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) কাছ থেকে ওই তিন নাগরিককে ফেরত নিয়ে বিএসএফ তাঁদের কোচবিহার জেলার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

চারজনের মধ্যে তিনজনই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, ভগবানগোলার মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহবুব শেখ ও বেলডাঙার কাজিশাহার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। অন্যজন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুলুট গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফা কামাল। তাঁরা প্রত্যেকেই পরিযায়ী শ্রমিক। মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে তাঁরা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। হেফাজতে নেওয়ার পাঁচ দিন পর তাঁদের উদ্ধার করা হলো বলে জানানো হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্র ‘পুবের কলম’ আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাঁদের কাছে বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে দুই প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্র ‘পুবের কলম’ আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাঁদের কাছে বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে দুই প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দুই দিন ধরে তাঁরা কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থেকে কিছুটা দূরে জিরো পয়েন্টে ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় মুঠোফোন থেকে ভিডিও বার্তায় ওই চার শ্রমিক তাঁদের দুর্দশার কথা জানান। তারপরেই তাঁদের ফেরানোর তৎপরতা শুরু করেন পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলামসহ অন্য জনপ্রতিনিধিরা। পুলিশও বিষয়টি বিএসএএফকে জানায়।

হরিহরপাড়ার বাসিন্দা শামীম রহমান গণমাধ্যমে বলেন, ‘স্থানীয় তৃণমূলের রাজনৈতিক নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়। তারপর তাঁদের ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়। তাঁরা উদ্ধার হয়ে ঘরে ফিরছেন ভেবে ভালো লাগছে।’

সূত্রের খবর, বাংলাদেশি সন্দেহে চারজনকে আটক করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে ১০ জুন বিএসএফের হাতে তুলে দেয় মহারাষ্ট্র পুলিশ। তাঁদের মুম্বাই থেকে আগরতলা ও পরে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে পাঠানো হয়। ওই শ্রমিকদের টাকা, মুঠোফোনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন দুই বছর ধরে মুম্বাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। গতকাল সকালে তাঁর স্ত্রী পিংকি বিবি হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখের সঙ্গে দেখা করেন। বিধায়কের মাধ্যমে বৈধ নথি সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলাম ও প্রশাসনের কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়। তারপরই তাঁদের ঘরে ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়।

হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ বলেন, নাজিমুদ্দিন এ দেশেরই নাগরিক। তাঁর বৈধ নথি ও নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র রয়েছে।

বিধায়ক নিয়ামত শেখ আরও বলেন, ‘তাঁর মতো আরও তিনজনকে বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় কেন্দ্রের বিএসএফ। গতকাল বিকেলে তাঁরা বিএসএফের হেফাজতে আসেন। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি তাঁরা ঘরে ফিরবেন।’

এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ পুলিশের তরফে গতকাল জানানো হয়, আটক ব্যক্তিদের কাগজপত্র রোববার বিএসএফের হাতে তুলে দেয় রাজ্য পুলিশ। এরপরে বিএসএফ যাবতীয় কাগজপত্র রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে যাচাইয়ের পরে তা বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) হাতে তুলে দেয়।

এরপর বিএসএফ সবাইকে ফেরানোর ব্যবস্থা করে এবং কোচবিহার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মুর্শিদাবাদ ও বর্তমানের জেলা পুলিশের একটি দল ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আজ সোমবার তাঁদের নিজে নিজে জেলায় ফেরানো হবে বলে জানা গেছে।

চারজনের মধ্যে তিনজনই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, ভগবানগোলার মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহবুব শেখ ও বেলডাঙার কাজিশাহার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। অন্যজন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুলুট গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফা কামাল।

বাঙালি বলে হেনস্তা পশ্চিমবঙ্গে

তবে শুধু দরিদ্র পরিযায়ী শ্রমিকই নন, পশ্চিমবঙ্গে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত অনেকেই সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, তাঁদের অন্যভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।

দিল্লির এক অধ্যাপিকা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক মাসে চারবার দক্ষিণ কলকাতার প্রধান পাসপোর্ট অফিসে গিয়েও তিনি তাঁর ২০০৭ সালের পুরোনো পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারেননি।

এই অধ্যাপিকা বলেন, ‘আমাকে পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, এখানে প্রচুর বাংলাদেশি ঢুকেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সে কারণে আমাদের যাঁদের প্রায় ২০ বছর ধরে বৈধ ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে, তাঁদেরও সহজে পাসপোর্ট নবায়ন করা হচ্ছে না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ