জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের অনুদান দিল কুবি
Published: 19th, January 2025 GMT
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার করে এ অনুদানের চেক প্রদান করা হয়েছে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে ও জনসংযোগ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এমদাদুল হকের সঞ্চালনায় আহতদের হাতে এ চেক প্রদান করা হয়।
এ সময় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ এবং আন্দোলন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন, আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী, সমন্বয়ক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ মিয়া কাউসার বলেন, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিপ্লবকে সম্পূর্ণ ধারণ করতে পারেনি। তারা এখন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বহিষ্কার করলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় তা করতে পারেনি। এখনো সন্ত্রাসী ও তাদের দোসররা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়, আর ভয়ে থাকে বিপ্লবীরা।”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাম্মেল হোসেন আবির বলেন, “দেরিতে হলেও আহতদের স্মরণ করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ। তবে আমরা বিপ্লব পরবর্তী যেমন ক্যাম্পাস চেয়েছিলাম, তা এখনো হয়ে উঠেনি। বলা হয়েছিল, ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, মাদককে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে; কিন্তু তা হয়নি। প্রশাসন এখনো কোন সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পায়। তারা তাদের সিদ্ধান্ত বারবার পরিবর্তন করে কিসের ভয়ে? আমরা কথা দিচ্ছি, আপনারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আপনাদের পাশে থাকবে।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.
তিনি আরও বলেন, “আগে অনেকেই স্বৈরাচারের দলের হয়ে কাজ করেছেন। এখন একাধিক সমন্বয়ক দল তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আমাদের এগিয়ে যাওয়া কঠিন। আমাদের কাছে অনেকেই আসে কথা বলতে। তাদের অতীত ইতিহাস শুনলে বিশ্বাস হয় না। আবার সুযোগ পেলে যে আগের চরিত্রে ফিরে যাবে না, তার কী গ্যারান্টি? নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে সব জায়গায় আমরা ঝামেলায় পড়ে যাচ্ছি।”
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম বলেন, “আমাদের দায়িত্ব ছিল চেকগুলো তোমাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া। অবিশ্বাস্য ও অভূতপূর্ব ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে এই জেন-জির হাত ধরে। তারাই বুঝিয়ে দিয়েছে সংগ্রামের পথেই মুক্তি। তোমরাই জাতির সূর্য সন্তান। তোমাদের পাশে দাঁড়িয়েছি এটা বলব না, শুধু তোমাদের খোঁজ খবর নিয়েছি।”
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান, ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. শরীফুল করিম, লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোছা. শামসুন্নাহার, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মাকসুদুল করিম, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান খান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহমুদুল হাসান রাহাত প্রমুখ।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণঅভ য ত থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই বিপ্লবী মেয়েরা আজ নিরাপদ বোধ করছে না: ফরহাদ মজহার
জুলাই বিপ্লবে সামনে থাকা মেয়েরা আজ নিরাপদ বোধ করছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও কবি ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেছেন, “গণঅভ্যুত্থান বলতে আসলে কি বুঝায়, আমাদের সমাজে এর পরিষ্কার ধারণা নেই। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সামনের সাড়িতে অনেক মেয়ে ছিল। কিন্তু তারা হঠাৎ কোথায় হারিয়ে গেল? তারা আর রাজপথে নেই। কারণ তারা রাজপথে আর নিরাপদবোধ করছে না। আমাদের দেশের জনগণের মধ্যে রাষ্ট্র আর সরকারের পার্থক্য স্পষ্ট না। ফলে দেশ সামনের দিকে আগাতে পারছে না।”
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে ‘অভ্যুত্থান: বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজ এ সভার আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
রাবিতে ছড়িয়ে পড়েছে ছোঁয়াচে রোগ ‘স্ক্যাবিস’
রাবির ভর্তি পরীক্ষা: একটি ইউনিটেই ৭৫০ ওএমআর বাতিল
ফরহাদ মজহার বলেন, “১৯৭২ এর সংবিধান আমরা বাতিল করতে চেয়েছিলাম। কারণ, ওই সংবিধান সাধারণ মানুষ প্রণয়ন করেনি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শক্তি, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যাবস্থা, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ এক হয়ে লড়েছিল। কিন্তু বর্তমান ইন্টেরিম সরকার আমাদের জুলাই ঘোষণাপত্র করতে দেয়নি। আমরা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য জুলাই ঘোষণাপত্র ও নতুন গঠণতন্ত্র চাই।”
রাবি রেজিস্ট্রার ও সেন্টার ফর হেরিটেজ স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ছিলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক প্রমুখ।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী