রাজশাহী কলেজে ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নববর্ষ প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। পাঁচ দিনব্যাপি এ আয়োজনকে ঘিরে কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উদ্দীপনা।

প্রকাশনা উৎসবে শিক্ষার্থীদের জন্য বই ক্রয়ের পাশাপাশি স্টলে বসে পড়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। মেলার স্টলগুলো সজ্জিত করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন লাইটিং ও রঙিন আলোর সাজে, যা সন্ধ্যায় এক ভিন্ন আবহে রাঙিয়ে তুলেছে।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাজশাহী কলেজ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে আয়োজিত নববর্ষ প্রকাশনা উৎসবে শিক্ষার্থীদের বই পড়তে দেখা যায়। এ প্রকাশনা উৎসবটি গত শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) উদ্বোধন করা হয় এবং চলবে আগামী বুধবার (২২ জানুয়ারি) পর্যন্ত। 

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীর সুমাইয়া আক্তার বলেন, “এখানে ধর্মীয়সহ ক্যারিয়ার বিষয়ক বই রয়েছে, যা মানসিক চিন্তা শক্তির বিকাশ ঘটাতে সহায়ক। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারছে, যা আমার বেশ ভালো লেগেছে।”

কলেজের একাদশের শ্রেণির শিক্ষার্থী অঙ্কুশ সরকার বলেন, “এখানে বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে, যেখান থেকে আমরা জ্ঞান অর্জন করতে পারছি। মেলায় বিভিন্ন প্রকাশনীর বই রয়েছে, যা সব ধরনের পাঠকদের জন্য অনেক উপকারী।”

এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসান মাহমুদ বলেন, “আমাদের এ বই উৎসবটি আয়োজন মূলত রাজশাহী কলেজ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য। ইসলামী ছাত্রশিবির মূলত একটি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন। আমাদের ২০০টির বেশি প্রকাশনী রয়েছে। এ প্রকাশনা উৎসবে রয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির এর সংবিধান, কর্মপদ্ধতি, কিভাবে ইসলামী ছাত্রশিবির পরিচালিত হয় ইত্যাদি। পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক এবং একজন আদর্শ মুসলিম হিসেবে করণীয় বিষয়ক বিভিন্ন বই।”

তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে এবং তাদের বিভিন্ন কল্যাণমূলক বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদরা যে সোনালী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছে, শিক্ষার্থীসহ আমাদের সবাইকে সেটা রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।”

ঢাকা/ফারজানা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফসলের ক্ষেতে আশার আলো

বৈশাখ মাস, চারদিকে উৎসবের আমেজ। সেই উৎসবের ঢেউ লেগেছে শহর-বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে। নতুন ধান ঘরে তোলার ধুম লেগেছে হাওর অঞ্চলে; বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ কয়েকটি এলাকায়। হাওরের পুবালি বাতাসে এখন পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। বৈশাখ এলেই সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে চিরচেনা এ রূপ চোখে পড়ে। ঠা-ঠা রোদ মাথায় নিয়ে ক্ষেতে ধান কাটেন কৃষক। অন্যদিকে চলে মাড়াই। কিষানিরা মনের আনন্দে মাড়াই করা ধান শুকান। বিকেলের শান্ত রোদে শুকনো ধান মাথায় নিয়ে ঘরে ফেরেন।
ধান কাটা উৎসবে শুধু কিষান-কিষানি নন, সব বয়সী মানুষই যোগ দেন। হাওরে এটি এক অনন্য উৎসব। চলে বৈশাখজুড়ে। এ উৎসবের কাছে কাঠফাটা রোদ, ঝড়-বৃষ্টি যেন তুচ্ছ। ধানের সবুজ শীষের রং যখন লালচে হতে শুরু করে, তখন কৃষকের মনের রং বদলায়। চোখ-মুখ খুশিতে ভরে ওঠে। লোকমুখে প্রচলিত– বছরের প্রথম দিনে ঘরে ফসল তুললে সারাবছর অভাব থাকে না। তাই তো হাওরে চলছে পাকা ধান কাটার উৎসব। তবে চলতি মৌসুমে বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ধান তলিয়ে যায়। যাতে অনেক কৃষক নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
আনন্দ-বেদনার এ বৈশাখে প্রকৃতি নতুন বিন্যাসে সাজে। বসন্তে প্রকৃতিতে যে রং লাগে, তা পূর্ণতা পায় বৈশাখে। অসীম আকাশে নানা বর্ণের মেঘের আনাগোনা আমাদের মনে সঞ্চারিত করে সঞ্জীবনী মন্ত্র। চোখে প্রশান্তি এনে দেয় সর্ববিস্তৃত প্রকৃতি। এ সময় চারদিকে আগুন ছড়ানো কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, জারুল, বাগানবিলাসসহ প্রকৃতিতে রঙের ছড়াছড়ি। দেখা মেলে আম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুলসহ মধুমাসের বিভিন্ন ফলের। কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলা মেতে ওঠে উৎসব আমেজে। বৈচিত্র্যময় সমারোহে বসে বৈশাখী মেলা। এতে লোকগান, পুতুলনাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, সার্কাস ইত্যাদি আকর্ষণ করে সবাইকে।
ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে রুদ্রমূর্তির বৈশাখে প্রকৃতিতে থাকে ভিন্ন চেহারা। কালবৈশাখী আসে তীব্রবেগে। উড়িয়ে নিয়ে যায় অভাগীর জীর্ণ কুটির। উপকূলে বিপদ হয়ে আসে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস। গ্রীষ্মের তাপদাহে তটস্থ হয় মানুষ। এ সময় আবহমান গ্রামবাংলার ছোট নদী, খালবিল, ডোবা শুকিয়ে যায়। কৃষকরা পড়েন বিপাকে। আবার এ সময়ে প্রকৃতি সাজে নতুন করে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করা মানুষ একটু স্বস্তি পেতে আশ্রয় নেয় সবুজ প্রকৃতির শীতল ছায়ায়। একদিকে বৈশাখ খরতাপ ছড়ায়, অন্যদিকে প্রকৃতির প্রশান্তির শীতল ছোঁয়া দেয় পরম আনন্দ। বৈশাখ আসে নতুন করে সব গড়তে। শীর্ণ-জীর্ণতায় সবুজ সতেজ করে তুলতে। ‘নূতনের কেতন উড়ে’ কালবৈশাখীতে। একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে শুরু হয় নবজীবনের হিসাবনিকাশ। স্বপ্নমুখর বৈশাখের রং তাই একটু বেশিই উজ্জ্বল। প্রকৃতি সজীব সতেজ আর মানুষেরা প্রাণচঞ্চল। 
সুহৃদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপহার পেল পহেলা বৈশাখে জন্ম নেওয়া জেরিনের পরিবার
  • জবি ছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আটক তরুণ
  • সুইডেনে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৩
  • ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে উৎসবকে রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে: মোহাম্মদ আজম
  • দৃশ্যপটে ‘আনন্দ’, মঙ্গল কোথায়
  • যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের
  • চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও লিভারপুলের কোন খেলোয়াড়েরা পদক পাবেন না
  • বিশ্বের বড় বড় উৎসব কোথায় হয়
  • প্রাগে পুরস্কৃত ‘নট আ ফিকশন’,অনলাইনে মুক্তি ১ মে
  • ফসলের ক্ষেতে আশার আলো