পানি ব্যবস্থাপনায় দুর্ভোগে গ্রাহক, দুর্নীতি প্রতিরোধের পরামর্শ
Published: 22nd, January 2025 GMT
দেশে পানি ব্যবস্থাপনায় গ্রাহকদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে ওয়াসার সংযোগ পেতে হয়রানি, পানির মান নিয়ে অসন্তোষ, বিল নিয়ে জটিলতা এবং সেবার সময় নির্দিষ্ট না থাকায় গ্রাহকেরা অসন্তুষ্ট। এ পরিস্থিতিতে গ্রাহক সেবার প্রচারণা বৃদ্ধি ও সেবা সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
ঢাকার কাকরাইলে ডিপিএইচই ভবনে এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে এসব এ কথা বলেন বিশ্লেষকরা। নিরাপদ পানি প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পানি এবং স্যানিটেশন খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, অংশগ্রহণ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এনজিও ফোরামের নির্বাহী পরিচালক এস এম এ রশীদ বলেন, এরই মধ্যে ৩টি ওয়াসার (চট্টগ্রাম, খুলনা রাজশাহী) সঙ্গে কাজ শেষ হয়েছে। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাথে কাজ চলছে। আমাদের লক্ষ্য জনবান্ধব সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও অভিযোগ প্রতিকারের ব্যবস্থা করা।
সেমিনারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ঢাকা ওয়াসার মহাব্যবস্থাপক ফজলুর রহমান বলেন, এটা বাস্তবায়নে আমাদের সবার মানসিকতারও পরিবর্তন করতে হবে। অর্থ বরাদ্দ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি পানি সরবরাহে এখনও সেবাগ্রহীতা ও সেবা প্রদানকারীর মধ্যে যে দূরত্ব রয়েছে তা নিরসন করতে হবে।
জার্মানভিত্তিক সংস্থা ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক-উইনের প্রোগ্রাম লিড ড.
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে বুয়েটের অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ বলেন, এসডিজি ৬ বাস্তবায়নে এখনও তহবিল ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে যে তহবিল রয়েছে তার এক-চতুর্থাংশ অপচয় হচ্ছে দুর্নীতির কারণে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সাইফুল ইসলাম মজুমদার বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে যে মেকানিজম রয়েছে তা একই ফ্রেমওয়ার্কের অধীনে আনতে হবে।
সেমিনারে সামাজিক নিরীক্ষায় উঠে আসা বেশ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, ওয়াসার সংযোগ পেতে হয়রানি, পানির মান নিয়ে অসন্তোষ, ময়লা পানি-খাবারের অযোগ্য, খাবার পানিতে ব্লিচিং পাউডারের গন্ধ থাকে, বিল নিয়ে জটিলতা এবং সেবার সময় নির্দিষ্ট না থাকার মতো বিষয়গুলো গ্রাহকের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করছে। এসব সমাধানে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে। যেমন- পানির শাখায় ইন্টিগ্রিটির চর্চা বাড়ানো, গ্রাহক সেবার প্রচারণা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি, সেবা সহজলভ্য ও জনমুখী করা এবং সেবাগ্রহীতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ নিশ্চিত করা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র হক ব যবস থ গ র হক
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।