ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের কাজ থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্টে স্মার্ট রোবটের ফুড ডেলিভারি, ইন্টেলিজেন্ট রোবটিকসের ব্যবহার ক্রমে বাড়ছে। শুধু কফি পরিবেশনের মধ্যেই যার কাজ সীমাবদ্ধ নয়, অভিনব প্রযুক্তির এসব মেশিন ইতোমধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং, এমনকি গবেষণা ও উন্নয়নের (আরঅ্যান্ডডি) ক্ষেত্রেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত করেছে। প্রযুক্তি নির্মাতা প্রায় সবাই এমন উন্নয়নে নিজেদের নিয়োজিত করেছে।
গবেষণায় এআই রোবটিকস
হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের পারফরম্যান্স পরীক্ষার সঙ্গে প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্টের জন্য কাজ করছে ইন্টেলিজেন্ট রোবটিকস আর্মস। স্বাভাবিকভাবে এমন রোবট সব ধরনের কাজ সম্পাদনের জন্য ডিজাইন করা। যেসব কাজ মানুষের চেয়ে রোবট আরও নির্ভুল ও ধারাবাহিকভাবে করতে সক্ষম। আউটপুট বৃদ্ধির মাধ্যমে এগুলো দিনে ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহে সাত দিন অবিরাম কাজ করতে পারে।
ইন্টেলিজেন্ট ল্যাব
অভিনব উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় প্রতিটি স্মার্টফোন ক্যামেরার শত শত পরীক্ষা সম্পাদন করা হয়। চীনের ডংগুয়ানের ইন্টেলিজেন্ট ইমেজিং ল্যাবে, ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি পরীক্ষার জন্য বহুমাত্রিক দৃশ্যের রেপ্লিকা বিশেষ আলোচনায় আসে।
সাধারণ কিছু ইউজার সিনারিও রাখা হয়েছে। যেমন– একটি রেস্টুরেন্ট, একটি বার, একটি কারাওকে রুম এবং একটি শপিংমল। এসব পরীক্ষা করার জন্য নির্মাতা নিজেদের সব রোবটকে মুক্ত করে দেয়, যেন তারা ঘুরে ঘুরে নিজেদের মতো করে ছবি তুলতে পারে। উল্লিখিত কাজে একজন সুদক্ষ প্রকৌশলীকে এসব পরীক্ষা সম্পাদনা করতে সারাদিন যে সময় ব্যয় করতে হতো, সেখানে স্বয়ংক্রিয় রোবট মাত্র কয়েক ঘণ্টায় সমপরিমাণ কাজ সম্পূর্ণ করে।
হাইপারফরম্যান্স জিপিইউ সার্ভার ক্লাস্টারের জন্য এয়ার কুলিংয়ের বদলে ইমারশন কুলিং ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যা এনার্জি সক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি দৃশ্যমান করেছে। দুই দশক ধরে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবিরাম কাজ করে চলেছে প্রযুক্তি নির্মাতারা। স্মার্ট লাইফের জন্য উদ্ভাবনী পণ্য, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও গ্রাহকের ক্ষমতায়নে নিজেদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে প্রযুক্তিকেন্দ্রিক সবকটি ব্র্যান্ড।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।