Samakal:
2025-11-03@23:52:55 GMT

স্মার্ট উদ্ভাবনে এআই রোবটিকস

Published: 22nd, January 2025 GMT

স্মার্ট উদ্ভাবনে এআই রোবটিকস

ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের কাজ থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্টে স্মার্ট রোবটের ফুড ডেলিভারি, ইন্টেলিজেন্ট রোবটিকসের ব্যবহার ক্রমে বাড়ছে। শুধু কফি পরিবেশনের মধ্যেই যার কাজ সীমাবদ্ধ নয়, অভিনব প্রযুক্তির এসব মেশিন ইতোমধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং, এমনকি গবেষণা ও উন্নয়নের (আরঅ্যান্ডডি) ক্ষেত্রেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত করেছে। প্রযুক্তি নির্মাতা প্রায় সবাই এমন উন্নয়নে নিজেদের নিয়োজিত করেছে।

গবেষণায় এআই রোবটিকস

হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের পারফরম্যান্স পরীক্ষার সঙ্গে প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্টের জন্য কাজ করছে ইন্টেলিজেন্ট রোবটিকস আর্মস। স্বাভাবিকভাবে এমন রোবট সব ধরনের কাজ সম্পাদনের জন্য ডিজাইন করা। যেসব কাজ মানুষের চেয়ে রোবট আরও নির্ভুল ও ধারাবাহিকভাবে করতে সক্ষম। আউটপুট বৃদ্ধির মাধ্যমে এগুলো দিনে ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহে সাত দিন অবিরাম কাজ করতে পারে।

ইন্টেলিজেন্ট ল্যাব

অভিনব উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় প্রতিটি স্মার্টফোন ক্যামেরার শত শত পরীক্ষা সম্পাদন করা হয়। চীনের ডংগুয়ানের ইন্টেলিজেন্ট ইমেজিং ল্যাবে, ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফি পরীক্ষার জন্য বহুমাত্রিক দৃশ্যের রেপ্লিকা বিশেষ আলোচনায় আসে।

সাধারণ কিছু ইউজার সিনারিও রাখা হয়েছে। যেমন– একটি রেস্টুরেন্ট, একটি বার, একটি কারাওকে রুম এবং একটি শপিংমল। এসব পরীক্ষা করার জন্য নির্মাতা নিজেদের সব রোবটকে মুক্ত করে দেয়, যেন তারা ঘুরে ঘুরে নিজেদের মতো করে ছবি তুলতে পারে। উল্লিখিত কাজে একজন সুদক্ষ প্রকৌশলীকে এসব পরীক্ষা সম্পাদনা করতে সারাদিন যে সময় ব্যয় করতে হতো, সেখানে স্বয়ংক্রিয় রোবট মাত্র কয়েক ঘণ্টায় সমপরিমাণ কাজ সম্পূর্ণ করে।

হাইপারফরম্যান্স জিপিইউ সার্ভার ক্লাস্টারের জন্য এয়ার কুলিংয়ের বদলে ইমারশন কুলিং ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যা এনার্জি সক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি দৃশ্যমান করেছে। দুই দশক ধরে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবিরাম কাজ করে চলেছে প্রযুক্তি নির্মাতারা। স্মার্ট লাইফের জন্য উদ্ভাবনী পণ্য, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও গ্রাহকের ক্ষমতায়নে নিজেদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে প্রযুক্তিকেন্দ্রিক সবকটি ব্র্যান্ড।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এআই পর ক ষ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা

লরা উলভার্ট- দক্ষিণ আফ্রিকা নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। বয়স মাত্র ছাব্বিশ, কিন্তু মনের দৃঢ়তায় যেন পাহাড়। এবারের ২০২৫ নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন প্রোটিয়া আশার একমাত্র আলোকবর্তিকা। নিজের একক নৈপুণ্যে, এক অসম্ভব সাহসিকতায় দলকে টেনে তুলেছিলেন ফাইনালের মঞ্চে।

সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে ফেলেছিলেন ১৬৯ রানের অনবদ্য ইনিংস। যেন একক নাটকের একমাত্র নায়িকা তিনি। আর ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন হিমালয়ের মতো দৃঢ় হয়ে। একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন অনবদ্যভাবে। শতরান ছুঁয়ে যখন আকাশে ছুড়লেন ব্যাট, তখন মনে হচ্ছিল, স্বপ্নের ট্রফি যেন হাতের নাগালেই। কিন্তু ক্রিকেটের নির্মম বাস্তবতা! উলভার্ট যখন সাজঘরে ফিরলেন, ঠিক তখনই প্রোটিয়া শিবিরে নেমে এল নীরবতা। জয় হাতছাড়া হলো নিঃশ্বাস দূরত্বে।

আরো পড়ুন:

আরব আমিরাতকে ৪৯ রানে গুঁড়িয়ে ইতিহাস গড়ল যুক্তরাষ্ট্র

মিতালিকে ছাড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন মান্ধানা

চোখের কোণে জলের কণা তখনও ঝলমল করছিল। সেটা ঘামের ছিল, নাকি অপূর্ণতার অশ্রু, তা কেউ জানে না। কিন্তু বোঝা যাচ্ছিল, হৃদয়ের গভীরে আগুন জ্বলছে। একটা স্বপ্নের দগ্ধ ছাই হয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা।

তবুও এই ব্যর্থতার মাঝেই উলভার্টের জয় আছে। বিশ্বকাপে তিন ফাইনাল, টানা তিনবার! এবং প্রতিবারই দলের একমাত্র ভরসা ছিলেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে করেছেন ৯ ম্যাচে ৫৭১ রান, গড়ে ৭১.৩৭। যা নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসে এক আসরে সর্বোচ্চ। এর আগে অ্যালিসা হিলির ৫০৯ রান ছিল শীর্ষে।

শুরুটা ছিল নিস্তরঙ্গ- প্রথম ম্যাচে মাত্র ৫, পরেরটিতে ১৪। কিন্তু ধীরে ধীরে আগুন জ্বলে উঠল তার ব্যাটে। ভারতের বিপক্ষে ৭০, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৬০, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯০, আর সেমিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬৯। প্রতিটি ইনিংস যেন নিজের সীমাকে ছাপিয়ে যাওয়া একেকটি যাত্রা।

তবে উলভার্টের কীর্তি শুধু এই বিশ্বকাপেই নয়। ২০২৩ ও ২০২৪ দুই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। প্রতিবারই দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে। কিন্তু ভাগ্য যেন নিষ্ঠুরভাবে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তার দিক থেকে। তিনটি ফাইনাল, তিনটি পরাজয়।

তবু লরার গল্পটা হারের নয়- এ এক অনমনীয়তার গল্প, এক নিঃসঙ্গ অভিযাত্রার গল্প। যেমন শেরপা অক্সিজেনহীন উচ্চতায় পৌঁছে দেয় অন্যদের। কিন্তু নিজে ফিরে আসে নীরবে, তেমনি উলভার্টও দলের স্বপ্নগুলো কাঁধে তুলে বয়ে নিয়েছেন, একা।

ফাইনাল শেষে ভারতীয় খেলোয়াড়রাও যখন এগিয়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন, তখন বোঝা গেল; এই হার, এই অশ্রু, এই নীরবতা- সবই সম্মানের প্রতীক।

রবিবার ফাইনাল শেষে লরা বলেছেন অনেক কথা। সেখানে হাতাশার কিছু পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেছে প্রেরণা ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহস।

“আমি মনে করি, ২০২৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (নিউল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত) পর থেকেই আমাদের জন্য অনেক পরিবর্তনের সূচনা হয়েছিল। সেই সময় থেকেই ঘরোয়া পর্যায়ে কেন্দ্রীয় চুক্তির ব্যবস্থা চালু হয়। আমাদের দলের গভীরতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এটা ছিল এক বিশাল পদক্ষেপ।”

“এরপরের (২০২৪ সালের) বিশ্বকাপটা আমাদের দলের নামটা বিশ্ব ক্রিকেটে আরও বড় করে তুলেছে, আমার তাই মনে হয়। এখন আমরা এমন একটি দল, যারা নিয়মিত ফাইনালে পৌঁছাচ্ছে। যেখানে আগে এটা একবারের সাফল্য বলেই ধরা হতো।”

“টানা তিনবার ফাইনালে উঠতে পারাটা সত্যিই গর্বের বিষয়। এটা প্রমাণ করে আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটে এবং দলীয় কাঠামোয় সঠিক দিকেই এগোচ্ছি। ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের এই ফলেই আমরা এখানে পৌঁছেছি। আশা করি, আমরা এমন আরও ফাইনাল খেলতে থাকব… আর একদিন, হ্যাঁ, একদিন আমরা অবশ্যই একটা জিতব।”

টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্স নিয়ে উলভার্ট বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের এই আসরটা অসাধারণ কেটেছে। ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছানোই একটা বড় সাফল্য। আমরা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ ক্রিকেট খেলেছি। এই বিষয়টা নিয়েই আমি সবচেয়ে বেশি গর্বিত।”

“একপর্যায়ে আমরা টানা পাঁচটা ম্যাচ জিতেছিলাম। যা আমাদের দলের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। দুই দলের মধ্যকার সিরিজগুলোতে আমরা সবসময় এই ধারাবাহিকতা পাই না। তাই বড় মঞ্চে, বড় টুর্নামেন্টে এমন পারফরম্যান্স দিতে পারাটা সত্যিই গর্বের। আমরা প্রমাণ করেছি, বড় আসরে দক্ষিণ আফ্রিকাও এখন বড় দল।” 

সত্যিই তাই। লরার নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন বড় দল। হয়তো একদিন, কোনো এক প্রভাতে, লরা উলভার্ট সেই অধরা ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখবেন। কিন্তু আজকের দিনে, তিনি রয়েছেন বিশ্বকাপের হিমালয়ের চূড়ায়, এক নিঃসঙ্গ শেরপা হয়ে। যিনি নিজের কীর্তিতে চূড়ায় উঠেছেন।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • অ্যালবামের গল্প বলবে ‘পেনোয়া’