হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে কৃষি শ্রমিককে হত্যা
Published: 23rd, January 2025 GMT
নওগাঁর আত্রাইয়ে ধান রোপণ নিয়ে বিরোধের জেরে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয় কৃষি শ্রমিক আবু বক্কর সিদ্দিককে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
নিহত আবু বক্কর সিদ্দিক উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়নের মালিপুকুর গ্রামের মোবারক আলীর ছেলে। তিনি কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এ ঘটনায় তাঁর মা জমিলা বিবি বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতেই থানায় মামলা করেছেন।
মামলা থেকে জানা গেছে, আবু বক্কর সিদ্দিক কৃষি শ্রমিক হিসেবে মাঠে ধান রোপণের কাজ করতেন। একই গ্রামের সিরাজুল ইসলামও তাঁর সঙ্গে কাজ করতেন। গত সোমবার মাঠে ধান রোপণের সময় সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আবু বক্কর সিদ্দিক ঠিকমতো কাজ করছেন না। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তারা যে যার মতো বাড়ি চলে যান। সন্ধ্যায় আবু বক্কর চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। এ সময় সিরাজুল এবং তাঁর শ্যালক ফরিদ উদ্দীন এসে আবার তাঁর সঙ্গে বিবাদে জড়ান। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আবু বক্কর সিদ্দিককে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটান। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে আত্রাই হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে মারা যান সিদ্দিক।
আবু বক্করের স্ত্রী বিউটি বিবি বলেন, ‘আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যাকারীর বিচার চাইছি।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাবুদ্দীন বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।