মাদারীপুরে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ থাকলেও সেবা পাচ্ছে না মুমূর্ষু রোগীরা। সরকার লোকবল না দেওয়ার কারণে এই আইসিইউ ইউনিট চালু করা সম্ভব হচ্ছেনা, জানিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন।
অনেক মুমূর্ষু রোগী ঢাকা, বরিশাল বা ফরিদপুর নেওয়ার পথেই প্রাণ হারায়। আইসিইউ ইউনিট চালু থাকলে স্বজনরা এসব রোগীদের বাঁচাতে শেষ চেষ্টা করতে পারতেন। সরকার এই ইউনিটে লোকবল না দেওয়ায় মুমূর্ষুরা যেমন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ মাদারীপুরবাসীর।
মাদারীপুর (প্রাঃ) অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান রিপন বলেন, “মাদারীপুর থেকে প্রায়ই মূমুর্ষ রোগী নিয়ে ঢাকা, বরিশাল বা ফরিদপুর নিয়ে যায় আমাদের অ্যাম্বুলেন্সগুলো। এরমধ্যে বেশীরভাগ রোগীর এতটা খারাপ থাকে যে তাদের নিয়ে গন্তব্যে পৌছার আগেই মারা যায়। যদি মাদারীপুর ২৫০ বেডের হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ ইউনিটটি লোকবল দিলে চালু করতো তাহলে হয়তো অনেক জীবন বেঁচে যেতো।”
স্থানীয় শাহজাহান মোল্লা, বাতেন মোল্লা, মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন জানালেন, সরকারি হাসপাতালে এমনিতেই চিকিৎসা পেতে কষ্ট হয়। তারপর যদি লোকবল কম থাকে তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে। এছাড়া কোন রোগীর অবস্থা একটু খারাপ হলেই তাকে ঢাকা, বরিশাল বা ফরিদপুরে রেফার করে দেয়। অনেক রোগী রেফার করা হাসপাতালে যাওয়ার আগেই অ্যাম্বুলেন্সে মারা যায়। মাদারীপুর জেলাসহ আসেপাশের জেলাগুলোতেও আইসিইউ নেই। তার মাদারীপুর আইসিইউ চালু হলে এ অঞ্চলের রোগীদের জন্য অনেক ভাল হবে।
মাদারীপুর ২৫০ বেড হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ ইউনিট থাকলেও এখন পর্যন্ত চালু না হওয়ায় জেলার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দায়ি করলেন মাদারীপুরে কর্মরত চিকিৎসক ডা.
তিনি বলেন, “মাদারীপুরে আইসিইউ ব্যবস্থা না থাকার কারণে গুরুতর রোগীদের আমরা চিকিৎসা দিতে সাহস পাই না। কারণ এসকল রোগীদের ক্ষেত্রে যে কোনো সময় আইসিইউ’র প্রয়োজন হতে পারে। তার রোগীর অবস্থা গুরুতর হলেই আমরা ঢাকা, বরিশাল, ফরিদপুর রেফার করি। এতে রোগীরা কষ্ট পায় এমনকি অনেক সময় পথেই মারা যায়। এছাড়াও রোগীর পরিবারের কষ্টের মাত্রা বেড়ে যাওয়াসহ আর্থিকভাবেও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দ্রুত লোকবল দিয়ে মাদারীপুর ১০ বেডের আইসিইউ ইউনিটটি চালু করার জন্য সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি জানান তিনি।
ঢাকা/বেলাল/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা