চলমান বিপিএলে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বকেয়া ইস্যু নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে দুর্বার রাজশাহী। চট্টগ্রাম পর্বে দলটির খেলোয়াড়রা অনুশীলন বয়কট করেছিলেন। তবে এই বিতর্কের মাঝেই গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহী উড়তে থাকা রংপুর রাইডার্সকে ২৪ রানে পরাজিত করেছে।  

রংপুরের বিপক্ষে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে পারিশ্রমিক ইস্যুতে কথা বলেছেন রাজশাহীর তারকা ক্রিকেটার রায়ান বার্ল। তিনি বলেন, ‘মাঠে নামলে প্রতিটি খেলোয়াড়ই জয়ের জন্য খেলতে চায়। এটি আমাদের জন্য ডু অর ডাই ম্যাচ ছিল। জিততেই হতো। আমাদের মনোযোগ ম্যাচেই ছিল। এখনও দুটি ম্যাচ বাকি আছে। আমরা এখানেই আছি এবং এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই। পারিশ্রমিক বা পেমেন্টের বিষয়টা আমি দেখি না। এসব দেখার জন্য আমাদের এজেন্ট রয়েছে। আমি এখানে ক্রিকেট খেলতেই এসেছি।’

রংপুরের বিপক্ষে এক অসাধারণ ক্যাচ নিয়েছিলেন রায়ান বার্ল। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্যাচটি ধরতে গিয়ে প্রথমবার মিস করেছিলাম। আসলে বলটি আমার চোট পাওয়া জায়গার খুব কাছে চলে এসেছিল। তবে দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়ে ক্যাচটি ধরতে পেরে আমি ভাগ্যবান মনে করছি। চোট না থাকলে হয়তো প্রথমবারেই ক্যাচটি নিতে পারতাম। এটাই ক্রিকেট, কখনও সফল হন, কখনও ব্যর্থ। তবে শেষমেশ ক্যাচটি নিতে পেরে আমি দারুণ খুশি।’

এদিকে, রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর পেশাদারিত্ব ও ফ্যানবেজ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘রংপুর বা বরিশালের ফ্যানবেজ অনেক শক্তিশালী। সিলেট এবং চট্টগ্রামেও প্রচুর দর্শক রয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো যদি আরও পেশাদারভাবে পরিচালিত হয়, তবে মাঠে দর্শকের উপস্থিতি আরও বাড়বে। পেশাদারিত্বই মূল বিষয়।’

সোহান আরও বলেন, ‘বিপিএলে পেশাদারিত্ব রয়েছে, তবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আরও কিছু জায়গায় উন্নতির সুযোগ রয়েছে। রংপুর, বরিশাল কিংবা চিটাগংয়ের মতো দলগুলোকে পেশাদার মানসিকতায় পরিচালনা করা হলে দর্শকদের আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পাবে। সেভাবেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে পরিচালিত করা উচিত।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

বক্সিং রিংয়ে চ্যাম্পিয়ন জিনাতই, বোনকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে আফঈদা

কদিন ধরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের আড্ডায় ঘুরেফিরে একটাই নাম জিনাত ফেরদৌস। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এই বক্সার প্রথমবারের মতো পা রেখেছেন জাতীয় বক্সিং রিংয়ে। আর প্রথমবারই নিজের জাত চেনালেন।

আজ বিকেলে পল্টনের মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে ৫২ কেজি ওজন শ্রেণির ফাইনালে নেমে প্রতিপক্ষ আফরা খন্দকারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় তুলেছেন জিনাত। প্রতিযোগিতার আগেই যাঁর আগমন ঘিরে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে, সেই জিনাত রিংয়ে নামতেই যেন বুঝিয়ে দিলেন, অন্যদের চেয়ে কেন তিনি এগিয়ে।

তিন রাউন্ডের লড়াইয়ে শুরু থেকেই জিনাত ছিলেন আক্রমণাত্মক। পাঞ্চে ছিল গতি, রক্ষণে ছিল আত্মবিশ্বাস। অন্যদিকে আফরা খন্দকার চেষ্টা করেছেন রক্ষণ সামলে লড়াইয়ে টিকে থাকতে। খান কয়েক মোক্ষম ঘুষিতে কিছুটা নড়বড়ে হলেও শেষ পর্যন্ত দমে যাননি আফরা।

বরং জিনাতের ঘন ঘন আক্রমণের ফাঁক গলে এক-আধটু পাল্টা আঘাত করতেও পেরেছেন। তবে এই পর্যায়ের এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হয়ে পড়ে তাঁর জন্য অনেকটাই চাপের। তবু আফরা লড়ে গেছেন। আর জিনাতের আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি এ লড়াইকে করে তুলেছিল দেখার মতো।

গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছিলেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক ও আফরার বড় বোন আফঈদা খন্দকার। উৎসাহ দিচ্ছিলেন ছোট বোনকে। পাশে ছিলেন মা–বাবাও। তবে পরিবারের ষোলো আনা সমর্থনও জিনাতকে হারানোর জন্য যথেষ্ঠ হয়নি।

ম্যাচ শেষে আফরা বললেন, ‘তিনি একজন ভালো খেলোয়াড়। তাঁর বিপক্ষে খেলা আমার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে তাঁর আক্রমণাত্মক স্কিলটা দুর্দান্ত। ম্যাচ শেষে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, গুড ফাইট।’

বিজয়ী জিনাত পরে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি সবাইকে বলতে চাই, বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েরা খেলতে চায়। তারা যদি সুযোগ-সুবিধা পায়, অনেক ভালো করবে। ওদের স্কিল আছে।’

সেমিফাইনালে আছিয়া না ফাইনালে আফরা—কোন লড়াইটা বেশি কঠিন ছিল? জিনাতের জবাব, ‘আমি আমার খেলাটা খেলেছি এবং জিতেছি। দুজনই আলাদা ধাঁচের প্রতিপক্ষ।’

জিনাত বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পদক জয়ের আকাঙ্ক্ষার কথা আজও বলেছেন। আগামী এশিয়ান গেমসে সুযোগ পেলে পদক জিতবেন কি না, প্রশ্নের ছোট্ট উত্তর, ‘ইনশা আল্লাহ।’

আফরা-জিনাত ফাইনাল ম্যাচটা যেন ছিল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বক্সারের লড়াই নয়, এর বাইরেও চলছিল আরেক নাটক। ফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগেই বক্সিং রিংয়ে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য। আনসারের বক্সার জাহিদুল হক রেফারির রায় নিয়ে ক্ষোভ জানাতে রিংয়ে বসে পড়েন প্রতিবাদ হিসেবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বক্সার জনি ভদ্রর ঘুষিতে কপালে চোট পান জাহিদুল। চিকিৎসাও নেন। একপর্যায়ে রিংয়ের মাঝখানে বসেই অভিনব প্রতিবাদ জানান।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ আনসার দল বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশনের সভাপতির কাছে অভিযোগ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিযোগিতা থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আনসারের প্রতিনিধিরা রিং ছেড়ে চলে যান। মুহূর্তেই ঘনীভূত হয়ে ওঠে অনিশ্চয়তা, আফরা-জিনাত ফাইনালটি আদৌ হবে তো? কারণ, আফরা বাংলাদেশ আনসারের প্রতিযোগী। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আনসার ফিরে আসে এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

এ বিষয়ে বক্সিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফাইটে হারলে যা হয়। হারলেই বলে অন্যায় হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রিংয়ে ফিরে এসেছে, খেলেছে, এটা ভালো।’

ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল গ্যালারিতে এসে জিনাতকে শুভেচ্ছা জানায়, তাঁকে উপহারও দেয় তারা। গ্যালারিতে বাড়তি উত্তেজনা আর গুরুত্ব যোগ করে ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে। আর দেশের সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক উপস্থিতি তো ছিলই ম্যাচটা ঘিরে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর্মীদের মতের মূল্য নাই, জিএম কা‌দের দল চালান স্ত্রীর কথায় 
  • ব্রেন হ্যাক: স্বাভাবিক হওয়ার পাঁচ উপায় জেনে নিন
  • বক্সিং রিংয়ে চ্যাম্পিয়ন জিনাতই, বোনকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে আফঈদা
  • অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
  • দেশে প্রথমবারের মতো ২৫টি ‘বেশি বিপদজনক’ বালাইনাশক চিহ্নিত
  • হামাসকে অস্ত্রত্যাগে ও গাজার শাসন ছাড়তে সৌদি, কাতার, মিসরের আহ্বান