আজ ২৪ জানুয়ারি ছিল শিশু সাদিবের (৮) জন্মদিন। এ উপলক্ষে তার বাড়িতে ছিল নানা আয়োজন। তবে, সাদিবের জন্মদিন আর পালন করা হল না পরিবারের সদস্যদের। সড়ক পার হওয়ার সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশার ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছে সে।

এ ঘটনায় অটোরিকশাটি উল্টে আহত হয়েছেন সেটির যাত্রী সাংবাদিক আশিক ইকবাল রাসেলসহ ছয়জন। 

শুক্রবার (২৪জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার সাঁথিয়া-পুন্ডুরিয়া আঞ্চলিক সড়কের আফড়া শামুকজানি বাজারের পাশে দুর্ঘটনাটি ঘটে। 

আরো পড়ুন:

বরিশালে অটোরিকশার চাপায় শিশু নিহত, সড়ক অবরোধ

নড়াইলের সড়কে ঝরল পশু চিকিৎসকের প্রাণ

মারা যাওয়া সাদিব উপজেলার করমজা ইউনিয়নের আফড়া নদীশুকা গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে। গুরুতর আহত সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সাঁথিয়ার লক্ষীপুর গ্রামের জয়েন খাঁ মোল্লার ছেলে মাহতাব উদ্দিনকে (৫০) পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান জানান, দুপুরের দিকে সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি সাঁথিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে রওনা হয়। উপজেলার সাঁথিয়া-পন্ডুরিয়া সড়কের আফড়া শামুকজানি বাজারের কাছে পৌঁছালে শিশু সাদিব অটোরিকশার সামনে দিয়ে দৌঁড়ে সড়ক পার হওয়ার চেষ্টা করে। এসময় অটোরিকশাটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাদিবকে ধাক্কা দেয়। পরে অটোরিকশাটি সড়কের পাশের গাছে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়।

 এ ঘটনায় সাদিব, অটোরিকশার চালক মাহতাব ও দৈনিক ভোরের দর্পণ পত্রিকার প্রতিনিধি আশিক ইকবাল রাসেলসহ ছয়জন আহত হন। স্থানীয় লোকজন পরে সাদিবকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে রওনা হন। পথেই সাদিবের মৃত্যু হয়। আহত অন্যদের সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিহত শিশু সাদিবের বাবা ফারুক হোসেন বলেন, “আজ সাদিবের জন্মদিন ছিল। ছেলের জন্মদিন পালন করার জন্য বাড়িতে আয়োজনও করা হয়েছিল। ছেলের জন্মদিন আর পালন করা হল না। এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু নেই।”

ওসি সাইদুর রহমান বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন আহত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ