জন্মদিন পালন করা হলো না শিশু সাদিবের
Published: 24th, January 2025 GMT
আজ ২৪ জানুয়ারি ছিল শিশু সাদিবের (৮) জন্মদিন। এ উপলক্ষে তার বাড়িতে ছিল নানা আয়োজন। তবে, সাদিবের জন্মদিন আর পালন করা হল না পরিবারের সদস্যদের। সড়ক পার হওয়ার সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশার ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছে সে।
এ ঘটনায় অটোরিকশাটি উল্টে আহত হয়েছেন সেটির যাত্রী সাংবাদিক আশিক ইকবাল রাসেলসহ ছয়জন।
শুক্রবার (২৪জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার সাঁথিয়া-পুন্ডুরিয়া আঞ্চলিক সড়কের আফড়া শামুকজানি বাজারের পাশে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
বরিশালে অটোরিকশার চাপায় শিশু নিহত, সড়ক অবরোধ
নড়াইলের সড়কে ঝরল পশু চিকিৎসকের প্রাণ
মারা যাওয়া সাদিব উপজেলার করমজা ইউনিয়নের আফড়া নদীশুকা গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে। গুরুতর আহত সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সাঁথিয়ার লক্ষীপুর গ্রামের জয়েন খাঁ মোল্লার ছেলে মাহতাব উদ্দিনকে (৫০) পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান জানান, দুপুরের দিকে সিএনজি চালিত অটোরিকশাটি সাঁথিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে রওনা হয়। উপজেলার সাঁথিয়া-পন্ডুরিয়া সড়কের আফড়া শামুকজানি বাজারের কাছে পৌঁছালে শিশু সাদিব অটোরিকশার সামনে দিয়ে দৌঁড়ে সড়ক পার হওয়ার চেষ্টা করে। এসময় অটোরিকশাটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাদিবকে ধাক্কা দেয়। পরে অটোরিকশাটি সড়কের পাশের গাছে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়।
এ ঘটনায় সাদিব, অটোরিকশার চালক মাহতাব ও দৈনিক ভোরের দর্পণ পত্রিকার প্রতিনিধি আশিক ইকবাল রাসেলসহ ছয়জন আহত হন। স্থানীয় লোকজন পরে সাদিবকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে রওনা হন। পথেই সাদিবের মৃত্যু হয়। আহত অন্যদের সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহত শিশু সাদিবের বাবা ফারুক হোসেন বলেন, “আজ সাদিবের জন্মদিন ছিল। ছেলের জন্মদিন পালন করার জন্য বাড়িতে আয়োজনও করা হয়েছিল। ছেলের জন্মদিন আর পালন করা হল না। এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু নেই।”
ওসি সাইদুর রহমান বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন আহত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গোদাগাড়ীতে সন্ত্রাসী হামলায় নারীসহ ৬ জন আহত
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে একটি পরিবার। এতে ছয়জন আহত হয়েছেন। এছাড়া তাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। ধানের পালায় অগ্নিসংযোগ এবং খেতের পেয়ারা বাগান কেটে দেয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের পানিপার গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার (১১ জুন) প্রথমে পেয়ারা বাগানের ৪১টি গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর দিন হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আহত ছয়জন এখন গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তিরা হলেন, চর আষাড়িয়াদহ পানিপার গ্রামের আল্লাম হোসেন, তার ছেলে গোলাম মোস্তফা বাবু, মেয়ে ফাতেমা বেগম, নাতি জিহাদ (১৪), ইয়াকুব আলী এবং তাদের প্রতিবেশী বকুল ওরফে কান্দু। তাদের মধ্যে আল্লামের পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। ফাতেমার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়। এছাড়া তাকে শ্লীলতাহানিও করা হয়।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় আসামির ছুরিকাঘাতে ২ পুলিশ আহত
আড়াইহাজারে জামায়াতের পথসভায় বিএনপির হামলা, আহত ৫
আহতরা জানান, দিয়াড় মহব্বতপুর গ্রামের জামিলুর রহমানের কাছ থেকে আল্লাম হোসেনের স্ত্রী ও ছেলে গোলাম মোস্তফা ২০১৬ সালের ১৮ মে শন্য দশমিক ৪৯৫০ একর ও তার আরেক ছেলে মুরশালীন ইসলাম ২০১৮ সালের ৯ মে শূন্য দশমিক ১১০০ একর জমি কেনেন। এর দলিলও করা হয়। জামিলুর রহমান আরএস রেকর্ডমূলে জমি বিক্রি করেন। পরে বিডিএস রেকর্ডে দলিলের কথা গোপন করে এসব জমি আবার নিজেদের নামে রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে তারা জমিগুলো আবার দখলের চেষ্টা করছিলেন।
তারা আরো জানান, জমি কেনার পর প্রায় পাঁচ বছর আগে সেখানে পেয়ারা বাগান করা হয়। গত ১১ জুন সকালে জামিলুর রহমান ও তার ভাই আদিল হোসেনের নেতৃত্বে তাদের ছেলেরা গিয়ে পেয়ারা বাগানের ৪১টি গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনায় আল্লাম হোসেন গ্রামের লোকজনের কাছে নালিশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন জামিলুর রহমান, তার ভাই আদিল হোসেন এবং তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী ধারালো হাঁসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, বল্লম ও বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আল্লাম হোসেনের বাড়িতে হামলা চালান। বাড়িটিতে ভাঙচুর করা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় ধানের পালায়। দুই দিনের হামলায় প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
আহত আল্লাম হোসেন জানান, হামলাকারীরা তার পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। ধানের পালার আগুন নেভাতে গেলে হামলাকারীরা তার নাতি জিহাদকে ধাক্কা দিয়ে আগুনের ভেতর ফেলে দেয়। এতে তার পা পুড়ে যায়। তার আরেক নাতি ইয়াকুবকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। তাদের বাঁচাতে গেলে মেয়ে ফাতেমার গলায় হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করা হয়। তাকে শ্লীলতাহানিও করা হয়। ছেলে গোলাম মোস্তফা বাবুকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তাকে বাঁচাতে গেলে প্রতিবেশী বকুলকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।
ভুক্তভোগী আল্লাম আরো জানান, হামলাকারীরা তাদের আহত অবস্থায় ফেলে গেলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হামলাকারীরা এখনো তাদের বাড়ি ঘিরে রেখেছেন। জমির দাবি করলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। হাসপাতাল থেকে তাদের ছুটি দেয়া হলে এ ঘটনায় তারা মামলা করবেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত জামিলুর রহমানকে কয়েকদফা ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, ঘটনা তিনি শুনেছেন। আহতরা থানায় অভিযোগ করতে চেয়েছেন। অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল