বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য মোট ১৬ জন পেলেন বিশেষ স্বীকৃতি। এর মধ্যে ১৩ ব্যক্তি এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যপ্রাণী উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য সংগঠনটির ৩ জনকে দেওয়া হয়েছে স্মারক পদক ও সনদপত্র।

শুক্রবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর ন্যাশনাল বোটানিকাল গার্ডেনের অডিটরিয়ামে ব্যতিক্রমধর্মী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেভ ওয়াইল্ড অ্যান্ড ন্যাচার  (সোয়ান)।’

সংগঠনটির সভাপতি ও চিত্রনায়ক আদনান আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বনরক্ষক (বন্যপ্রাণী) ইমরান উদ্দিন আহমেদ।

আরো পড়ুন:

বাঁচার জন্য প্রয়োজন নির্মল বায়ু, পানি ও মাটি: পরিবেশ উপদেষ্টা

বছিলা নদীপাড়ে ওয়াকওয়ে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাখাওয়াত হোসেন, প্রাণী সংরক্ষক এবং লেখক সরওয়ার পাঠান, প্রাণী সংরক্ষক, গবেষক এবং লেখক আশিকুর রহমান সমী, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের পরিচালক শওকত ইমরান আরাফাত, চলচিত্র পরিচালক মেহেদি হাসিব।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সোয়ানের উপদেষ্টা ও রাইজিংবিডি ডটকমের বিশেষ প্রতিনিধি কিসমত খোন্দকার, চলচিত্র অভিনেত্রী আইরিন সুলতানা প্রমুখ।

বিপুলসংখ্যক বন্যপ্রাণী সম্পর্কে আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রী, ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা পাখি খোঁজার প্রতিযোগিতায় নামেন। এ সময় তারা পাখি গণনা করেন এবং নাম শনাক্ত করেন।

কয়েকটি গ্রুপে সোয়ান আয়োজিত প্রতিযোগিতায় যারা পুরস্কৃত হয়েছেন তারা হলেন-
১.

তানিয়া খান মেমোরিয়াল ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন মাহমুদুল বারী।
২.ড.আনিসুজ্জামান মেমোরিয়াল ওয়াইল্ডলাইফ এন্থাথিয়াস্টস অব দি ইয়ার আশিকুর রহমান শমি।
৩. বেস্ট ওয়াইল্ডলাইফ অরগানাইজেশন অব দি ইয়ার সেভ টি ন্যাচার অব বাংলাদেশ।
৪.বেস্ট ওয়াইল্ডলাইফ জার্নালিস্ট অব দি ইয়ার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন।
৫.মাদার অব অ্যানিমাল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড নাইলা নাইম।
৬.বেস্ট ওয়াইল্ডলাইফ ইনফ্লুয়েশিয়ার অব দি ইয়ার ডগগো সেজ।
৭.বেস্ট ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেটর (সরকারি চাকরিজীবী) হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন ঢাকা ফরেস্ট ডিভিশনের ইন্সপেক্টর নিগার সুলতানা।
৮.বেস্ট আরবান বার্ড স্যানচ্যুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে মিরপুর ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন।
৯. অ্যাম্বেসেডর অব ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি সোফিয়া জামান এবং বেস্ট অথার অন ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাওয়ার্ড ফরিদি নুমান।

এছাড়া চ্যাম্পিয়ান টিম হিসেবে সোয়ানের তিনটি টিমকে তাদের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়েছে। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আদনান আজাদ তিনটি এক্সেলেন্সি পুরস্কার দিয়েছেন। তারা হচ্ছেন বেস্ট ওয়াইল্ড রেসকিউয়ার কামরুন নাহার কণা, রাজশাহীর সোয়ান টিম এবং এনিমাল সারভাইবর অ্যাওয়াড পেয়েছেন সেন্টমার্টিন দ্বীপের সোয়ান টিম।

বর্তমান সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর সেন্টমার্টিনে বেশ কিছুদিন পর্যটকদের যাতায়াত সীমিত করে। এ অবস্থায় দ্বীপে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক কুকুর খাদ্যাভাবে মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। সে সময় সোহানের টিম বিষয়টি সামনে তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে কুকুরদের খাদ্য যোগান দিতে সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং তারা কুকুরদের মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচায়। সময়োপযোগী এই পদক্ষেপের অবদান হিসেবে সোহানের সেন্টমার্টিন দ্বীপের টিমকে সম্মানিত  করা হয় বলে অনুষ্ঠানে সভাপতি আদনান আজাদ জানান।

মাদার অব অ্যানিমাল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড নাইলা নাইম সম্পর্কে জানা যায়, তিনি পেশায় একজন দন্ত চিকিৎসক। এছাড়া তিনি একজন মডেল ও অভিনেত্রী। ২০ বছর ধরে তিনি নিভৃতে আশ্রয়হীন পথ কুকুরদের মাঝে খাবার বিতরণ করে আসছেন। প্রতিদিন তিনি ৩ হাজারের বেশি কুকুরকে খাওয়াচ্ছেন। ২০২০ সালে ঝুঁকি নিয়ে তিনি প্রতিদিন কুকরদের মাঝে খাবার বিতরণ করে আলোচনায় আসেন। এই স্বীকৃতি হিসেবে তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে বলে আদনান জানান।

ফরিদি নুমান একাধারে চিত্রশিল্পী, ওাইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার এবং লেখক। সুন্দরবনে বাঘের মুখোমুখি হয়ে তিনি তার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন একটি বইয়ে। এছাড়া সুন্দরবনের পাখি নিয়ে তার আরো একটি বই রয়েছে, যা নবীন ফটোগ্রাফারদের প্রেরণা দেবে বলেও জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা সোয়ানের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “দিন দিন আমাদের অনেক বন্যপ্রাণী হারিয়ে গেছে। অনেক পাখি বিপণ্ন এবং অসচেতনতার অভাবে যে হারে পাখি শিকার করা হচ্ছে তাতে অতি দ্রুত আমাদের পরিবেশ বিপণ্ন হয়ে পড়বে।”

এ বিষয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তারা সোহানসহ অন্যান্য সামজিক সংগঠনকে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তারা বন বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ ক ত হয়

এছাড়াও পড়ুন:

সেলফি’র ধাক্কায় গণস্বাস্থ্যের কর্মীর মৃত্যু, ৬ বাস আটক

সাভারে সেলফি পরিবহনের একটি চলন্ত বাসের ধাক্কায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের একজন সাবেক নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক বাস ও বাসের চালককে আটক করে স্থানীয়রা। পরে সেলফি পরিবহনের আরও পাঁচটি বাস আটক করে গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারীরা। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টা ২০ এর দিকে সাভারের আশুলিয়া এলাকার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছে ঢাকা মুখী লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত ব্যক্তি হলেন, চাঁদপুর জেলার মতলব থানার লোকমান মোল্লার ছেলে শামসুল মোল্লা (৭০)। তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের শ্রীপুর(গাজীপুর) উপকেন্দ্রের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 

আটককৃত বাসের চালক হলেন, ঢাকার ধামরাই উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের আব্দুল মবেদের ছেলে আব্দুল করিম (৪৫)। 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অল্প কিছুদিন আগেই তিনি চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন। তার পাওনাদি নেওয়ার জন্যেই তিনি আজ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসেছিলেন।

সাভার হাইওয়ে থানার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) বিষ্ণু পদশর্মা বলেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে আমরা এসেছি। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।”

ঢাকা/সাব্বির/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনের মধুসহ ২৪ পণ্য পেল জিআই সনদ
  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • সেলফি’র ধাক্কায় গণস্বাস্থ্যের কর্মীর মৃত্যু, ৬ বাস আটক
  • সুন্দরবনে হরিণ শিকারে যাওয়া ব্যক্তির লাশ উদ্ধার, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
  • ‘তোর সময় শেষ’ লেখা চিঠির সঙ্গে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে সাংবাদিককে হুমকি
  • কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
  • সৌন্দর্যের সন্ধানে সুন্দরবনের গহীনে : দ্বিতীয় পর্ব
  • সুন্দরবনে অস্ত্রসহ বনদস্যু আটক
  • উপকূল রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ধস, প্লাবনের আশঙ্কা সুন্দরবন তীরবর্তী জনপদে