ব্রাজিলকে হাফ ডজন গোলে বিধ্বস্ত করলো আর্জেন্টিনা
Published: 25th, January 2025 GMT
ব্রাজিলের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার দাপট যেন কোনো পর্যায়েই থামছে না। সিনিয়র দলের শেষ সাক্ষাতে জয় পাওয়া আর্জেন্টিনা এবার অনূর্ধ্ব-২০ দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রাজিলকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে। ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসে এটিই আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের পরাজয়।
আর্জেন্টিনার এই বিশাল জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন ক্লদিও এচেভরি। ‘নতুন মেসি’ খ্যাত এই খেলোয়াড় চলতি মাসেই ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। ম্যাচে দুটি গোল করেছেন এচেভরি। তার পারফরম্যান্সেই আর্জেন্টিনা পেয়েছে ঐতিহাসিক জয়।
৭১ বছরের ইতিহাসে দক্ষিণ আমেরিকান অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে এর আগে কখনো তিন গোলের বেশি ব্যবধানে হারেনি ব্রাজিল। তবে এবার সেই রেকর্ডও ভেঙে দিল আর্জেন্টিনা। এর আগে এই টুর্নামেন্টে ৬-০ গোলের বড় জয় দেখা গিয়েছিল ২০১৩ সালে, যখন বলিভিয়াকে হারিয়েছিল কলম্বিয়া।
ভেনেজুয়েলার ভ্যালেন্সিয়ায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে শুরু থেকেই আধিপত্য দেখিয়েছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৬ মিনিটে ইয়ান সুবিয়াব্রে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। এর দুই মিনিট পরই ক্লদিও এচেভরি স্কোরলাইন ২-০ করেন। এরপর ব্রাজিলের দুর্ভাগ্য আরও বাড়ে। ম্যাচের ১১ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ইগর সেররো নিজের জালে বল জড়িয়ে দিলে আর্জেন্টিনা ৩-০ গোলে এগিয়ে যায়। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হলেও, দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনার গোল উৎসব অব্যাহত থাকে।
৫২ মিনিটে আগুস্তিন রুবের্তো চতুর্থ গোলটি করেন। দুই মিনিট পর আবারও এচেভরি গোল করেন। ৭৮ মিনিটে সান্তিয়াগো হিদালগো আর্জেন্টিনার হয়ে ষষ্ঠ গোলটি করে দলের বড় জয় নিশ্চিত করেন।
ম্যাচ শেষে এচেভরি বলেন, ‘আমরা দুর্দান্ত খেলেছি। এই ম্যাচের জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলতে নামলে আমাদের অনুপ্রেরণা সবসময় বেশি থাকে। তবে আমরা এখানেই থেমে থাকব না, আমাদের আরও উন্নতির দরকার।’
দক্ষিণ আমেরিকান অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষ চার দল আগামী সেপ্টেম্বরে চিলিতে অনুষ্ঠিতব্য অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে জায়গা পাবে। ১০ দলের এই টুর্নামেন্টে দুই গ্রুপের শীর্ষ তিনটি দল চূড়ান্ত পর্বে যাবে। সেখানে ছয় দলের রাউন্ড-রবিন লড়াই থেকে নির্ধারিত হবে চারটি বিশ্বকাপের টিকিট।
ব্রাজিল এই প্রতিযোগিতার সবচেয়ে সফল দল, যারা ১২ বার শিরোপা জিতেছে। তবে এবার নিজেদের প্রথম ম্যাচেই এমন বড় হার তাদের জন্য অশনিসংকেত হয়ে দেখা দিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন আর জ ন ট ন র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।
ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।
১৫ দফা প্রস্তাবনা
সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।