মুঠোফোনে পরিচয়, তরুণীকে ডেকে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
Published: 25th, January 2025 GMT
ময়মনসিংহে এক তরুণীকে ডেকে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চার তরুণের বিরুদ্ধে। ধর্ষণের পর ওই তরুণীকে মাঠে নিয়ে মারধর করলে স্থানীয় এক কৃষক দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করেন। বৃহস্পতিবার রাতে জেলার ঈশ্বরগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে অভিযুক্তদের মধ্যে এক যুবকের মুঠোফোনে পরিচয় ছিল বলে জানা গেছে।
নির্যাতনের শিকার তরুণী (১৯) জেলার গৌরীপুর উপজেলার বাসিন্দা। অভিযুক্ত তরুণেরা ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সোহাগী ইউনিয়নের চট্টি গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে তরুণীকে উদ্ধারের পর স্থানীয় একটি বাড়িতে নিয়ে যান কৃষক জুয়েল মিয়া। তিনি বলেন, ‘রাতে বোরো ধানের জমিতে সেচ দিতে গিয়ে একটি মেয়ের চিৎকার শুনতে পাই। শুরুতে ভয় পেলেও টর্চের আলোতে চার তরুণ ও এক তরুণীকে দেখি। তারা সবাই আমার এলাকার ছেলে। আমি কে কে বলে চিৎকার করতেই মেয়েটি দৌড়ে আমার কাছে এসে বলতে থাকে, আমারে বাঁচাও। এ সময় চার তরুণ দৌড়ে পালিয়ে যায়। মেয়েটি জানায়, চার তরুণ তাকে ধর্ষণ করেছে।’
পরে ভুক্তভোগী তরুণীকে স্থানীয় এক বাড়িতে নিরাপদে রাখা হয়। জুয়েল মিয়া বলেন, ‘যেভাবে মেয়েটি চিৎকার করছিল, মনে হচ্ছিল তাকে মারধর করে মেরে ফেলা হতো। কিন্তু আমি সেখানে যাওয়ায় তারা পারেনি।’
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত চার তরুণ হলেন সোহাগী ইউনিয়নের চট্টি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (২৪), শান্ত মিয়া (১৯), জীবন মিয়া (২২) ও মো.
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, প্রায় এক বছর আগে মুঠোফোনে ইজিবাইকচালক জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে গৌরীপুর পৌর শহরের পাট বাজার থেকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে মোবাইল করে তাকে ডেকে নিয়ে আসেন। মাগরিবের আজানের পর চট্টি গ্রামের একটি বাড়িতে নেওয়া হয় তাকে। তখন বাড়িতে কেউ ছিল না। জাহাঙ্গীরের সঙ্গে আরও দুজন ইজিবাইক ছিলেন, বাড়িটিতে অবস্থান করছিলেন আরও একজন। চারজন মিলে সেখানে তাকে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করে।
ওই তরুণী আরও বলেন, একপর্যায়ে আমাকে ঘর থেকে একটি খোলা মাঠে নিয়ে মারধর করতে থাকেন ওই চারজন। ছেড়ে দেওয়ার জন্য কান্নাকাটি করলে তারা বিকাশের মাধ্যমে টাকা এনে দিতে বলেন। কিন্তু মা–বাবা ফোন ব্যবহার করেন না বলে জানালে বেদম মারতে থাকেন। ওই অবস্থায় একজন ব্যক্তি সেখান থেকে আমাকে উদ্ধার করেন। তা না হলে তারা হয়তো আমাকে মেরে ফেলতেন। আমি এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।
ঘটনার পর থেকে চার তরুণই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। যে বাড়িতে নিয়ে তরুণীকে নির্যাতন চালানো হয় সেই নাঈমকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। নাঈমের দাদি বলেন, ‘আমার নাতি রাইত থাইকা বাড়িত নাই। এই কাম সে অন্যদের পাল্লায় পড়ে করছে।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পর মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসতে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ
এছাড়াও পড়ুন:
বকেয়া বেতনের দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, দুই ঘণ্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খাঁপাড়া এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেড নামের একটি কারখানার শ্রমিকদের এ কর্মসূচির কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে দুর্ভোগে পড়েন চলাচলকারী যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পরে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা যায়, কারখানাটির দেড় হাজার শ্রমিক সকালে কাজে যোগ দিয়ে মার্চ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানান। তবে কর্তৃপক্ষ পরিশোধের তারিখ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে না পারায় শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এর কিছুক্ষণ পর তাঁরা স্লোগান দিয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এশিয়া পাম্প বাসস্ট্যান্ড নামের এলাকায় অবস্থান নেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শিল্প ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এতে শ্রমিকেরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং গরম পানি ছিটিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিক্ষোভরত কয়েকজন শ্রমিক জানান, ঈদের আগে তাঁদের অর্ধেক বেতন-বোনাস দিয়ে কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়, ঈদের পরই বাকি টাকা পরিশোধ হবে। কিন্তু এখনো কিছু পাননি তাঁরা। এ জন্য ঘরভাড়া ও দোকানের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছেন না।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন জানান, শ্রমিকেরা মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ায় আজ বেলা ১১টা থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।