বিশ্ব ফুটবলে দলবদলের বাজারে ফের আলোচনায় ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ব্রাজিলিয়ান এই তারকাকে দলে ভেড়াতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব থেকে এসেছে রেকর্ড পরিমাণ প্রস্তাব। এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে নেইমারের বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে ২০০ মিলিয়ন ইউরোর দলবদলের রেকর্ডও ভেঙে যেতে পারে।

স্প্যানিশ গণমাধ্যম এল ডেসমার্ক জানিয়েছে, সৌদি আরবের ক্লাব আল-আহলি ভিনিসিয়ুসকে দলে নিতে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকার সমান। যদি ভিনিসিয়ুস এই প্রস্তাবে রাজি হন, তবে তিনিই হবেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার।

২৪ বছর বয়সী এই সুপারস্টারের জন্য শুধু আল-আহলিই নয়, সৌদি প্রো লিগের আরও দুটি ক্লাব আল-নাসর এবং আল-হিলালও আগ্রহী। তবে বর্তমানে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছে আল-আহলি। ক্লাবটি এরই মধ্যে রবার্তো ফিরমিনো, রিয়াদ মাহরেজ এবং ইভান টনির মতো তারকাদের দলে নিয়েছে।

ভিনিসিয়ুসের বর্তমান চুক্তিতে ১ বিলিয়ন ইউরোর রিলিজ ক্লজ থাকলেও আল-আহলির এই প্রস্তাব রিয়াল মাদ্রিদের জন্য যথেষ্ট আকর্ষণীয় বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও রিয়াল মাদ্রিদ এই প্রস্তাবে তেমন আগ্রহ দেখায়নি। ক্লাবটি জানিয়েছে, ভিনিসিয়ুসকে ধরে রাখার বিষয়ে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। উল্লেখ্য, তাঁর বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে।

অন্যদিকে, ভিনিসিয়ুস নিজেও রিয়াল মাদ্রিদে থাকার ইচ্ছা পরিষ্কার করেছেন। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ একতি ম্যাচের পর টিএনটি স্পোর্টস ব্রাজিলের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমার স্বপ্ন রিয়াল মাদ্রিদেই থাকা এবং আরও শিরোপা জেতা। সেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলাই আমার লক্ষ্য। এই ক্লাবের হয়ে উন্নতি করতে চাই এবং আরও শিরোপা জিততে চাই।’

তবে সৌদি ক্লাবগুলোর আর্থিক প্রস্তাব ভবিষ্যতে রিয়াল মাদ্রিদ এবং ভিনিসিয়ুসকে কঠিন সিদ্ধান্তের মুখে ফেলতে পারে। ইউরোপের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, এখনও সৌদি ক্লাবে যাওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দেননি। এখন দেখার বিষয়, মাদ্রিদ এই প্রস্তাব এড়িয়ে তাদের তারকাকে ধরে রাখতে কতটা সক্ষম হয়।

এর আগে ২০২৩ সালে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছিলেন ভিনিসিয়ুস। গত বছরও তাঁকে পেতে বড় অঙ্কের প্রস্তাব এসেছিল। তখন রিয়ালে দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্রাজিলিয়ান তারকা সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। এখন দেখার বিষয়, রিয়াল মাদ্রিদ এই বিশাল অঙ্কের প্রস্তাব উপেক্ষা করে তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে ধরে রাখতে কতটা সফল হয়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সেজনি: অবসর ভেঙে ফিরে বার্সার হয়ে ইতিহাস লিখছেন যিনি

২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতের কথা। ভিয়ারিয়ালের মাঠে ভিয়ারিয়ালকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে লিগে টানা ষষ্ঠ জয় আদায় করে নেয় বার্সেলোনা। কিন্তু জিতেও যেন স্বস্তি ছিল না বার্সা শিবিরে। হাঁটুতে মারাত্মক চোট পেয়ে যে স্ট্রেচারের করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে শূন্যে লাফিয়ে বল ধরার পর পড়ে গিয়ে ডান হাঁটুতে এই চোট পান জার্মান গোলরক্ষক।

সে সময়েই বোঝা যাচ্ছিল, খারাপ কোনো খবর পেতে যাচ্ছে বার্সেলোনা। হয়েছেও তাই। জানা যায়, গুরুতর এই চোটে মৌসুম শেষ হয়ে গেছে টের স্টেগেনের। দলের প্রধান গোলরক্ষককে হারিয়ে বার্সার তখন পাগলপ্রায় দশা।

ইনিয়াকি পেনিয়া দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে থাকলেও মৌসুমজুড়ে তাঁর ওপর আস্থা রাখা কঠিনই ছিল। আর কোনো কারণে যদি তাঁকেও হারাতে হয়, তখন কী হবে! সব মিলিয়ে বার্সার আরেকজন গোলরক্ষককে দলে টানা জরুরি হয়ে দাঁড়ায়।

কিন্তু লা লিগার দলবদলের দুয়ার তখন বন্ধ হওয়ায় বিকল্প পথের সন্ধান করতে হয় বার্সাকে। এর মধ্যে একটা পথ পেয়েও যায় তারা। স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) বিশেষ শর্ত মেনে গোলরক্ষক ভেড়ানোর সুযোগ পায় কাতালান ক্লাবটি। শর্তটি হচ্ছে চোটাক্রান্ত খেলোয়াড়টিকে চার মাসের বেশি সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যেতে হবে।

আরও পড়ুনআলিসন ও সেজনি: মানব থেকে অতিমানব০৬ মার্চ ২০২৫

পাশাপাশি যে খেলোয়াড়টি তারা নেবে, তাঁকে ফ্রি এজেন্ট হতে হবে এবং দলবদল শেষ হওয়ার আগেই আগের ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি শেষ করতে হবে। এ ছাড়া নতুন যে গোলরক্ষককে তারা কিনবে, তাঁকে আহত গোলরক্ষকের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন দেওয়ার অনুমতি পাবে ক্লাবটি। যেমন বার্সায় টের স্টেগেন বেতন পান বছরে ৯০ লাখ ইউরো। এখন নতুন গোলরক্ষকের বেতন হতে পারবে বছরে সর্বোচ্চ ৭০ লাখ ইউরো।

এত শর্ত মেনে খেলোয়াড় খুঁজে বের করা সহজ ব্যাপার ছিল না। কিন্তু এই কঠিন শর্তই বার্সাকে পৌঁছে দেয় ভয়চেক সেজনির কাছে। যিনি এক মাস আগে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট জুভেন্টাসের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি ছিন্ন করে হয়ে যান ফ্রি এজেন্ট।  

দলের সঙ্গে ট্রফি হাতে সেজনির উদ্‌যাপন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেজনি: অবসর ভেঙে ফিরে বার্সার হয়ে ইতিহাস লিখছেন যিনি