Samakal:
2025-06-16@17:17:17 GMT

মনের অসুখ

Published: 25th, January 2025 GMT

মনের অসুখ

মন কি প্রাণিসত্তার অংশ নয়? সেটি তো সবচেয়ে বড় অংশ, যা আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। দৃশ্যমান নয় বলে মনের কি অসুখ হতে পারে না? জ্বর, ঠান্ডা, ক্যান্সার, টিউমার, কভিড ইত্যাদি সমস্যার ব্যাপারে আমরা অবগত। আমরা মনের একটা রোগের নাম বলতে পারি না। বাংলাদেশে প্রায় ২৪ হাজার মানুষ প্রতিবছর আত্মহত্যা করে এবং পৃথিবীতে এর সংখ্যা প্রায় ৭ লাখের কাছাকাছি। তা সত্ত্বেও আমরা কি এ বিষয় নিয়ে জানার প্রায়োজন বোধ করি? 

মনের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়। যেমন– ওসিডি বা অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার। এই রোগে ভুক্তভোগীরা একই কাজ বার বার করে। কারণ, তারা কাজটি করে শান্তি পায় না। মনে হয় ভালো হলো না। ভুল হচ্ছে। তাই তারা একই কাজ বারবার করে; যাকে আমরা শুচিবাই বলে থাকি। অনেকেরই এটি থাকে।  ঝামেলা তখন বাধে যখন এটি মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে যায়। আশপাশের সবাই না বুঝে বকাঝকা করে নানান কথা বলে, কিন্তু এই ব্যাপারটা তার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সে বুঝতে পেরেও সেটি বন্ধ করতে পারে না। দীর্ঘদিন এ যন্ত্রণা ভোগ করতে না পেরে অনেকে মৃত্যুকে বেছে নেয়। চিকিৎসক দেখিয়ে কিছু ওষুধ খেলেই এটি সেরে যায়। দরকার শুধু একটু সচেতনতা আর পাশে থাকে এমন একজন মানুষ। 

মনের আরেকটি রোগের নাম বাইপোলার ডিসঅর্ডার। এটি মনের অন্যতম কঠিন একটি রোগ। যেখানে আপনার মন হঠাৎ পরিবর্তন হয়ে যাবে। এই খুশি, আবার এই কান্না। মাঝ রাতে উঠে মেকআপ করতে বসবেন। আবার করতে করতেই হঠাৎ এসে শুয়ে কাঁদতে থাকবেন। এটি একটানা অনেকদিন থাকতে পারে। যেমন আপনি তিন দিন ধরে খালি শুয়েই আছেন আর কাঁদছেন অথচ নিজেও জানেন না। 
ইনসুমনিয়া তথা নিদ্রাহীনতা মনের আরেকটি রোগের নাম। এক, দুই, চার দিন পর্যন্ত নির্ঘুম কেটে যেতে পারে।  দীর্ঘদিন এভাবে গেলে সমস্যাটি প্রকট আকারে রূপ নেয়। দীর্ঘদিন ঘুম না হওয়ার কারণে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে হ্যালুসিনেশন, রাগ, সন্দেহ, আত্মঘাতীমূলত পদক্ষেপও দেখা দেবে। এমন হলে দরকার সঠিক চিকিৎসা এবং কিছু কাউন্সেলিং।
মনের রোগ হিসেবে হতাশা বা ডিপ্রেশনের কথা আমরা সবাই শুনে থাকি। খুবই সাধারণ ঘটনা। চাকরি না থাকা, দীর্ঘদিন এক রুটিন, সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া, কাঙ্ক্ষিত বা প্রিয় জিনিস না পাওয়া ইত্যাদি। প্রাথমিক পর্যায়ের হতাশা তেমন কোনো সমস্যা নয়। দু’দিন পর সেরে যাবে। বেশি ভয়াবহ হলে তখন সমস্যা দেখা দেয়। সবচেয়ে প্রিয় কাজটাও করতে ভালো লাগে না। কান্না আসে। মনে হয় কেউ নেই। একা লাগে। এমন সময় সবচেয়ে বেশি দরকার একজন মানুষ যে আপনাকে বোঝে। আপনার হাতটা শক্ত করে ধরে থাকবে। নিজের চেষ্টা আর সামান্য ওষুধে এটি ঠিক হয়ে যায়।

মনের আরেকটি রোগের নাম ফোবিয়া। এ রোগে ভুক্তভোগীরা খুব বেশি ভয় পায়। তেলাপোকাকে অনেকে ভয় পেতে পারে। এ ভয় পাওয়াটা তেমন কিছু না। ফোবিয়ার বিষয়টি বেশ মাত্রাতিরিক্ত। এ ধরনের মানুষগুলোকে মজার ছলে হলেও ভয় দেখানো যাবে না। এতে তার হৃদযন্ত্রের কাজ বন্ধ হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এটিও একধরনের মানসিক সমস্যা। 
মনের রোগ কখন কার হবে কেউ জানে না। ঠিক তেমন যেমন আমার কবে জ্বর হবে বলতে পারি না। পারিবারিক কলহ, কোনো ট্রমা, দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের কারও 
রোগ বা এমন যেকোনো কারণে এটি হতে পারে।

সিদরাতুল মুনতাহা ঐশ্বর্য: ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা

রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।

এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।

রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।

সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।

এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।

রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ