Samakal:
2025-07-31@06:33:53 GMT

বাজার থেকে টাকা তোলায় সাড়া কম

Published: 25th, January 2025 GMT

বাজার থেকে টাকা তোলায় সাড়া কম

দুর্বল ছয়টি ব্যাংকের আমানতকারীর টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করতে বিশেষ ধার হিসেবে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব এড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে ওই ধারের বিপরীতে সবল ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। দুই মাসে ১০টি নিলামে উত্তোলন হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে চলতি মাসের ৪ নিলামের মধ্যে দু’দিনে এক টাকাও ধার নিতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সাধারণভাবে ব্যাংকের কাছে থাকা উদ্বৃত্ত ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার নেয় ব্যাংকগুলো। দীর্ঘদিন ধরে ছয়টি ব্যাংকের উদ্বৃত্ত বিল-বন্ড  দূরে থাক, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাবে বড় ঘাটতি নিয়ে চলছিল। সাধারণভাবে কোনো ব্যাংকের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাবে টাকা না থাকলে লেনদেন করতে পারে না। ওই সময় এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা– ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, এসআইবিএল, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন ও ন্যাশনাল ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঋণাত্মক রেখেই লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হয়। ড.

আহসান এইচ মনসুর গভর্নরের দায়িত্ব নিয়ে ঘোষণা দেন, নতুন করে আর এসব ব্যাংককে টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হবে না। ব্যাংকগুলোর সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে ভালো ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে এসব ব্যাংকে দেওয়ার উদ্যোগ নেন তিনি। তাতে সাড়া না পেয়ে শেষ পর্যন্ত গত নভেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছয়টি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা দেয়। এভাবে টাকা দেওয়া টাকা ছাপানোর মতো। 

গত ২০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের প্রথম নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নভেম্বরে দুটি নিলামে উত্তোলন করা হয় ৯৫৪ কোটি টাকা। এর সুদহার ছিল ১১ দশমিক ১০ শতাংশ। এর পর ডিসেম্বর মাসে ৪টি নিলামে উত্তোলন করা হয় ১ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা, যার সুদহার ছিল  ১১ দশমিক ৪৯ থেকে ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ। জানুয়ারি মাসেও একই রকম সুদ দিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। 
বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি গড়ে ১১ দশমিক ৪৯ শতাংশ সুদে ৪০০ কোটি টাকা উত্তোলন হয়েছে। ৯ জানুয়ারির নিলামে ১২ দশমিক ৬৫ থেকে ১৩ শতাংশ সুদে মাত্র ৪০ কোটি টাকা রাখার চেষ্টা করে দুটি ব্যাংক। এদিন এক টাকাও নেওয়া হয়নি। গত ১৫ জানুয়ারির নিলামে ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ সুদে উত্তোলন হয়েছে মাত্র ২৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত ২২ জানুয়ারির নিলামে ১৩ শতাংশ সুদে ২০ কোটি টাকা রাখার চেষ্টা করে একটি ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শেষ পর্যন্ত আর এই টাকা উত্তোলন করেনি। জানা গেছে, বর্তমানে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতে আমানত প্রবাহে গতি কম। এ কারণে নিয়মিত বিল ও বন্ডের নিলামের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে আগ্রহ কম দেখাচ্ছে ব্যাংকগুলো। 

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান মনে করেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় যে সমন্বয় দরকার সেখানে ঘাটতি আছে। তিনি বলেন, ঋণের সুদহার বৃদ্ধি সরাসরি ব্যবসায়িক খরচ বাড়াচ্ছে। আবার ব্যবসার নগদ প্রবাহের ওপর চাপ সৃষ্টি করে পরিচালনার খরচ বাড়াচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে সুদহার বৃদ্ধি ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমে বিনিয়োগে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। ব্যবসায়ীরা যদি উচ্চ সুদ পরিশোধ করতে না পারেন, তবে নতুন প্রকল্প বা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নিতে সংকুচিত হয়ে পড়বে। এর ফলে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতি আরও স্লথ হবে। কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে

৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।

পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—

পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’

আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ