জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় সড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কেটে রাখা গাছের ওপর দিয়ে একটি ট্রাক পার হতে গিয়ে সড়কের পাশে খাদে উল্টে গেছে। এ ঘটনায় ট্রাকচালক হান্নান আহত হয়েছেন। গত শনিবার রাতে উপজেলার আক্কেলপুর-তিলকপুর সড়কের কাদোয়া বটতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ট্রাকের পেছনে থাকা একটি ডিমের গাড়ি আটকিয়ে অস্ত্রের মুখে অন্তত দেড় লাখ টাকা লুট করে নিয়েছে বলে জানা গেছে। আরেকটি পিকআপ থামিয়ে অন্তত ২০ জনের মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দিনাজপুরের বিরল উপজেলা থেকে ২৬১ বস্তা আতপ ধান ট্রাকে নিয়ে বগুড়ার সান্তাহার যাচ্ছিলেন চালক হান্নান। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আক্কেলপুর-তিলকপুর সড়কের কাদোয়া বটতলী এলাকায় পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা সড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এ সময় চালক ট্রাক না থামিয়ে গাছের ওপর দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করেন।
এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদে উল্টে যায় ট্রাক। পরে ভেতর থেকে চালক ও তাঁর সহকারীকে বের করে এনে মারধর করে ১৫ হাজার টাকাসহ মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ট্রাকের পেছনে মুরগির ডিমবাহী গাড়ি আটকিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দেড় লাখ টাকা লুটে নেয় তারা। একই সময় অপর আরেকটি পিকআপ থামিয়ে আদিবাসী ২০ জনের মোবাইল ফোন লুট করে।
ট্রাকচালক হান্নান বলেন, ‘সড়কে গাছ ফেলানো দেখে তার ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করি। এ সময় গাড়িতে বেশি পণ্য থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে যায়। তখন তারা আমাদের গাড়ির ভেতর থেকে টেনে বের করে মারধর করে। পাশাপাশি ১৫ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন, গাড়ি ও ধানের কাগজ ছিনিয়ে নিয়েছে।’
এ বিষয়ে আক্কেলপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন কুমার বলেন, তারা এলাকায় টহলে ছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ডাকাত দলের সদস্যরা পালিয়ে যায়। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট র ক দ র ঘটন সড়ক র এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ