যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির প্রায় ৬০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সবেতন ছুটিতে পাঠিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যমতে মার্কিন সরকার বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডির সব প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দেওয়ার পর এমন পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিশ্বজুড়ে মার্কিন সহায়তার বরাদ্দ কত হবে তা নির্ধারণের প্রচেষ্টায় শামিল হতে শনিবার ইউএসএআইডি কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এছাড়াও কোনো কর্মী প্রশাসনের আদেশ উপেক্ষা করলে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের দায়ে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। খবর- রয়টার্স 

সোমবার সন্ধ্যায় ইউএসএআইডির কর্মীদের কাছে অভ্যন্তরীণভাবে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির একটি কপি হাতে পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, নতুন প্রশাসন ইউএসএআইডিতে এমন বেশ কিছু পদক্ষেপ শনাক্ত করেছে, যেখানে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ ও মার্কিন জনগণের চাওয়াকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক জ্যাসন গ্রে ওই চিঠিতে আরও লিখেছেন, ‘ফলে আমরা কিছুসংখ্যক ইউএসএআইডি কর্মীকে পূর্ণাঙ্গ বেতন ও সুবিধা সহকারে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠিয়েছি।’ ইউএসএআইডির উল্লেখিত তৎপরতা নিয়ে পর্যালোচনা চলাকালে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি।

মার্কিন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের আওতায় ঠিক কতজন কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। তবে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, এই সংখ্যা ৫৭ থেকে ৬০-এর মতো হতে পারে।

দুটি সূত্র বলেছে, যাদের ছুটিতে পাঠানো হচ্ছে, তার মধ্যে ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রায় সব ইউএসএআইডি ব্যুরোর নেতৃত্বস্থানীয় কর্মীরা আছেন। জ্বালানি সুরক্ষা, পানিসংক্রান্ত সুরক্ষা, বিদেশে শিশু শিক্ষা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির মতো খাতগুলোতে তাঁরা কাজ করেন।

এ ব্যাপারে ইউএসএআইডি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল রয়টার্স, তবে তাৎক্ষণিক সাড়া পাওয়া যায়নি।

ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরই বেশ কিছু সংস্থার কর্মীদের রদবদল কিংবা বরখাস্ত করেন। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বিশ্বজুড়ে সহায়তা কার্যক্রম বন্ধ রাখার একটি আদেশ জারি করেছে। ৯০ দিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেন ট্রাম্প। বিদেশি সহায়তাগুলো তার পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা খতিয়ে দেখতে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান সহায়তা কর্মসূচির ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রয়ট র স ইউএসএআইড র রয়ট র স

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ