যশোরে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
Published: 28th, January 2025 GMT
ত্রিশজন গ্রাহকের ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলায় যশোরে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান মুফতি আবু তাহের নদভীসহ ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পিবিআই। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় ৯ জনকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে চার্জশিটে।
মামলার তদন্ত শেষে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) আদালতে চার্জশিট জমা দেন পিবিআই’র তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক আজিজুল হক।
যশোরের কোর্ট ইন্সপেক্টর রোকসানা খাতুন চার্জশিট জমা দেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
দিনাজপুরে পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার
শিবচরে রেললাইনের পাশে মিলল যুবকের মরদেহ
অভিযুক্ত অপর আসামিরা হলেন- এহসান গ্রুপের প্রধান নির্বাহী ব্যবস্থাপক কাজী রবিউল ইসলাম, জিএম জুনায়েদ আলী, পরিচালক আজিজুর রহমান, মঈন উদ্দিন, মুফতি গোলাম রহমান, আব্দুল মতিন, পরিচালক (প্রশাসন) আমিনুল হক, কলিমুল্লাহ কলি, মিজানুর রহমান, মুফতি ইউনুস আহমেদ, মনিরুল ইসলাম, আইয়ুব আলী, শাসুজ্জামান টিটো, যশোর শাখার ম্যানেজার আতাউল্লাহ, আব্দুল হালিম, লোকমান হোসেন মিয়াজী, আক্তারুজ্জামান ও এফও মোহাম্মদ আলী।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত আসামিরা এহসান গ্রুপের গ্রাহকদের নানাভাবে বুঝিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে আমানত রাখতে প্রলুব্ধ করেন। তাদের প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখলে সুদবিহীন মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হবে নিশ্চয়তা দেন। তাদের কথায় বিশ্বাস করে ৩০ জন গ্রাহক ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা আমানত রাখেন এহসান গ্রুপে।
প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছরে কয়েকজন আমানতকারীকে সামান্য কিছু মুনাফা দেয়। ২০১৪ সালের ১ জুলাই রাতারাতি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। যশোরসহ এই প্রতিষ্ঠানের মূল কর্মকর্তারা আত্মগোপনে চলে যান। এ প্রতিষ্ঠানটি যশোর থেকে গ্রাহকের ৩২২ কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ৭৫০ টাকা নিয়ে গেছে। ৩০ গ্রাহকের পক্ষে ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এহসান গ্রুপের প্রধান কর্মকর্তাসহ মাঠপর্যায়সহ ২৮ জনকে আসামি করে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দিপাড়া কদমতলা এলাকার এহসান গ্রুপের গ্রাহক মফিজুল ইসলাম ইমন।
মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়ায় ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় যে ৯ জনের অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন- সংস্থার মাঠকর্মী সিরাজুল ইসলাম সোনা মিয়া, এফও কমিটির সভাপতি শামছুর রহমান, সেক্রেটারি বাবর আলী, এফও কমিটির প্রচার সম্পাদক আব্দুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম সেলিমউল আজম চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক মোকসেদ আলী, সাবেক সেক্রেটারি মুফতী ফুরকান আহমেদ, এহসান গ্রুপের পরিচালক এসএম মিরাজুর রহমান ও হাফিজুর রহমান।
ঢাকা/রিটন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এহস ন গ র প র ল ইসল ম র রহম ন গ র হক তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।