নিজের হাত-পা বাঁধা ছবি স্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করেছিলেন মোহাম্মদ ইদ্রিস (৩৫)। স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, তাকে অপহরণ করা হয়েছে, মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা না দিলে অপহরণকারীরা হত্যা করবে।

ইদ্রিসের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি পুলিশকে জানালে তদন্তে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য—এটি অপহরণ নয়, বরং ইদ্রিসের সাজানো নাটক। মূলত, ভাইদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে ঋণ পরিশোধ এবং মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের মোহরার বালুর টাল এলাকা থেকে ইদ্রিসকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে কক্সবাজারের পেকুয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। 

মোহাম্মদ ইদ্রিসের বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি মৌলভীপাড়া গ্রামে।

পুলিশ জানিয়েছে, ২৪ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে পেকুয়ার টৈটং বাজার থেকে আত্মগোপনে চলে যান ইদ্রিস। এরপর স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে জানান, তিনি অপহৃত হয়েছেন। মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে, না হলে তাকে হত্যা করা হবে।

ইদ্রিসের পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে ৩ লাখ টাকা জোগাড় করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে বিষয়টি জানান।

পুলিশ প্রথমে ইদ্রিসের মোবাইল ফোনের সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। ইদ্রিসের সন্ধান না পেয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন এক জনকে শনাক্ত করা হয়; তিনি নবী হোছেন—ইদ্রিসের স্ত্রীর ছোট বোনের স্বামী।

পুলিশ নবী হোছেনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ইদ্রিসের অপহরণ নাটকের বিষয়ে আগেই জানতেন নবী হোছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ চট্টগ্রাম নগরের মোহরা বালুর টাল থেকে ইদ্রিসকে উদ্ধার করে।

গতকাল রাতে পেকুয়া থানায় ইদ্রিসের সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা হয়। তিনি বলেন, “আমি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকার মতো ঋণ নিয়েছিলাম। পাওনাদাররা চাপ দিচ্ছিলেন। তাই, ভাইদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা করেছিলাম। বেশি টাকা পেলে মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার ইচ্ছাও ছিল।”

তিনি আরো বলেন, “আমি দোকান থেকে রশি কিনে অন্য এক জনের সহায়তায় নিজের হাত-পা বেঁধে ছবি তুলেছিলাম এবং তা স্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনাটি এত বড় হয়ে যাবে ভাবিনি। আমি অনুতপ্ত।”

ইদ্রিসের পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আট মাস আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরার পর ইদ্রিস কর্মহীন হয়ে পড়েন। পাওনাদারদের চাপ সামলাতে না পেরে তিনি আবার মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

ইদ্রিসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা। 

ঢাকা/তারেকুর/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। 

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে। 

পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কক্সবাজারে অপহৃত রোহিঙ্গা উদ্ধার, আটক ৩
  • র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
  • কল্পনা চাকমার অপহরণের বিচার চেয়ে ফেরার পথে হামলার অভিযোগ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির নিন্দা
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার