দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৮ রুটের বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার
Published: 29th, January 2025 GMT
বাস মালিক সমিতি, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠকের পর অবশেষে বাস শ্রমিকদের ডাকা বরিশালসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৮টি রুটের অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাস শ্রমিকরা।
বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৈঠকের পর বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাত ৮টায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস চলাচল শুরু হলো।
বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদদেলোয়ার হোসেন বাস শ্রমিকদের নিয়ে এ বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠক শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বরিশাল বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম চৌধুরী।
বরিশাল রুপাতলী বাসমালিক সমিতির সভাপতি মো.
বৈঠকের পর রাতে বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকআবুল কালাম চৌধুরী বলেন, “আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেওয়া হবে। বন্ধের দিনে কোনো হাফ ভাড়া থাকবে না। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরাও একমত হয়েছেন।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, “বৈঠকে উভয় পক্ষ আলোচনায় সমঝোতার পর বাস ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়েছে।”
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকের মধ্যে সংঘর্ষের পর বাস টার্মিনালে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার পর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে ওইদিন রাত ৮টার পর থেকে বরিশালের রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৮টি রুটে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘটের ডাক দেন পরিবহন শ্রমিকরা।
এতে বরিশাল থেকে দক্ষিণের বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ছাড়াও বাগেরহাট, খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব রুটে বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে বিএম কলেজের এক ছাত্রীর কাছ থেকে হাফ ভাড়া আদায় নিয়ে ঝালকাঠি রুটের একটি বাসের হেলপার খারাপ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মীমাংসার জন্য টার্মিনালে গেলে তিন জনকে শ্রমিকরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ।
এসময় শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পাঁচটি বাস ও শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। এরপর মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেন রূপাতলী বাস টার্মিনালের শ্রমিকরা।
ঢাকা/পলাশ/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আমাদের যত ঘুঘু
মনিরা হাঁসের (বৈকাল টিল) সন্ধানে ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। বটতলা ঘাট থেকে ছেড়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় আধঘণ্টায় সিমলা পার্কের উল্টো পাশের চরের কাছে আসতেই একটি ঘুঘুকে পাড়ে বসে থাকতে দেখলাম। দ্রুত একটি ছবি তুলে ওটির পরিচয় নিশ্চিত হলাম। এই দুল৴ভ পাখিটি প্রথম দেখি ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ কুয়াশাভরা সকালে হবিগঞ্জের কালেঙ্গা বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যে। এরপর ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি সুন্দরবনের করমজলে।
পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর কাছ থেকে ভালো ছবি তোলার আশায় ধীরে ধীরে নৌকা পাখিটির কাছাকাছি নিতে থাকি। তবে নৌকা যতই কাছে যাক না কেন, সেটি কিন্তু অবিচল—একটুও নড়ছে না, চুপচাপ বসে আছে। কৌতূহলবশত নৌকা থেকে পাড়ে নামলাম, পাখিটির একদম কাছে চলে গেলাম। এরপর সেটি ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করল। আমরাও পিছু নিলাম। কিছুক্ষণ পর অনেকটা অনিচ্ছায় উড়াল দিল পাখিটি।
ঘুঘু পাখি কবুতরের মতো একই গোত্র কোলাম্বিডির (কপোত) সদস্য। ঘুঘুর দেহ কবুতরের মতোই তুলনামূলক ভারী, মাথা ছোট, চঞ্চু ও পা খাটো। ওড়ার পেশি শক্তিশালী। তাই দ্রুত ও দীর্ঘক্ষণ উড়তে সক্ষম। লেজ হাতপাখার মতো বিস্তৃত। তবে আকারে কবুতরের চেয়ে ছোট হয়। এরাও স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষ পিত্তথলিতে উৎপন্ন ক্ষীরের মতো অর্ধতরল দুধ খাইয়ে ছানাগুলোকে বড় করে তোলে, যা ‘পায়রা বা ঘুঘুর দুধ’ নামে পরিচিত। এদেশে এই গোত্রের যে ১৮টি প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ১০টি কবুতর ও ৮টি ঘুঘু রয়েছে। প্রায় অর্ধেকের বেশি প্রজাতি সারা বছর প্রজনন করে। আয়ুষ্কাল চার থেকে ছয় বছর। এখানে এ পাখির সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হলো।
রামঘুঘু (ওরিয়েন্টাল টার্টল ডাব): ফিচারের শুরুতে লালচে বাদামি বর্ণের যে ঘুঘুর গল্প বললাম, সেটি এ দেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি রাম, কইতর বা গোলাপ ঘুঘু। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বহু দেশে এর দেখা মেলে। প্রাপ্তবয়স্ক ঘুঘুর দেহের দৈর্ঘ্য ৩৩ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার। ওজন ১৬৫ থেকে ২৭৪ গ্রাম।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় উড়ন্ত ধবল ঘুঘু