নাটোরে ঐতিহ্যবাহী গাঁওয়ালী শিরনি উৎসব
Published: 30th, January 2025 GMT
নাটোর সদর উপজেলায় মদন হাট গ্রামে ঐতিহ্যবাহী গাঁওয়ালী শিরনি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। চাল, ডাল দিয়ে রান্না করা এ শিরনি খেতে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ভোর ৬টা থেকে সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের মদন হাট গ্রামে এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবে অংশ নেন শতাধিক পরিবার। অনুষ্ঠানকে ঘিরে দূর-দূরান্ত থেকে গ্রামে গিয়েছেন জামাই-মেয়ে-নাতি-নাতনীসহ স্বজনরা।
গাঁওয়ালী শিরনিকে কেন্দ্র করে মদন হাট গ্রামে করা হয়েছে ভোজের আয়োজন। শত বছর ধরে চলে আসছে শীতকালে ঝাল শিরনি দিয়ে গ্রামবাসীর এ উৎসব। কথিত আছে এক থেকে দেড়শ বছর আগে এই গ্রামে ডায়রিয়া-কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব হয়; পরে এক ফকির এসে শিরনির আয়োজন করার পরামর্শ দেন। সেই সময় শিরনি উৎসব পালন করা হলে গ্রামবাসী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এই গ্রামের লোকজন প্রতি বছর এ উৎসব পালন করে আসছেন।
স্থানীয়রা জানায়, গাঁওয়ালী শিরনি অনুষ্ঠানে দূর-দূরান্ত থেকে জামাই-মেয়ে-নাতি-নাতনিসহ স্বজনরা গ্রামে আসেন। ভোজনের আয়োজন করা হয়। ভোর থেকে দিনভর চলে এই আয়োজন। পরিবারের সদস্য ও আগত অতিথিদের সংখ্যা ভেদে ৮ থেকে ১০টি পর্যন্ত ভোজের ভাগ দেন পরিবার প্রধান। কেউ চাল কেউবা টাকা দিয়ে অংশ নিয়ে থাকেন।
মদন হাট এলাকার বাসিন্দা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাঠ-সহকারী মো.
মদন হাট এলাকার বাসিন্দা নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ সিএ মো. নুরুল ইসলাম ছোটন জানান, অনেক বছর আগে এই গ্রামে ডায়রিয়া-কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। অনেক মানুষ মারা যায়। আতাব্দি ফকির নামে এক আলেমের পরামর্শে শিরনি উৎসব করা হয়। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন আক্রান্তরা। কিছুদিন পর গবাদি পশুও আক্রান্ত হলে একইভাবে শিরনি উৎসব করা হয়। এমনটি কথা শুনেছি আমাদের মুরুব্বীদের কাছ থেকে।
মদন হাট এলাকার বাসিন্দা মো. উসমান আলী বলেন, “বাপ দাদার আমল থেকেই এই শিরনি হয়। বালা, মছিবত, বিপদ আপদ, কলেরা থেকে বাঁচার জন্য এই শিরনি করতেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা।”
এর আগে (৬ জানুয়ারি) নাটোর সদর উপজেলার ভাতুরিয়া গ্রামে হাজারো মানুষের সমাগমে ঐতিহ্যবাহী গাঁওয়ালী শিরনির উৎসব পালন করা হয়।
মদন হাট এলাকার প্রবীণ আমজাদ মীর, মীর ইসলাম, মীর ইদ্রিস জানান, পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য হিসেবে তারা এ উৎসব পালন করে আসছেন। শত বছরের বেশি সময় ধরে এ উৎসব হয়ে আসছে।
উৎসবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ, জেলা যুবদলের সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম, নলডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিকুর রহমান তালুকদার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনসহ প্রমুখ।
ঢাকা/আরিফুল/ইমন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এ উৎসব উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আকাশ থেকে ঝরে পড়ছে চকলেট
যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটে এখন বসন্তকাল, চমৎকার উষ্ণ আবহাওয়া, আকাশে এলোমেলো উড়ে বেড়াচ্ছে কিছু মেঘ। এমন আবহাওয়ায় চকলেট বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ।
কি, অবাক হচ্ছেন তো? ভাবছেন কীভাবে আকাশ থেকে চকলেট বৃষ্টি পড়বে? আপনি যখন এসব ভাবছেন, তখন ডেট্রয়েটের ওর্ডেন পার্কে কয়েক শ শিশু অধীর হয়ে চকলেট বৃষ্টি শুরু হওয়ার অপেক্ষায় আছে। তাদের হাতে রংবেরঙের ছোট ছোট ঝুড়ি, কেউ কেউ আবার খরগোশের কান পরে এসেছে। একটু পরপর আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা পরিস্থিতি বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
হঠাৎই একটি হেলিকপ্টার উড়ে আসার শব্দ শোনা যায়, শিশুদের মধ্যে চঞ্চলতা বেড়ে যায়। এদিকে হেলিকপ্টার থেকে ওর্ডেন পার্কের সবুজ লন ভালো করে দেখে নেওয়া হচ্ছে, মুহূর্তখানেক পরই শুরু হয় চকলেট বৃষ্টি। হেলিকপ্টার থেকে বস্তার মুখ খুলে ফেলা হচ্ছে মার্শমেলো (চকলেট)। সবুজ ঘাসে ছড়িয়ে পড়ছে রঙিন মার্শমেলো।
শিশুদের ধৈর্যের বাঁধ প্রায় ভেঙে পড়ার অবস্থা। কিন্তু হলুদ রঙের ভেস্ট পরা স্বেচ্ছাসেবকেরা নিরাপত্তার খাতিরে শিশুদের চকলেট কুড়াতে যেতে দিচ্ছেন না। হেলিকপ্টার থেকে চকলেট বৃষ্টি পড়া বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত শিশুদের কোনোমতে আটকে রাখা হয়। এরপর স্বেচ্ছাসেবকেরা সরে দাঁড়াতেই খুশিতে চিৎকার করতে করতে ঝুড়ি হাতে মাঠে ছড়িয়ে থাকা মার্শমেলোর দিকে শিশুরা ছুটতে শুরু করে। মার্শমেলো কুড়িয়ে হাতে থাকা ঝুড়ি ভর্তি করে ফেলে তারা।
খোলা জায়গায় ফেলা মার্শমেলো খাওয়া ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে যে কেউ ভাবনায় পড়তে পারেন। ভাবনার কিছু নেই, ‘দ্য অ্যানুয়াল গ্রেট মার্শমেলো ড্রপ’ উৎসবে যেসব মার্শমেলো ফেলা হয়, সেগুলো খাওয়ার জন্য নয়। শিশুরা কুড়িয়ে নেওয়া মার্শমেলোর বদলে গিফট ব্যাগ নিতে পারে। ওই ব্যাগে তাদের জন্য বিভিন্ন পার্কে বিনা মূল্যে প্রবেশের টিকিট থেকে শুরু করে ঘুড়িসহ নানা খেলনা থাকে।
তিন দশকের বেশি সময় ধরে ডেট্রয়েটের শহরতলি রয়্যাল ওকে মার্শমেলো ড্রপ উৎসবের আয়োজন করা হয়। ওকল্যান্ড কাউন্টি পার্ক ওই উৎসবের আয়োজক।