মধ্যবিত্তদের জন্য বাজেটে আয়কর ছাড়ের বড় ঘোষণা দিয়ে পার্লামেন্টে বাজেট পেশ করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আজ শনিবার সকালে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে সংসদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন নির্মলা সীতারামন। এরপর তিনি পার্লামেন্টে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন।

নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রথম পূর্ণাঙ্গ এই বাজেট মধ্যবিত্ত বেতনভোগী করদাতাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। এবারের বাজেটে সবচেয়ে বড় ঘোষণা হল আয়কর ছাড়। ১২ লাখ রুপি পর্যন্ত আয়ে কোনো আয়কর দিতে হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এর আগে এই কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ছিল ৭ লাখ রুপি।

এর মাধ্যমে টানা আটবার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করে নতুন রেকর্ড গড়েছেন ভারতের এই নারী অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে সাত বার পূর্ণাঙ্গ বাজেট এবং একবার অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করেছেন তিনি। 

আয়করের নতুন এই ব্যবস্থা আগামী অর্থবছর থেকে চালু হবে। উচ্চ আয়ের কর্মীরাও করছাড়ের আওতায় থাকবেন। বছরে ৫০ লাখ রুপি যাদের আয়, নতুন কাঠামোয় তারা ছাড় পাবেন ১ লাখ ১০ হাজার রুপি।

বাজেট পেশ করে দেশটির নাগরিকদের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই বাজেটের লক্ষ্য ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তের ব্যয় ক্ষমতা বাড়ানো। এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বড় ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী। দেশের প্রতিটি জেলায় ক্যান্সার সেন্টার তৈরি, মেডিকেল কলেজগুলোতে ১০ হাজার আসন বৃদ্ধি, চিকিৎসকদের সংখ্যা বাড়ানো, এক কোটি কর্মীকে স্বাস্থ্য ও বীমার সুবিধার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত। ক্যান্সারসহ দুরারোগ্য ব্যাধির জন্য ব্যবহৃত ৩৬টি জীবনদায়ী ওষুধে কোনো কর লাগবে না। দেশের কৃষকদের উন্নয়ন ও আত্মনির্ভরতা বাড়াতেও একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে পর্যটন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়।

কেন্দ্রের এই ঘোষণায় কিছুটা উচ্ছসিত মধ্যবিত্ত সমাজ। এই বাজেটে দাম কমেছে মোবাইল ফোন, এলইডি টিভি, ইলেকট্রিক গাড়ি, দেশে তৈরি কাপড়, বরফজাত মাছ, চামড়ার জিনিস, মেডিকেল সরঞ্জামের। দাম বেড়েছে স্মার্ট মিটার, সোলার সেল, বিদেশি জুতা, বিদেশি আলো ও বিদেশি মোটরসাইকেলের।

বাজেটে কোন দেশের বরাদ্দ কত?

প্রতিবেশী দেশ ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এমন দেশগুলোকে অর্থনৈতিক অনুদান দেয় ভারত। এবারের বাজেটে দেখা যায়, ২০২৫ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এমন বিদেশি অনুদান বাবদ মোট ৫ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। গত বছর বিদেশি অনুদান বাবদ বরাদ্দ ছিল ৫ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। 

বাজেটে প্রতিবেশী মালদ্বীপে ভারতের সাহায্য গত বছরের বরাদ্দের তুলনায় ১২০ কোটি টাকা বেড়েছে। এই বছর সরকার মালদ্বীপকে ৬০০ কোটি রুপি অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গত বছরের মালদ্বীপের জন্য বাজেটে বরাদ্দকৃত ছিল ৪৭০ কোটি রুপি। গাণিতিক হিসাবে, এই এক বছরে মালদ্বীপের জন্য ভারতের বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। 

শুধু মালদ্বীপ নয়, আফগানিস্তানের জন্যও বাজেট বরাদ্দ বাড়িয়েছে ভারত। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০ কোটি রুপি থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ১০০ কোটি রুপি। 

তবে বরাবরের মতই ভারতের বাজেটে বৈদেশিক সহায়তার সব থেকে বড় বরাদ্দ পেয়েছে প্রতিবেশি পাহাড়ি দেশ ভুটান। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে আর্থিক বরাদ্দ ১৫ শতাংশ কমালেও ভুটানকে ২ হাজার ১৫০ কোটির বরাদ্দ দিয়ে উন্নয়ন সহায়তার অংশীদার করেছে ভারত। 

এদিকে ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক বাংলাদেশের কূটনৈতিক শীতলতার প্রভাব পড়েনি বাজেট বরাদ্দে। শেষ আর্থিক বছরের মতোই ১২০ কোটি রুপিতে অপরিবর্তিত রয়েছে বাংলাদেশের উন্নয়ন সহায়তার বরাদ্দ। বাংলাদেশের সঙ্গে নেপাল শ্রীলংকা, মালদ্বীপের আর্থিক বরাদ্দও অপরিবর্তিত রেখেছে ভারত। আর্থিক বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে মরিস মরিশাস, সেশেলস ও গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত মিয়ানমারের। 

বাজেটে আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য বরাদ্দ ২০০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ২২৫ কোটি করা হয়েছে। লাতিন আমেরিকার বরাদ্দ ৯০ কোটি থেকে কমে হয়েছে ৬০ কোটি। ইরানের চবাহার পোর্টের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরে রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে যে অনুদান দেওয়া হয়, সেই বরাদ্দ ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ কোটি টাকা করেছে কেন্দ্র।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব জ ট প শ কর র জন য ব গত বছর আর থ ক বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

মহান মে দিবস: শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সংস্কারে জোর সরকারের

শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দিয়ে মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্কের বন্ধনে নতুন করে দেশ গড়ার প্রত্যয়ের মধ্যে এলো মহান মে দিবস; আজ ১ মে বিশ্ব শ্রমিক দিবস।  

পুরো বিশ্বের সঙ্গে আজ বাংলাদেশে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় জাতীয়, রাজনৈতিক ও সংগঠনিক বিভিন্ন পক্ষ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।

মহান মে দিবসে এবার বাংলাদেশের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।

আরো পড়ুন:

অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করতে হবে

পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা স্থায়ী চাকরির নিশ্চয়তা ও সম্মান পাক

সভ্যতা নির্মাণের কারিগর শ্রমিকদের সম্মানে এবং ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলনে আত্মহুতি দেওয়া শ্রমিকদের শ্রদ্ধাচিত্তে স্মরণে দিবসটিতে বিশ্বের ৮০টির বেশি দেশে জাতীয় ছুটি থাকে। বাংলাদেশেও আজ জাতীয় ছুটি। অনেক দেশে বেসরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হয়।

১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের মর্যাদা, শ্রমের মূল্য এবং দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নেমে শ্রমিকেরা আত্মাহুতি দেন। দিনটির ঘটনা ইতিহাসে আজো অম্লান। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয় দিবসটি। 

মহান মে দিবসের সবচেয়ে বড় অর্জন শ্রমশোষণ কমিয়ে আনার পথ সুগম করা। তবে শ্রমদাসত্ব বিলোপ হয়নি। আধুনিক শ্রমদাসত্বের শেকলে নতুন কায়দায় বন্দি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ উপযুক্ত শ্রমের বিনিময়ে ন্যায্য অধিকার চায়; যেখানে নিয়োগকারী ও শ্রমিক চোখে চোখ রেখে কথা বলবে, যে যার পাওনা ও অধিকার বুঝে নেবে।

বাংলাদেশে শ্রম ব্যবস্থা এখনো সেকেলে শোষণের ধারণায় পুষ্ট, যা থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে। 

অন্তর্বর্তী সরকার শ্রমিকের অধিকার রক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের লক্ষ্যে গঠন করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। এরই মধ্যে কমিশন তাদের সুপারিশমালা সরকারকে দিয়েছে; এখন চলছে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ। সরকার, রাজনৈতিক দল, নিয়োগকারী, শ্রমিক ও বিশেষজ্ঞ- সব অংশীজন মিলেই কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশে কী কী পরিবর্তন আসছে, জানতে চাইলে বুধবার (৩০ এপ্রিল) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ব‌লে‌ন, “শ্রম আইনে অনেক পরিবর্তন আসছে।”

“এখনো পাকাপোক্ত হয়নি, তবে অনেক পরিবর্তন আসছে। আমাদের আলোচনা হয়েছে। যেসব প্রস্তাব আমরা দিয়েছি, যেগুলো আমরা একসেপ্ট করেছি, সেগুলো আইএলও-কে (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) বলা হয়েছে। সেগুলো ফাইনালাইজ করতে হবে। আরো অনেক কিছু আছে,” বলেন তিনি।

কবে নাগাদ শ্রমিকরা নতুন আইনের বিষয়ে ‘সুখবর’ পাবেন, তার কোনো দিনক্ষণ না জানালেও সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, “যত দ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত করা হবে।”

অবশ্য কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রচলিত শ্রমিকদের পাশাপাশি অপ্রচলিত খাতের শ্রমিকদেরও স্বার্থ রক্ষার উপায় বাতলে দেওয়া হয়েছে।

তৈরি পোশাকখাতসহ সব শিল্পখাতের শ্রমিকদের বিষয়ে কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, শ্রম আইনে শিল্পের উদ্যোক্তাদের ‘মালিক’ এর বদলে ‘নিয়োগ কর্তা’ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। কোনো শ্রমিককে এক দিনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলেও চুক্তিপত্র বা পরিচয়পত্র থাকতে হবে।

সব খাতের শ্রমিকদের পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে শ্রম আইন ‘সর্বজনীন’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সারা দেশের শ্রমিকদের নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডার গঠনের কথা বলেছে কমিশন।

সুপারিশমালা বলা হয়েছে, সেবা খাতে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে স্ব-উদ্যোগে নিয়োজিতরা তথ্য ভাণ্ডারের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করার সুযোগ পাবেন এবং এই নিবন্ধনই শ্রমিক হিসেবে তার পরিচয়পত্র হবে। 

মৎস্যজীবী, রিকশাওয়ালা, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক ও হকারের মতো স্বাধীন শ্রমজীবীদেরও  একইভাবে নিবন্ধন করে পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব বলে কমিশন মত দিয়েছে। 

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শ্রম শাখার এক স্মারকে শ্রমিককে চাকরিচ্যুতি, ছাঁটাই এবং মহান মে দিবসে কারখানা বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে, গত ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আরএমজি-বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (আরএমজি বিষয়ক টিসিসি) ২০তম সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে, যৌক্তিক কারণ এবং শ্রম আইনের প্রতিপালন ব্যতীত শ্রমিক চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে শ্রমিককে চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করার পূর্বে স্থানীয় প্রশাসন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, শিল্পাঞ্চল পুলিশ এবং বিজিএমইএর ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। শ্রম আইন মেনে শ্রমিককে চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করা না হলে, মালিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

সিদ্ধান্তের মধ্যে আরো রয়েছে, মহান মে দিবসে সকল কারখানা বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। কোনো কারখানা কর্তৃপক্ষ মে দিবসে কারখানা খোলা রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশে মহান মে দিবসে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য সেফটি দিবস’ পালন করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি করবে, যেটি উদ্বোধন করবেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে হবে এই র‌্যালি।

মে দিবসে ঢাকার নয়া পল্টনে দুপুর ২টায় শ্রমিক সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কথা বললেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত থাকবেন। 

ঢাকা মহানগরের বাইরে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ আশপাশের জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মে দিসবের শ্রমিক সমাবেশে যোগ দেবেন বলে বিএনপি থেকে জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে পুরানা পল্টন মোড়ে শ্রমিক সমাবেশের করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সেখানে কথা বললেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তার সঙ্গে থাকবেন নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। বড় পরিসরে এই সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত।
 
মেহনতি মানুষের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা: প্রধান উপদেষ্টা
মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে বিশেষ বাণী দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। 

বাণীতে তিনি বলেছেন, বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে দেশব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘মহান মে দিবস-২০২৫’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রম, ন্যায্য মজুরি ও শ্রমের মর্যাদা আদায়ের লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের ‘হে’ মার্কেটে শ্রমিকদের রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শ্রমিক ও শ্রমের মর্যাদা সম্মানের সঙ্গে বিশ্বময় স্বীকৃতি লাভ করে। এ দিবসে আদায় হয়েছে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার। 

“সে প্রেক্ষাপটে এটি শুধু একটি সাধারণ দিবস নয়, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের অনুপ্রেরণার উৎস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার ঐতিহাসিক এ দিনে যাদের আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে শ্রমিক অধিকার স্বীকৃতি পেয়েছে, তাদেরসহ দেশের সকল মেহনতি মানুষের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।”

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে মে দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বছর মে দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’, আমাদের দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।”

“শ্রমিক ও মালিক পরস্পরের পরিপূরক, আর তাদের যৌথ প্রচেষ্টাই একটি শক্তিশালী, আত্মনির্ভর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের পোশাক খাত, কৃষি, শিল্প, নির্মাণ, পরিবহণ, প্রযুক্তি - প্রতিটি খাতের উন্নতির পেছনে রয়েছে শ্রমিক এবং মালিকের মেধা ও প্রাণান্তকর পরিশ্রম,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

 এ দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে ঐক্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং আস্থার পরিবেশ সুদৃঢ় করার আহ্বান রেখে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা যদি ঐক্য ও সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখি, তাহলে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন শুধু স্বপ্ন নয়, বাস্তব হয়ে উঠবে।”

তিনি বলেন, “এ বছর মহান মে দিবসের পাশাপাশি একইসঙ্গে আমরা ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫’ পালন করছি। শ্রমিকের ন্যায্য স্বীকৃতি ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা শুধু শ্রমিকদের অধিকারই নয়, এটি শিল্প ও অর্থনীতির উন্নয়নের অন্যতম শর্ত।”

বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, “একইসঙ্গে শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন ও কল্যাণ পুরো শিল্পখাত এবং দেশের অর্থনীতিতে প্রতিফলিত হয়। বাংলাদেশের উন্নয়ন-যাত্রায় শ্রমিক ও মালিকের অংশীদারিত্বে দেশের অগ্রগতি আরো ত্বরান্বিত হবে মর্মে আমার বিশ্বাস। আমি ‘মহান মে দিবস-২০২৫’ এবং ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।”

ঢাকা/এএএম/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১ মে ২০২৫)
  • বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৪ শতাংশ
  • মহান মে দিবস: শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় সংস্কারে জোর সরকারের
  • চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে বিদেশি ঋণ শোধ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াল
  • তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে স্কয়ার ফার্মার
  • ৯ মাসে ১৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা
  • শিক্ষার মানোন্নয়নে জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন
  • ২০২৭ সালের জুনের পর ‘করছাড়’ থাকবে না
  • ৯ মাসে ৪,৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা ওয়ালটনের
  • যমুনা অয়েলের মুনাফা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ