বাংলাদেশ সফর করবে নেদারল্যান্ডসের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল
Published: 2nd, February 2025 GMT
নেদারল্যান্ডসের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল আগামী ১০ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফর করবে। এই সফরের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের পোশাক ও টেক্সটাইল খাতের সাথে ব্যবসায়িক সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা।
প্রতিনিধিদলে থাকবে নেদারল্যান্ডস সার্কুলার টেক্সটাইল ট্রেড মিশনে ১৮টি ডাচ কোম্পানিসহ নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, পোশাক ব্র্যান্ড, বিনিয়োগকারী এবং সার্কুলার ফ্যাশন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা।
নেদারল্যান্ডস সার্কুলার টেক্সটাইল প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে আয়োজিত এটি বাংলাদেশে প্রথম বাণিজ্য মিশন। বাংলাদেশি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে এই বাণিজ্য মিশন প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, এই বাণিজ্যিক সফরের আয়োজক বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাস এবং নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি (আরভিও)। তাছাড়া সহযোগী হিসাবে রয়েছে এক্সপোর্ট পার্টনার, ক্লিন অ্যান্ড ইউনিক, বিজিএমইএ এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই)।
বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন বলেন, ‘‘বিশ্বব্যাপী পোশাক বাজারে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে স্বীকৃত। টেক্সটাইল খাতটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বিকশিত হয়েছে। সার্কুলারিটিতে বিনিয়োগ এবং সবুজ কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্প টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নেদারল্যান্ডস মনে করে, বাংলাদেশে এই খাতের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে এবং সেজন্য সার্কুলার টেক্সটাইল প্রোগ্রাম চালু করেছে। বাংলাদেশের পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রযুক্তিগত ব্যবধান কমাতে এবং শক্তিশালী ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে এই বাণিজ্য মিশন একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘এই প্রোগ্রামের লক্ষ্য হলো ব্যবসায়িক সহযোগিতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, উদ্ভাবনী অনুশীলনের পাইলট করা এবং আন্তঃসীমান্ত সংলাপের মাধ্যমে টেক্সটাইল ভ্যালু চেইনে সার্কুলার অনুশীলনগুলোকে প্রতিষ্ঠায় সক্ষমতা তৈরি করা। যাতে টেক্সটাইল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি হয়। রিসাইক্লিং, ট্রেসেবিলিটি প্রযুক্তি এবং সার্কুলার ডিজাইনে ডাচ উদ্ভাবনগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রয়োগ করা যেতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের রয়েছে বৃহৎ আকারে উৎপাদন সক্ষমতা এবং স্থানীয় রিসাইক্লিং মডেলসমূহ, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
সফরকালে প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) দ্বারা আয়োজিত ৬ষ্ঠ সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম (এসএএফ) ২০২৫-এ অংশগ্রহণ করবে। সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম আয়োজনের লক্ষ্য বাংলাদেশকে দায়িত্বশীল সোর্সিংয়ে নেতৃস্থানীয় হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় উদ্ভাবনকে উৎসাহিত ও প্রসারিত করা।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্য নিয়ে প্রতিনিধিদলটি বিজিএমইএ এবং সাভার, গাজীপুর এলাকায় অবস্থিত পোশাক ও টেক্সটাইল কারখানাসমূহ পরিদর্শন করবে।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য সহয গ
এছাড়াও পড়ুন:
স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।
মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।
ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।
স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।
শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’
তার জন্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”
"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।
প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"
ঢাকা/ইয়াসিন