তিনদিনের রিমান্ড শেষে সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাহিদ হাসান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইয়াছিনুল হক দুলাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নুরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

আরো পড়ুন:

মিথুনসহ ২ জন রিমান্ডে, ৫ জন কারাগারে

যুবদল কর্মী শাওন হত্যা মামলায় এসআই কনক রিমান্ডে

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে নুরুল ইসলাম সুজনকে আদালতে এনে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ইজিবাইক চালক আল আমিন হত্যা ও গুম মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়া। আদালত সেসময় তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

নরুল ইসলাম সুজনকে রিমান্ডের জন্য পঞ্চগড় সদর থানায় নিয়ে আসা হয় গত শনিবার বিকেলে। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত চলে রিমান্ড। দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে সদর থানা পুলিশ। 

রিমান্ড শুনানিতে সরকার পক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইয়াছিনুল হক দুলাল, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল মামুন, মেহেদী হাসান মিলনসহ ৪-৫ জন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মির্জা সারোয়ার হোসেন, আলী আসমান বিপুল।

আজ আদালতে হাজির করা হলে নুরুল ইসলাম সুজনের কাছে তার শারীরিক অবস্থা জানতে চান বিচারক। এসময় তিনি বলেন, “আমি সুস্থ আছি। আমার কোনো সমস্যা হয়নি এবং হচ্ছে না। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।” 

তিনি বলেন, “আমি যেই লেভেলে আছি, যেই লেভেলে আমার অবস্থান, সেই লেভেলে আমি কোনো ষড়যন্ত্র করলে সেটা হতে পারে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের সঙ্গে। একজন ইজিবাইক চালক তার সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। শুধু রাজনৈতিক কারণে আমাকে এই মামলায় আনা হয়েছে। আমার সঙ্গে এই মামলায় পঞ্চগড়ের সাবেক দুই সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অনেককে আসামি করা হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা সবাই ষড়যন্ত্রের শিকার। শুধু আমি না, আমাদের বিরুদ্ধে এইভাবে সারা দেশে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা হচ্ছে। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। যেহেতু আমি এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নই, আদালত যেন আমার জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করেন।”

আসামি পক্ষের আইনজীবি মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা আজকে আদালতে নুরুল ইসলাম ‍সুজনের জামিনের আবেদন করিনি। জামিনের আবেদন মঙ্গলবার আদালতে দেওয়া হবে। সুজন সাহেব সুস্থ আছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। আমরাও দেখেছি তিনি সুস্থ আছেন।”

রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইয়াছিনুল হক দুলাল বলেন, “আসামিকে রিমান্ডের আগে ও পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার এখন ন্যায় বিচারের উদাহারণ। পুলিশ যাতে আসামিকে টর্চার (নির্যাতন) করতে না পারে বা টর্চার করে কোনো ধরনের উৎকোচ গ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়টি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদাহারণ। আজকে যেহেতু আসামি পক্ষ জামিনের আবেদন করেননি, সেহেতু আমরা কোনো বিরোধিতা করিনি। আদালত তাকে (নুরুল ইসলাম সুজন) জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।”

পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে গুম হন আল আমিন। এ ঘটনায় আল আমিনের বাবা মনু মিয়া গত ১০ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল হক সুজনসহ ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা করেন। এ মামলায় আরো ১৫০ জনকে নাম না জানা আসামি করা হয়।

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ন র ল ইসল ম স জন ষড়যন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।

প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।

এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।

পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।

একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
  • আসামে বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র মামলায় পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক ষড়যন্ত্রকারীদের কফিনে শেষ পেরেক: প্রেস সচিব
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর