রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন
Published: 3rd, February 2025 GMT
তিনদিনের রিমান্ড শেষে সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাহিদ হাসান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইয়াছিনুল হক দুলাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নুরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
আরো পড়ুন:
মিথুনসহ ২ জন রিমান্ডে, ৫ জন কারাগারে
যুবদল কর্মী শাওন হত্যা মামলায় এসআই কনক রিমান্ডে
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে নুরুল ইসলাম সুজনকে আদালতে এনে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ইজিবাইক চালক আল আমিন হত্যা ও গুম মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক মিয়া। আদালত সেসময় তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নরুল ইসলাম সুজনকে রিমান্ডের জন্য পঞ্চগড় সদর থানায় নিয়ে আসা হয় গত শনিবার বিকেলে। আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত চলে রিমান্ড। দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে সদর থানা পুলিশ।
রিমান্ড শুনানিতে সরকার পক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইয়াছিনুল হক দুলাল, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল মামুন, মেহেদী হাসান মিলনসহ ৪-৫ জন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মির্জা সারোয়ার হোসেন, আলী আসমান বিপুল।
আজ আদালতে হাজির করা হলে নুরুল ইসলাম সুজনের কাছে তার শারীরিক অবস্থা জানতে চান বিচারক। এসময় তিনি বলেন, “আমি সুস্থ আছি। আমার কোনো সমস্যা হয়নি এবং হচ্ছে না। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। এ ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।”
তিনি বলেন, “আমি যেই লেভেলে আছি, যেই লেভেলে আমার অবস্থান, সেই লেভেলে আমি কোনো ষড়যন্ত্র করলে সেটা হতে পারে ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের সঙ্গে। একজন ইজিবাইক চালক তার সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। শুধু রাজনৈতিক কারণে আমাকে এই মামলায় আনা হয়েছে। আমার সঙ্গে এই মামলায় পঞ্চগড়ের সাবেক দুই সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অনেককে আসামি করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা সবাই ষড়যন্ত্রের শিকার। শুধু আমি না, আমাদের বিরুদ্ধে এইভাবে সারা দেশে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা হচ্ছে। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। যেহেতু আমি এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নই, আদালত যেন আমার জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করেন।”
আসামি পক্ষের আইনজীবি মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা আজকে আদালতে নুরুল ইসলাম সুজনের জামিনের আবেদন করিনি। জামিনের আবেদন মঙ্গলবার আদালতে দেওয়া হবে। সুজন সাহেব সুস্থ আছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। আমরাও দেখেছি তিনি সুস্থ আছেন।”
রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইয়াছিনুল হক দুলাল বলেন, “আসামিকে রিমান্ডের আগে ও পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার এখন ন্যায় বিচারের উদাহারণ। পুলিশ যাতে আসামিকে টর্চার (নির্যাতন) করতে না পারে বা টর্চার করে কোনো ধরনের উৎকোচ গ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়টি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদাহারণ। আজকে যেহেতু আসামি পক্ষ জামিনের আবেদন করেননি, সেহেতু আমরা কোনো বিরোধিতা করিনি। আদালত তাকে (নুরুল ইসলাম সুজন) জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।”
পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট দুপুরে গুম হন আল আমিন। এ ঘটনায় আল আমিনের বাবা মনু মিয়া গত ১০ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল হক সুজনসহ ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা করেন। এ মামলায় আরো ১৫০ জনকে নাম না জানা আসামি করা হয়।
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ন র ল ইসল ম স জন ষড়যন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে।
এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস