বাংলাদেশ থেকে কুয়েতকে আরো বেশি জনশক্তি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে তার অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত কুয়েতের রাষ্ট্রদূত এ কিউ হামাদাহ সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা বলেন,“ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও কুয়েতের গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। কুয়েতে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি জনশক্তি নেওয়ার জন্য কুয়েত সরকারকে আহ্বান জানাই।”

তিনি বলেন, “কুয়েত বাংলাদেশ থেকে আরো নারী গৃহকর্মী নিতে আগ্রহী। আমি তাদেরকে নারীর পাশাপাশি পুরুষ কর্মী নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।”

বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “কুয়েত মুসলিম ও এশিয়ান মিত্র হিসেবে সবসময় বাংলাদেশের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। বাংলাদেশও ইরাক-কুয়েত যুদ্ধ পরবর্তী পুনর্বাসন ও মাইন অপসারণে কুয়েতকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। স্থলমাইন অপসারণে ২৭০ জন বাংলাদেশি সৈন্য নিহত ও ৫৬ জন আহত হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে জনশক্তি আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কোনো চুক্তি নেই। এ ধরনের চুক্তি দ্রুত করা দরকার।”

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে জনশক্তি রপ্তানি, মিলিটারি ও নিরাপত্তা ইস্যু, রোহিঙ্গাদের সহায়তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পারস্পরিক সহযোগিতা-সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, কুয়েত বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম অংশীদার। রোহিঙ্গা ইস্যু-সহ বিভিন্ন সেক্টরে কুয়েত সহযোগিতা করে আসছে।

তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউএস-এইড এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা বন্ধ করে দেয়, সেক্ষেত্রে যেন কুয়েত রোহিঙ্গাদের উন্নয়ন ও পুনর্বাসনে আরো বেশি মাত্রায় সহযোগিতা করে।” 

রাষ্ট্রদূত বলেন, “২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ইস্যুকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে কুয়েত সহায়তা করেছিলো। ভবিষ্যতেও তাদের এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”

বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। ক্রমান্বয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো ভালো হচ্ছে।”

রাষ্ট্রদূত এ সময় কুয়েত দূতাবাসসহ বারিধারা ডিপ্লোমেটিক এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধান করায় উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগ) খন্দকার মাহবুবুর রহমান ও যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক-১ অধিশাখা) মু.

জসীম উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সহয গ ত উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

তানজানিয়ায় ‘সহিংস’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী সামিয়া

আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় ব্যাপক সংঘাতপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেকে জয়ী ঘোষণা করেছেন ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপ্রধান সামিয়া সুলুহু হাসান। তিনি প্রায় ৯৮ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছেন।

তবে এ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রেসিডেন্ট সামিয়া তাঁর শীর্ষস্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্বাচনী লড়াই থেকে বাইরে রেখেছিলেন। নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় ব্যাপক হতাহতের অভিযোগও তুলেছেন বিরোধীরা।

গত বুধবার তানজানিয়ায় ভোট গ্রহণ হয়। স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে। ফলাফলে দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সামিয়া ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আজ শনিবার সামিয়ার শপথ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচনের পরবর্তী দিনগুলোয় তানজানিয়ায় ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বড় বড় শহরগুলোয় রাস্তায় বিক্ষোভ হয়। সামিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্বাচনে প্রার্থী হতে না দেওয়া এবং ব্যাপক দমন-পীড়নের অভিযোগে রাজপথে নামে মানুষ।

দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা সত্ত্বেও ভোটের দিন ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা। বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার আর ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে, আগুন দেয় সরকারি ভবনে। অন্যদিকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রধান বিরোধী দল চাদেমাকেও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। গতকাল শুক্রবার দলটির পক্ষ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানানো হয়, নির্বাচনী সহিংসতায় প্রায় ৭০০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের দাবি, হাসপাতাল আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো থেকে পাওয়া তথ্য থেকে এ সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর বলছে, নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী তানজানিয়ার অন্তত তিনটি শহরে ঘটা নির্বাচনী সহিংসতায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ সাবিত কম্বো শুক্রবার আল–জাজিরাকে বলেন, কর্তৃপক্ষ যথাযভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে।

মাহমুদ সাবিত আরও দাবি করেন, বিক্ষোভ দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা হয়নি। সরকারের কাছে কোনো বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর তথ্য নেই। বিরোধীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এ ৭০০ জনের কথা কোথাও দেখিনি।’

তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির আকস্মিক মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তাঁর দল থেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন সামিয়া।

আরও পড়ুননামিবিয়ায় প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন নান্দি নাদাইতওয়া০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনায় বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল, ভোলা সদরে কার্যক্রম স্থগিত
  • মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা ভিন্ন
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
  • ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা
  • ১০০ কোটির সম্পদ, স্বামীর প্রতারণা, ৪৭ বছর বয়সেই মারা যান এই নায়িকা
  • তানজানিয়ায় ‘সহিংস’ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী সামিয়া
  • গণভোট নিয়ে উত্তাপ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: প্রেস সচিব
  • অজ্ঞাতনামা লাশ আর কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে, শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় জনমনে সন্দেহ: এমএসএফ
  • কথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল