আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে আয়কর–সম্পর্কিত বিভিন্ন আইন ও বিধি সংশোধন, সংযোজন বা পরিবর্তনের জন্য দেশের বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রস্তাব ও সুপারিশ আহ্বান করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের কাছে গত সোমবার পাঠিয়ে তাদের প্রস্তাব ও সুপারিশ চেয়েছে এনবিআর। সংস্থাটি জানায়, রাজস্ব আহরণের অভ্যন্তরীণ উৎস হিসেবে আয়করসহ অন্যান্য প্রত্যক্ষ কর জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। প্রত্যক্ষ করব্যবস্থাকে আরও যুগোপযোগী ও অংশীদারত্বমূলক করার লক্ষ্যে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, রাজস্ব আদায় কার্যক্রমে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের প্রচেষ্টাকে এনবিআর অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। এ জন্য ব্যবসায়ীদের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে আয়করসহ অন্যান্য প্রত্যক্ষ করসংক্রান্ত আইন ও বিধির ওপর সুচিন্তিত মতামত, প্রস্তাব ও সুপারিশ আহ্বান করা হয়েছে।

বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতি, চেম্বার ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো চিঠিতে মোট চারটি বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মতামত চেয়েছে এনবিআর। বিষয়গুলো হচ্ছে ২০২৩ সালের আয়কর আইন; ২০২৪ সালের উৎসে কর বিধিমালা ও অন্যান্য বিধিমালা; ২০০৩ সালের ভ্রমণ কর আইন এবং ১৯৯০ সালের দান কর আইন।

এসব বিষয়ে প্রস্তাব ও সুপারিশ করার জন্য চিঠিতে ছক তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এনবিআরের করনীতি শাখার কাছে (হার্ড কপি) সুপারিশ ও প্রস্তাব পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া সরাসরি ই–মেইলের মাধ্যমেও প্রস্তাব–সুপারিশ পাঠানো যাবে।

উল্লেখ্য, চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে শুল্ক–করে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত পূরণের জন্য। এর মাধ্যমে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, যা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় দ র

এছাড়াও পড়ুন:

চেয়ারম্যানের দপ্তরে বুধবারও অবস্থান করবেন কর্মকর্তারা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআরে) ভেঙে দুই ভাগ করা নিয়ে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারদের মধ্যে। রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা আলাদা করা সংক্রান্ত অধ্যাদেশের চূড়ান্ত খসড়ায় তাদের দেওয়া মতামত না রাখায় এই উত্তেজনা দেখা দেয়। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার বিভিন্ন কার্যালয় থেকে এই দুই ক্যাডারের শতাধিক কর্মকর্তা এনবিআর ভবনে এসে অবস্থান নেন সংস্থার চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের দপ্তরের সামনে। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার বিকেলেও তারা অবস্থান নেবেন। 

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের থেকে’ রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব নিয়োগ হবে- এমন প্রস্তাব দিয়েছেন বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন ও বিসিএস (কর) অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। কিন্তু অধ্যাদেশের খসড়ায় তাদের সেই মতামত রাখা হয়নি। চূড়ান্ত খসড়ায় ‘উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন যে কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে’ রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব বা সিনিয়র সচিব নিযুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে। এতে মাঠ কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে। অধ্যাদেশ জারির আগেই তা সংশোধন করার দাবি তুলছেন তারা। 

বর্তমানে রাজস্ব আহরণ ও নীতি প্রণয়নসহ রাজস্বসংক্রান্ত বেশির ভাগ দায়িত্বে রয়েছেন এ দুই ক্যাডারের কর্মকর্তারা। দুই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দাবি, অধ্যাদেশ জারি হলে রাজস্ব আহরণ, নীতি ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতা না থাকা বা কম অভিজ্ঞদের কাছে রাজস্ব নীতি বিভাগ চলে যাবে। এতে অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা বঞ্চিত হবেন। 

সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে বিসিএস অ্যাসোসিয়েশন বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। অন্যদিকে আয়কর ক্যাডারদের অ্যাসোসিয়েশন আগামী শনিবার বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আহ্বান করেছে। এরই মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান আইএমএফের প্রোগ্রাম শেষ করে আমেরিকা থেকে দেশে এসে অধ্যাদেশের খসড়ার ভেটিং সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন- এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে চেয়ারম্যান এনবিআরে পৌঁছালে ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে তার দপ্তরের সামনে জড়ো হন আয়কর ও শুল্ক বিভাগের ক্যাডাররা। তারা এক ঘণ্টার বেশি ধরে সেখানে অবস্থান করেন। পরে এনবিআর চেয়ারম্যান দুই ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনকে নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বুধবার বিকেল ৩টায় এনবিআর ভবনে এই বৈঠক হওয়া কথা রয়েছে। বৈঠক ঘিরে ঢাকা ও এর আশপাশ থেকে এই দুই বিভাগের কর্মকর্তারা এনবিআরে জড়ো হবেন। 

বৈঠকের বিষয়ে এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল-আমিন শেখ সমকালকে বলেন, কর্মকর্তাদের আপত্তির বিষয়ে চেয়ারম্যান স্যার তাদের সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেখানে আয়কর ও শুল্ক দুই ক্যাডারের সংগঠনের নেতারাও ছিলেন। এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে-এমন কথাবার্তা হয়েছে। 

এ বিষয়ে বিসিএস কর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, একটি স্বাধীন ও সক্ষম রাজস্ব বোর্ড তৈরি হোক এটা কর্মকর্তাদের চাওয়া। কিন্তু অভিজ্ঞদের দিয়ে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালিত না হলে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে অনীহা তৈরি হতে পারে। একটি সুসংগঠিত এনবিআর গড়ার লক্ষ্যও ব্যাহত হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৪ শতাংশ
  • সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক
  • তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে স্কয়ার ফার্মার
  • পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর হার ০.৫০% করার প্রস্তাব এফবিসিসিআইয়ের
  • ৩ বিমা কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা
  • ৪ ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণা
  • প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে ইউনিলিভার কনজ্যুমারের
  • চেয়ারম্যানের দপ্তরে বুধবারও অবস্থান করবেন কর্মকর্তারা
  • ২০২৭ সালের জুনের পর ‘করছাড়’ থাকবে না
  • ৯ মাসে ওয়ালটনের মুনাফা হয়েছে ৬৯৬.৪৪ কোটি টাকা