Prothomalo:
2025-03-27@21:24:56 GMT

১১ বছর পর মামলা চলার পথ খুলল

Published: 6th, February 2025 GMT

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক দশকের বেশি সময় আগে নির্যাতনে শাহনূর আলমের মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে র‍্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে করা মামলা চলার পথ খুলেছে। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায়রা জজ আদালতের দেওয়া আদেশ বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

নিহতের ভাইয়ের করা এক আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো.

সগীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায়রা জজ আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে নিহত শাহনূর আলমের ভাই মেহেদী হাসান ২০১৪ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ১৫ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আশরাফ রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল করিম।

রায়ের পর আশরাফ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৪ সালের ৪ জুন এক আদেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদীর দাখিল করা নালিশি অভিযোগ এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করে সিআইডিকে মামলা তদন্ত করতে আদেশ দেন। তবে অভিযোগ ওঠা এক র‍্যাব সদস্যের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই আদেশ সংশোধন করে ২০১৪ সালের ৮ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায়রা জজ আদালত আদেশ দেন। এতে তদন্তের পর আইনি ব্যবস্থা নিতে নবীনগর থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই আদেশের ফলে নালিশি অভিযোগ এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করে মামলা তদন্ত করতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দেওয়া আদেশের কার্যক্রম থমকে যায়। দায়রা জজ আদালতের আদেশ বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে নির্যাতনে শাহনূর আলমের মৃত্যুর অভিযোগ এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং ৯ র‍্যাব সদস্যসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা চলবে। হাইকোর্টের রায়ের ফলে ঘটনার ১১ বছর পর মামলাটি চলার পথ খুলেছে।’

ঘটনার পূর্বাপর

র‌্যাব-১৪-এর তৎকালীন কোম্পানি কমান্ডারকে প্রধান আসামি করে চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও সাত র‍্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশি দরখাস্ত দেন নিহতের ভাই মেহেদী হাসান।

মেহেদী হাসানের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৪ সালের গত ২৯ এপ্রিল সাদা পোশাক পরিহিত তিন ব্যক্তি বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর অজ্ঞাতনামা আরও ছয় ব্যক্তি সাদা পোশাকে ঘরে প্রবেশ করে। নয়জনই ব্যাগ থেকে র‍্যাবের পোশাক ও অস্ত্র বের করে পোশাক পড়ে শাহনুর আলমকে অস্ত্রের মুখে গ্রেপ্তার করে তাঁর চোখ ও মুখ বেঁধে নিয়ে যায়। শাহনুরকে ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্প–১৪ এর অফিসে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পের তৎকালীন অধিনায়ক মেজর এ জেড এম শাকিব সিদ্দিক পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। একপর্যায়ে শাহনূর অচেতন হয়ে পড়েন। পরদিন তাঁকে নবীনগর থানায় আনা হয়। আবু তাহেরকে (৩নং আসামি) থানায় ডেকে এনে তাঁকে এজহারকারী করে শাহনূরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। এ মামলায় শাহনূরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২০১৪ সালের ১ মে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ২০১৪ সালের ৪ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ২০১৪ সালের ৬ মে তিনি মারা যান।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, মেহেদী হাসানের দাখিল করা নালিশি আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৪ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নালিশি দরখাস্তটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড (লিপিবদ্ধ) করার জন্য নবীনগর থাকার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে মামলার তদন্তভার সিআইডির ওপর অর্পণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এই আদেশের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন অভিযোগ ওঠা একজন র‍্যাব সদস্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দেওয়া আদেশ সংশোধন করে ২০১৪ সালের ৮ জুন আদেশ দেন দায়রা আদালত। এতে অভিযোগ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে নবীনগর থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া দায়রা জজ আদালতের আদেশ বাতিল চেয়ে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন নিহতের ভাই মেহেদী হাসান। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ১৫ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ সংশোধন করে দায়রা জজ আদালতের ২০১৪ সালের ৮ জুন দেওয়া আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুল যথাযথ ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড ২০১৪ স ল র য ব সদস য তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিনল্যান্ড দখলের পরিকল্পনা গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: পুতিন

গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার পরিকল্পনা দেশটি গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে বলে মনে করছে রাশিয়া। মস্কোর আশঙ্কা, ভবিষ্যতে বিভিন্ন সংঘাতের সময় আর্কটিক অঞ্চলকে পশ্চিমারা ব্যবহার করতে পারে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসব কথা বলেছেন।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর ডেনমার্কের স্বশাসিত দ্বীপটির দখল নিতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ভাষ্য, ‘আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার’ জন্য এই দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া প্রয়োজন ওয়াশিংটনের।

রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর মুরমানস্কে আর্কটিক ফোরামে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘(গ্রিনল্যান্ড দখলের বিষয়ে) আমেরিকার নতুন প্রশাসনের বক্তব্যকে ফাঁকা বুলি মনে করা হবে বড় ধরনের ভুল। এটা ওই ধরনের কথা নয়।’

পুতিন আরও বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ডের বিষয়ে আমেরিকার গুরুত্বসহকারে নেওয়া পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কথা বলছি। এসব পরিকল্পনার দীর্ঘ দিনের ঐতিহাসিক যোগসূত্রতা রয়েছে।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, যদিও গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা প্রশ্নে রাশিয়া সরাসরি সম্পৃক্ত নয়, মস্কোর উদ্বেগের বিষয় হলো ন্যাটো জোটের দেশগুলো সম্ভাব্য সংঘাতের ক্ষেত্রে পৃথিবীর একেবারে উত্তরের অংশকে ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে ক্রমশ এগোচ্ছে।

ডেনমার্কের কাছ থেকে স্বাধীনতা চাইছে গ্রিনল্যান্ড। স্বশাসিত দ্বীপটিতে আগে থেকেই মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অব্যাহত হুমকির মধ্যেই শুক্রবার দেশটি সফর করার কথা ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের। তাঁর এই সফরের সমালোচনা করে আসছেন গ্রিনল্যান্ডের নেতারা।

আরও পড়ুনগ্রিনল্যান্ড দখলে নিতে ট্রাম্প কেন এত মরিয়া২৫ মার্চ ২০২৫

উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের মাঝামাঝি কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে গ্রিনল্যান্ড। আর্কটিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া নিজেদের স্বার্থ নিয়ে তৎপর হচ্ছে, যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সেখানকার সমুদ্রপথগুলোও উন্মুক্ত হচ্ছে।

গ্রিনল্যান্ড দখল নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য নাকচ করে দিয়েছে ডেনমার্ক। দেশটি বলেছে, গ্রিনল্যান্ডের মানুষ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান না।

আরও পড়ুনট্রাম্প প্রথম নন, ৭৯ বছর আগেও গ্রিনল্যান্ড কিনতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র২৭ জানুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ