Prothomalo:
2025-05-01@07:06:24 GMT

১১ বছর পর মামলা চলার পথ খুলল

Published: 6th, February 2025 GMT

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক দশকের বেশি সময় আগে নির্যাতনে শাহনূর আলমের মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে র‍্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে করা মামলা চলার পথ খুলেছে। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায়রা জজ আদালতের দেওয়া আদেশ বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

নিহতের ভাইয়ের করা এক আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো.

সগীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায়রা জজ আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে নিহত শাহনূর আলমের ভাই মেহেদী হাসান ২০১৪ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ১৫ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে রায় দেওয়া হয়। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আশরাফ রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল করিম।

রায়ের পর আশরাফ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৪ সালের ৪ জুন এক আদেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদীর দাখিল করা নালিশি অভিযোগ এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করে সিআইডিকে মামলা তদন্ত করতে আদেশ দেন। তবে অভিযোগ ওঠা এক র‍্যাব সদস্যের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই আদেশ সংশোধন করে ২০১৪ সালের ৮ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায়রা জজ আদালত আদেশ দেন। এতে তদন্তের পর আইনি ব্যবস্থা নিতে নবীনগর থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই আদেশের ফলে নালিশি অভিযোগ এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করে মামলা তদন্ত করতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দেওয়া আদেশের কার্যক্রম থমকে যায়। দায়রা জজ আদালতের আদেশ বাতিল করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে নির্যাতনে শাহনূর আলমের মৃত্যুর অভিযোগ এজাহার হিসেবে লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং ৯ র‍্যাব সদস্যসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা চলবে। হাইকোর্টের রায়ের ফলে ঘটনার ১১ বছর পর মামলাটি চলার পথ খুলেছে।’

ঘটনার পূর্বাপর

র‌্যাব-১৪-এর তৎকালীন কোম্পানি কমান্ডারকে প্রধান আসামি করে চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও সাত র‍্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশি দরখাস্ত দেন নিহতের ভাই মেহেদী হাসান।

মেহেদী হাসানের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৪ সালের গত ২৯ এপ্রিল সাদা পোশাক পরিহিত তিন ব্যক্তি বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর অজ্ঞাতনামা আরও ছয় ব্যক্তি সাদা পোশাকে ঘরে প্রবেশ করে। নয়জনই ব্যাগ থেকে র‍্যাবের পোশাক ও অস্ত্র বের করে পোশাক পড়ে শাহনুর আলমকে অস্ত্রের মুখে গ্রেপ্তার করে তাঁর চোখ ও মুখ বেঁধে নিয়ে যায়। শাহনুরকে ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্প–১৪ এর অফিসে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পের তৎকালীন অধিনায়ক মেজর এ জেড এম শাকিব সিদ্দিক পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। একপর্যায়ে শাহনূর অচেতন হয়ে পড়েন। পরদিন তাঁকে নবীনগর থানায় আনা হয়। আবু তাহেরকে (৩নং আসামি) থানায় ডেকে এনে তাঁকে এজহারকারী করে শাহনূরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। এ মামলায় শাহনূরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২০১৪ সালের ১ মে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ২০১৪ সালের ৪ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ২০১৪ সালের ৬ মে তিনি মারা যান।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, মেহেদী হাসানের দাখিল করা নালিশি আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৪ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নালিশি দরখাস্তটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড (লিপিবদ্ধ) করার জন্য নবীনগর থাকার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হলো। একই সঙ্গে মামলার তদন্তভার সিআইডির ওপর অর্পণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এই আদেশের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন অভিযোগ ওঠা একজন র‍্যাব সদস্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দেওয়া আদেশ সংশোধন করে ২০১৪ সালের ৮ জুন আদেশ দেন দায়রা আদালত। এতে অভিযোগ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে নবীনগর থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া দায়রা জজ আদালতের আদেশ বাতিল চেয়ে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন নিহতের ভাই মেহেদী হাসান। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ১৫ জুলাই হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ সংশোধন করে দায়রা জজ আদালতের ২০১৪ সালের ৮ জুন দেওয়া আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুল যথাযথ ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড ২০১৪ স ল র য ব সদস য তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’

খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
  • মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল