নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন হোসাইনকে (৪০) গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে উপজেলার পূর্ব লালপুর রেললাইন এলাকায় তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

মামুন হোসাইন ওই এলাকার প্রয়াত সমন আলীর ছেলে। লালপুর এলাকায় রড, সিমেন্ট ও বালুর ব্যবসা রয়েছে তাঁর। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে ভোরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

মামুনের বড় ভাই আমজাদ হোসেন বলেন, ‘গভীর রাত পর্যন্ত বাসার অদূরে নিজের প্রতিষ্ঠানে ছিল মামুন। পরে সেখান থেকে ফিরে বাসায় ঘুমাচ্ছিল। বিভিন্ন এলাকা থেকে ভোরে গাড়িতে তার দোকানের মালপত্র আসে। সেজন্য কর্মচারীরা প্রায়ই তাকে সে সময় ডেকে নিয়ে যায়। শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে কয়েকজন তাকে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কারা ডেকে নিয়ে গেছে, সেটা জানতে পারিনি। মামুনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে আজাদ নামে এক ছেলে ঘুমায়। গুলির শব্দ শুনে সে বেরিয়ে দেখে, মামুনের নিথর দেহ পড়ে আছে। এরপর সে আমাদের খবর দেয়। দ্রুত উদ্ধার করে ৩০০ শয্যার নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’

আমজাদ আরও বলেন, ‘কে বা কারা আমার ভাইকে কেন হত্যা করেছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন জানান, লালপুর এলাকার প্রভাবশালী আক্তারের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ ৫ আগস্টের পর বিএনপিতে যোগ দেয়। এই গ্রুপের সঙ্গে প্রভাব বিস্তার নিয়ে মামুনের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন বলেন, এলাকার আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ সম্প্রতি বিএনপিতে যোগদানের চেষ্টা করছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন আক্তার, সোহাগ, রতনসহ বেশ কয়েকজন। মামুন এর বিরোধিতা করেন। এ নিয়ে আক্তার, সোহাগ ও রতনদের একটি গ্রুপ তাঁকে হুমকি দিয়ে আসছিল। এর জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু বলেন, বিএনপিতে সম্প্রতি সক্রিয় হওয়া একটি গ্রুপের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে শুনেছি। এটি সত্যি কিনা, সে খোঁজ নিতে পারিনি। বিষয়টি অনুসন্ধান করে সত্যতা পেলে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ফতুল্লা থানার ওসি শরীফুল ইসলাম বলেন, মামুনের ডান চোখে একটি গুলি লেগে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে গেছে। নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হত্যার কারণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। ঘটনাস্থলের পাশের একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে হুডি-জ্যাকেট পরা দু’জনকে দেখা গেছে। 

পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অভ্যন্তরীণ বিরোধ, পূর্বশত্রুতা, ব্যবসায়িক বিরোধসহ সব বিষয় সামনে রেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এল ক র ব এনপ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। 

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে। 

পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহত
  • বিএনপি কি জামায়াতকে চাপে রাখার কৌশলে
  • সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কমিটি গঠন
  • ৮নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন
  • আড়াইহাজারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমিটি গঠন
  • মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
  • ইসলামী আন্দোলনের বাবুরাইল ইউনিট কমিটি গঠন
  • পরিবার নিয়ে চীন ভ্রমণে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সদস্যরা
  • নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিবাদদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে : আবদুল্লাহ
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার