ফরিদপুরে ভেঙে দেওয়া হলো ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ’
Published: 8th, February 2025 GMT
পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর চৌরাস্তায় অবস্থিত ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ’ এক্সকাভেটর দিয়ে ভেঙে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে স্মৃতিস্তম্ভটির একাংশ ভেঙে ফেলা হয়।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, বোয়ালমারীর জিয়া প্রজন্ম দলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাকারিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা স্মৃতিস্তম্ভে ভাঙচুর চালান। ভাঙচুরের খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় চত্বরে অবস্থিত বিক্ষুব্ধ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ফ্যাসিবাদবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁরা আর ভাঙচুর করতে পারেননি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের দিন স্মৃতিস্তম্ভটির একাংশ ভাঙচুর করেছিলেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ভাইদের রক্তের দাগ এ মাটিতে এখনো শুকায়নি। অথচ পালিয়ে যাওয়া খুনি হাসিনা ভারতের মাটিতে বসে এ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সেখানে বসে এ দেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অনলাইনে ভাষণ দেওয়ার দুঃসাহসের প্রতিবাদে এই ভাঙচুর করা হয়।’
বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রদল কর্মী বোরহান হোসাইন বলেন, ‘আমরা এ দেশের মাটিতে ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া শিকড় উপড়ে ফেলব।’
যে এক্সকাভেটর দিয়ে স্মৃতিস্তম্ভটি ভাঙা হয়, সেটির মালিক বোয়ালমারী জর্জ একাডেমি এলাকার বাসিন্দা ভজন চৌধুরী। তিনি বলেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় সাহা শুক্রবার রাতে তাঁর এক্সকাভেটরটি ভাড়া করেন। আজ সকালে এক্সকাভেটরটির চালক শামীম সেটি নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ’ এলাকায় নিয়ে যান।
তবে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় সাহা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ভজন চৌধুরী নামে কাউকে চেনেন না। তিনি বর্তমানে ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন। ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতিস্তম্ভ’ ভাঙার বিষয়েও তিনি কিছু জানেন না।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম রসুল ঘটনাটি সম্পর্কে জানেন, তবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫