দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট এসএ২০-তে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এমআই কেপটাউন। শনিবার জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে ফাইনালে সানরাইজার্স ইস্টার্ন কেপকে ৭৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে দলটি।

রশিদ খানের নেতৃত্বাধীন এমআই কেপটাউন প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৮১ রান সংগ্রহ করে। দলের পক্ষে কনর এস্টারহুইজেন ২৬ বলে ৩৯, ডিওয়াল্ড ব্রেভিস ১৮ বলে ৩৮, রায়ান রিকেল্টন ১৫ বলে ৩৩, রসি ফন ডার ডুসেন ২৫ বলে ২৩ এবং জর্জ লিন্ডে ১৪ বলে ২০ রান করেন। সানরাইজার্সের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন মার্কো জানসেন, রিচার্ড গ্লিসন ও লিয়াম ডাওসন।

১৮২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সানরাইজার্সের ইনিংস শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে। জন অ্যাবেল সর্বোচ্চ ২৫ বলে ৩০ রান করেন, টনি ডি জর্জি ২৩ বলে ২৬ এবং ক্রিস্টান স্টাবস ১৫ বলে ১৫ রান করেন। তবে বাকিরা দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে ব্যর্থ হন। ফলে ১৮.

৫ ওভারে মাত্র ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় সানরাইজার্স। এমআই কেপটাউনের হয়ে কাগিসো রাবাদা ২৫ রানে ৪ উইকেট নেন, ট্রেন্ট বোল্ট ও জর্জ লিন্ডে ২টি করে উইকেট শিকার করেন।

এ জয়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো এসএ২০ শিরোপা জিতল এমআই কেপটাউন। একই সঙ্গে অধিনায়ক হিসেবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ পেলেন আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান। ২০১৭ সালে নিজ দেশের শাগিজা ক্রিকেট লিগ জিতেছিলেন তিনি অধিনায়ক হিসেবে। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলেন এবারই প্রথম। এছাড়া এই আসরেই ডোয়াইন ব্রাভোকে ছাড়িয়ে টি-টোয়েন্টির সফলতম বোলার হয়ে গেছেন তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বক্সিং রিংয়ে চ্যাম্পিয়ন জিনাতই, বোনকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে আফঈদা

কদিন ধরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের আড্ডায় ঘুরেফিরে একটাই নাম জিনাত ফেরদৌস। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এই বক্সার প্রথমবারের মতো পা রেখেছেন জাতীয় বক্সিং রিংয়ে। আর প্রথমবারই নিজের জাত চেনালেন।

আজ বিকেলে পল্টনের মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে ৫২ কেজি ওজন শ্রেণির ফাইনালে নেমে প্রতিপক্ষ আফরা খন্দকারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় তুলেছেন জিনাত। প্রতিযোগিতার আগেই যাঁর আগমন ঘিরে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে, সেই জিনাত রিংয়ে নামতেই যেন বুঝিয়ে দিলেন, অন্যদের চেয়ে কেন তিনি এগিয়ে।

তিন রাউন্ডের লড়াইয়ে শুরু থেকেই জিনাত ছিলেন আক্রমণাত্মক। পাঞ্চে ছিল গতি, রক্ষণে ছিল আত্মবিশ্বাস। অন্যদিকে আফরা খন্দকার চেষ্টা করেছেন রক্ষণ সামলে লড়াইয়ে টিকে থাকতে। খান কয়েক মোক্ষম ঘুষিতে কিছুটা নড়বড়ে হলেও শেষ পর্যন্ত দমে যাননি আফরা।

বরং জিনাতের ঘন ঘন আক্রমণের ফাঁক গলে এক-আধটু পাল্টা আঘাত করতেও পেরেছেন। তবে এই পর্যায়ের এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হয়ে পড়ে তাঁর জন্য অনেকটাই চাপের। তবু আফরা লড়ে গেছেন। আর জিনাতের আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি এ লড়াইকে করে তুলেছিল দেখার মতো।

গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছিলেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক ও আফরার বড় বোন আফঈদা খন্দকার। উৎসাহ দিচ্ছিলেন ছোট বোনকে। পাশে ছিলেন মা–বাবাও। তবে পরিবারের ষোলো আনা সমর্থনও জিনাতকে হারানোর জন্য যথেষ্ঠ হয়নি।

ম্যাচ শেষে আফরা বললেন, ‘তিনি একজন ভালো খেলোয়াড়। তাঁর বিপক্ষে খেলা আমার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে তাঁর আক্রমণাত্মক স্কিলটা দুর্দান্ত। ম্যাচ শেষে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, গুড ফাইট।’

বিজয়ী জিনাত পরে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি সবাইকে বলতে চাই, বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েরা খেলতে চায়। তারা যদি সুযোগ-সুবিধা পায়, অনেক ভালো করবে। ওদের স্কিল আছে।’

সেমিফাইনালে আছিয়া না ফাইনালে আফরা—কোন লড়াইটা বেশি কঠিন ছিল? জিনাতের জবাব, ‘আমি আমার খেলাটা খেলেছি এবং জিতেছি। দুজনই আলাদা ধাঁচের প্রতিপক্ষ।’

জিনাত বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পদক জয়ের আকাঙ্ক্ষার কথা আজও বলেছেন। আগামী এশিয়ান গেমসে সুযোগ পেলে পদক জিতবেন কি না, প্রশ্নের ছোট্ট উত্তর, ‘ইনশা আল্লাহ।’

আফরা-জিনাত ফাইনাল ম্যাচটা যেন ছিল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বক্সারের লড়াই নয়, এর বাইরেও চলছিল আরেক নাটক। ফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগেই বক্সিং রিংয়ে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য। আনসারের বক্সার জাহিদুল হক রেফারির রায় নিয়ে ক্ষোভ জানাতে রিংয়ে বসে পড়েন প্রতিবাদ হিসেবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বক্সার জনি ভদ্রর ঘুষিতে কপালে চোট পান জাহিদুল। চিকিৎসাও নেন। একপর্যায়ে রিংয়ের মাঝখানে বসেই অভিনব প্রতিবাদ জানান।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ আনসার দল বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশনের সভাপতির কাছে অভিযোগ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিযোগিতা থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আনসারের প্রতিনিধিরা রিং ছেড়ে চলে যান। মুহূর্তেই ঘনীভূত হয়ে ওঠে অনিশ্চয়তা, আফরা-জিনাত ফাইনালটি আদৌ হবে তো? কারণ, আফরা বাংলাদেশ আনসারের প্রতিযোগী। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আনসার ফিরে আসে এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

এ বিষয়ে বক্সিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফাইটে হারলে যা হয়। হারলেই বলে অন্যায় হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রিংয়ে ফিরে এসেছে, খেলেছে, এটা ভালো।’

ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল গ্যালারিতে এসে জিনাতকে শুভেচ্ছা জানায়, তাঁকে উপহারও দেয় তারা। গ্যালারিতে বাড়তি উত্তেজনা আর গুরুত্ব যোগ করে ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে। আর দেশের সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক উপস্থিতি তো ছিলই ম্যাচটা ঘিরে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বক্সিং রিংয়ে চ্যাম্পিয়ন জিনাতই, বোনকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে আফঈদা
  • দেশে প্রথমবারের মতো ২৫টি ‘বেশি বিপদজনক’ বালাইনাশক চিহ্নিত
  • হামাসকে অস্ত্রত্যাগে ও গাজার শাসন ছাড়তে সৌদি, কাতার, মিসরের আহ্বান