জীবন থেকে নেয়া সিনেমা দেখতে পারবেন অস্ট্রেলিয়ার দর্শকেরা। তরুণ প্রজন্মের কথা ভেবে এ উদ্যোগ নিয়েছেন বঙ্গজ ফিল্মের প্রতিষ্ঠাতা তানিম মান্নান। তিনি জানান, জহির রায়হানের পরিবারের অনুমতি নিয়ে সিনেমাটি টু–ডি সংস্করণে রূপান্তর করেছেন। একই সঙ্গে সিনেমাটির অডিও পুনরুদ্ধার করে সাবটাইটেল যুক্ত করেছেন।

তানিম জানান, তিনি জহির রায়হানের পরিবারের সঙ্গে সিনেমাটির প্রিন্ট সংগ্রহ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। পরে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ থেকে সিনেমাটির প্রিন্ট সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়ায় নিয়ে যান। সিনেমাটি আগেই এফডিএইচ (ফুল হাই ডেফিনেশন) সংস্করণে থাকলেও টু–ডি সংস্করণে ছিল না। টু–ডি সংস্করণ করলে সিনেমাটি দেখতে ভিজ্যুয়ালি অনেক স্বচ্ছ দেখায়। এ ছাড়া বেশ কিছু জায়গায় শব্দের মানের সংস্কার করেছেন। একই সঙ্গে সিনেমাটির ডিসিপি বা সিনেমার ডিজিটাল প্রিন্ট সংরক্ষণ করেছেন বলেও জানান তিনি।

তানিম বলেন, ‘শৈশব থেকেই দেখেছি, সিনেমাটি ভাষার মাসে কোনো না কোনো টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হতো। এটা এখনো আমাদের প্রজন্মকে নস্টালজিক করে দেয়। সেখান থেকেই মনে হয়েছে, সিনেমাটির বক্তব্য এখন আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। যে কারণে সিনেমাটির প্রিন্ট সংগ্রহ করে মান উন্নয়নের কাজ করেছি। একই সঙ্গে সিনেমাটি এখন যে কেউ চাইলে সিনেমা হলেও মুক্তি দিতে পারবেন। আমি সেভাবেই ডিসিপি প্রস্তুত করেছি। সিনেমাটির কপি একটি ফিল্ম আর্কাইভে, আরেকটি ডিসিপি প্রিন্ট পরিবারের জন্য তৈরি করা আছে।’

তাঁর মতে, সিনেমাটির বক্তব্যের কারণে দেশ ও প্রবাসে থাকা তরুণ প্রজন্মের দর্শকদের দেখা উচিত। অস্ট্রেলিয়ার দর্শকেরা ২৩ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পবেল টাউনের ডুমারেস্ক স্ট্রিট সিনেমা হলে এটি দেখতে পারবেন। এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারি সিনেমাটির আরেকটি প্রদর্শনী করতে চান আয়োজকেরা। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা কালজয়ী নির্মাতা জহির রায়হানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চান।
জহির রায়হানের কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় আনিস ফিল্মস করপোরেশনের পরিবেশনায় ১৯৭০ সালে মুক্তি পেয়েছিল ছবিটি। সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন খান আতাউর রহমান, আনোয়ার হোসেন, শওকত আকবর, রওশন জামিল, রাজ্জাক, রোজী সামাদ, আমজাদ হোসেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স স করণ কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ