মামলার তদন্তের সময় ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠির নলছিটি থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মাইনউদ্দিন খান রোববার পুলিশের বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি বরাবর রোববার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি অনুলিপি দিয়েছেন আইজিপির কমপ্লেন সেল ও ঝালকাঠির পুলিশ সুপারকে। যদিও এসআই শহিদুল দাবি করেছেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। 

মাইনউদ্দিন খান উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের জুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। ২০২৩ সালের ১৫ মে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা (পিটিশন মামলা নম্বর-৪৩/২০২৩) করেন দপদপিয়া ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা মো.

সাইফুল আকন। এতে ১ নম্বর আসামি করা হয় মাইনউদ্দিন খানকে। 

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এসআই শহিদুল আলম আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল আকনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এর আগেই তিনি মামলা থেকে মাইনউদ্দিন খানকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলে ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এতে রাজি না হলে মাইনউদ্দিনের মোবাইল ফোন (ডিভাইস) জব্দ ছাড়াই ফরেনসিক রিপোর্ট অনুসরণ না করে মনগড়া প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ মে আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জেলহাজতে পাঠানো হয় মাইনউদ্দিন খানকে। ১০ দিন পর ২৮ মে তিনি জামিনে মুক্তি পান। 

মাইনউদ্দিন খানের অভিযোগ, গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ১০ মিনিটে শহিদুল আলমের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর থেকে তাঁর ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন খানের নম্বরে কল আসে। রিসিভ করার পর ওই পুলিশ কর্মকর্তা মিথ্যা মামলায় মাইনউদ্দিন খানকে আবারও জেল খাটানোসহ নানা হুমকি-ধমকি দেন।

মাইনউদ্দিন খান বলেন, এসআই শহিদুল আলম একই থানায় দীর্ঘদিন ধরে আছেন। এ কারণে ঘুষ-দুর্নীতিতে জড়িয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। নিরীহ জনগণকে হয়রানি, হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। পরিবার নিয়ে তিনি আতঙ্কিত।

এসআই শহিদুল আলম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার সবই মিথ্যা। আমি ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। মাইনউদ্দিন খানের ভাই গিয়াসকে কল করে হুমকি দেওয়ার ঘটনাও সত্য নয়।’

লিখিত আকারে কোনো অভিযান না পেলেও বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালাম। তাঁর ভাষ্য, শহিদুল ইসলাম একজন ভালো কর্মকর্তা হিসেবেই পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। জেলার পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায় সোমবার বিকেলে বলেন, তিনি এমন কোনো অভিযোগ হাতে পাননি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের জবি শাখার ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদল ও অন্যান্য সক্রিয় সংগঠনের কর্মীদের হত্যাচেষ্টা ও নির্যাতনের অভিযোগে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের সবাই জবি শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য মো. আজিজুল হাকিম। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে তিনি গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে, জবি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন জুলকারনাইন (২৬)।

আরো পড়ুন:

গোবিপ্রবিতে ছাত্রলীগ নেতার সনদ তুলতে ছাত্রদল নেতার সহায়তা, অতঃপর…

জাবিতে জুলাই হামলায় জড়িত ২৬৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে শাস্তি

অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, শাহরুক আলম শোভন (২৮), জাহিদুল ইসলাম হাসান (২৫), মাকসুদুল হাসান আরাফাত (২৫), অভি ইসলাম (৩০), কামরুল ইসলাম (৩০ ও ৩১), অতনু গুন্ডা (৩০), তৌফিক এলাহী (৩০), মো. রিজভি খান (২৯), ফরহাদ মোল্লা (২৯), রায়হান (৩০), আল সাদিক হৃদয় (৩০), ইমরুল নিয়াজ (৩০), মো. সম্রাট হোসেন (২৯), সামিউল তাহসান শিশির (৩০), মির মুকিত (২৫), অপূর্ব লাবিব (২৪), মারুফ (২৮), মাহিনুর রহমান বিজয় (২৭), সাজবুল ইসলাম (২৭), অর্জুন বিশ্বাস (২৪), রবিউল ইসলাম (২৭), মিলন মাহফুজ (২৮), মেহেদী হাসান শাওন (৩০), আবু সুফিয়ান (২৭), সাইফ (২৭), সজল (২৯), রিফাত সাঈদ (২৭), অভিজিৎ বিশ্বাস (২৭), আব্দুল কাদের (২৭), রাজা হাওলাদার (১২), মাহবুব নয়ন (৩০), শরিফুল ইসলাম তানভির (২৯), আসাদুজ্জামান আসাদসহ (২৯) অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা বিভিন্ন গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিতেন। এর মধ্যে ‘উৎপাত ১২’ নামের গ্যাংয়ের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধান আসামি আকরাম হোসেন জুলকারনাইন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে স্থাপিত একটি ‘টর্চার সেল’-এ ছাত্রদল ও অন্যান্য সংগঠনের ছাত্রদের ধরে এনে টর্চার, ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টা করা হতো।

২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট প্রধান আসামি আকরাম হোসেন জুলকারনাইন বাদী আজিজুল হাকিমকে রড, লাঠি, হকিস্টিক ও চাপাতি দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে গুরুতর জখম করেন বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে, আসামি আকরামকে ক্যাম্পাস থেকে আটক করিয়ে থানা নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে তার বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে বিভাগের গেটে তালা দেন। পরে বিভাগের ১০০ জনের মধ্যে ৫১ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর গণস্বাক্ষর সম্বলিত মুচলেকার মাধ্যমে তাকে কোতোয়ালি থানা থেকে মুক্ত করা হয়। তবে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে থমথমে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

ডিএমপির কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার ফজলুল হক বলেন, “আকরাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় থাকলেও ছাত্রলীগের কোনো পদে তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, “২০২৩ সালের ছাত্রদলের উপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তিনগরে বাসের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু
  • এক লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ, ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে নালিশি
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদাবনতি, দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
  • গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও এক নারীর মৃত্যু
  • দুই বছর ধরে ঝুলছে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার তদন্ত
  • নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের জবি শাখার ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
  • গৌরনদী থানার ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
  • পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩
  • শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
  • দুই দিনের রিমান্ডে সাবেক প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত