দেশে দেশে এই শব্দ দুটির প্রয়োগ এক নয়। যুক্তরাষ্ট্রে ডায়েটিশিয়ান হলেন স্বীকৃত খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ। তাঁরা চিকিৎসার মাধ্যমে পুষ্টি থেরাপি ও পরামর্শ দেন। কিছু রাজ্যে ডায়েটিশিয়ানরা নিজেদের নিউট্রিশনিস্ট (পুষ্টিবিদ) হিসেবে পরিচয় দেন। অর্থাৎ সব জায়গায় এর অর্থ এক নয়।

তাহলে কোনটার সংজ্ঞা কী?

ডায়েটিশিয়ান

বিভিন্ন দেশে ডায়েটিশিয়ানরা সাধারণত পুষ্টি ও খাদ্য বিষয়ে উচ্চশিক্ষিত। এর মধ্যে থাকে খাদ্যবিজ্ঞান, পুষ্টি ও মানবজীবনে খাদ্যের প্রভাব। বিস্তৃত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ডায়েটিশিয়ানরা মেডিকেল নিউট্রিশন থেরাপি ও পুষ্টিগত পরামর্শ দেওয়ার দক্ষতা অর্জন করেন। দিতে পারেন কিছু ওষুধও।

নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ান হতে সরকারের ঠিক করা মানদণ্ড মেনে উত্তীর্ণ হতে হয়। তার আগে এই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অর্জন করতে হয় স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। জীববিজ্ঞান, অণুজীববিজ্ঞান, রসায়ন, প্রাণরসায়ন, অজৈব রসায়ন, শারীরতত্ত্ব (ফিজিওলজি) ইত্যাদি বিষয়ের পাশাপাশি বিশেষায়িত বিষয়ে পড়েও এই পেশায় আসা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ডায়েটিশিয়ান হতে প্রয়োজন পড়ে স্নাতকোত্তরের।

ডায়েটিশিয়ানদের কাজের ক্ষেত্র প্রধানত চারটি—ক্লিনিক্যাল, খাদ্য পরিষেবা ব্যবস্থাপনা, কমিউনিটি ও গবেষণা। ক্লিনিক্যাল ও বহির্বিভাগের ডায়েটিশিয়ানরা পুষ্টি শিক্ষা দিতে হাসপাতালে কাজ করতে পারেন।

আরও পড়ুনখাদ্য ও পুষ্টি নিয়ে এই সাত ভুল কথা খুবই জনপ্রিয়০৩ নভেম্বর ২০২৩

নিউট্রিশনিস্ট

কিছু দেশে ডায়েটিশিয়ান না বলে বলা হয় নিউট্রিশনিস্ট। তবে শিক্ষাগত যোগ্যতায় তাঁরাও ডায়েটিশিয়ানদের মতোই। যুক্তরাষ্ট্রে ‘নিউট্রিশনিস্ট’ শব্দটি দিয়ে এমন ব্যক্তিদের বোঝানো হয়, যাঁদের পুষ্টিবিদ্যার ওপর বড় পরিসরের যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণ আছে। তবে অনেক রাজ্যেই পুষ্টিবিদ হতে বিশেষ কোনো শর্ত নেই। পুষ্টি বা খাদ্য সম্পর্কে আগ্রহী হলেই এই পরিচয় দেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে এই নিউট্রিশনিস্টরা মেডিকেল নিউট্রিশন থেরাপি ও পুষ্টি পরামর্শ দিতে পারেন না।

আরও পড়ুনযেসব পুষ্টি উপাদানের ঘাটতিতে ওজন বাড়তে পারে২২ এপ্রিল ২০২৪কার কাছে যাবেন

বাংলাদেশে পুষ্টিসংক্রান্ত বিষয়ে স্নাতক করার পর ডায়েটিশিয়ান পেশায় কাজ করা যায়। তবে সাধারণত উচ্চতর ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাঁরা পুষ্টিবিদ পরিচয়ে সেবা দেন। তাই আপনার খাদ্যাভ্যাসসংক্রান্ত পরামর্শের প্রয়োজন হলে ডায়েটিশিয়ানের কাছে যেতে পারেন। আর শারীরিক পুষ্টিসংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে যেতে পারেন চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নিউট্রিশনিস্টের কাছে।

আরও পড়ুনমিষ্টি-রসমালাই খেয়েও ৪০ কেজি ওজন কমিয়েছেন এই ইউটিউবার, কীভাবে?০৯ ডিসেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা থাকাকালে তাঁর ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বের উল্টো যাত্রা ঘটল: অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ (তিন শূন্য) তত্ত্ব সমর্থন করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। কিন্তু অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে তার উল্টো যাত্রা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি থাকা অবস্থায় তাঁর থ্রি জিরো তত্ত্বের যে উল্টো যাত্রাটা ঘটল, এটা তাঁর খেয়াল করা দরকার। আমরা চাই, থ্রি জিরো তত্ত্বটাই অগ্রসর হোক।’

সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন। ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যেভাবে হতে পারে’ শিরোনামে যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও প্রথম আলো।

বৈঠকে অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের “থ্রি জিরো” (তিন শূন্য) তত্ত্ব সারা পৃথিবীতে পরিচিত। আমি এটা খুবই সমর্থন করি যে শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য দারিদ্র্য। কিন্তু পুরো যাত্রাটা তো হচ্ছে উল্টো দিকে। অধ্যাপক ইউনূসের একটা সুযোগ ছিল যে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে থ্রি জিরো তত্ত্বের বাস্তবায়নের একটা মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে দাঁড় করানোর কিছু চেষ্টা করা। কিন্তু আমরা দেখছি, কীভাবে কার্বন নিঃসরণ আরও বাড়ে, সেটার একটা চেষ্টা চলছে। গত ১০ মাসে লক্ষাধিক বেকারত্ব বেড়েছে শুধু কারখানা বন্ধ করার কারণে আর দারিদ্র্য বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ লাখ। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি থাকা অবস্থায় তাঁর থ্রি জিরো তত্ত্বের যে উল্টো যাত্রাটা ঘটল, এটা তো তাঁর একটু খেয়াল করা দরকার। এতে তো আমরা খুশি না। আমরা তো চাই যে থ্রি জিরো তত্ত্বটাই অগ্রসর হোক।’

‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যেভাবে হতে পারে’ শীর্ষক গোলটেবিলে আলোচকদের একাংশ। সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ