প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ২ কোটি মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়, মারা যায় ৯৭ লাখ। মারা যাওয়া রোগীদের ৭০ শতাংশই উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশের বাসিন্দা। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬৭ হাজার মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয় আর মারা যায় ১ লাখ ১৬ হাজারের বেশি।

কোলন ক্যানসারে বিশ্বে প্রতিবছর ১৯ লাখ ২৬ হাজার (৯ দশমিক ৬ শতাংশ) মানুষ আক্রান্ত হয় এবং ৯ লাখ ৪ হাজার মানুষ মারা যায়। প্রতিবছর বিশ্বে ৯ লাখ ৬৯ হাজার মানুষ পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হয় আর মারা যায় ৬ লাখ ৬০ হাজার।

বাংলাদেশে কোলন ও পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। এর কারণ আমাদের জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাস। গ্লোবোকান ২০২২ অনুসারে, বাংলাদেশে প্রতিবছর পাকস্থলী ও কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা যথাক্রমে ৮ হাজার ৩৬৫ ও ৫ হাজার ৭২৩ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৭ হাজার ৩৫৯ ও ৩ হাজার ৪৫৭। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস যেমন উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং আঁশযুক্ত খাবারের অভাব কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপানও এই ঝুঁকি বাড়ায়।

পাকস্থলীর ক্যানসারের জন্যও এসব কারণ দায়ী। হেলিকোব্যাকটর পাইলোরি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, ধূমপান, উচ্চ লবণযুক্ত এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার পাকস্থলী ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। প্রাথমিক অবস্থায় এই ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব।

জীবনধারার পরিবর্তন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে এসব ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর ফলমূল ও সবজি রাখা, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা কোলন ও পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।

সর্বোপরি, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্তকরণ ক্যানসার প্রতিরোধ ও নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার মাধ্যমে আমরা কোলন ও পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারি।

কলোরেক্টাল ও পাকস্থলী ক্যানসারের সব রকম চিকিৎসা ও ওষুধ দেশেই বিদ্যমান। সুতরাং, অহেতুক আতঙ্কিত হয়ে বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজে সচেতন হতে হবে, অন্যকেও সচেতন করতে হবে, যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে কোলন ও পাকস্থলী ক্যানসার ধরা পড়ে এবং দেশেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা যায়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দুই উপদেষ্টার গড়ি আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।

বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে গতিরোধ করা, সরকারি কাজে বাধা ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগে রোববার রাতে গোয়ানঘাট থানায় ১৫০ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন থানার এসআই ওবায়েদ উল্লাহ। মামলার পর সোমবার ভোরে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলেন- মামলার ৬নং আসামি কালিনগরের দেলোয়ার হোসেন দুলু, মোহাম্মদপুরের শাহজাহান মিয়া ও ছৈলাখেল অষ্টম খন্ডের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ।

শনিবার সকালে জাফলং এলাকা পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তারা ফেরার পথে জাফলং পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে বিএনপির সংগঠনের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে দুই উপদেষ্টার আটকে নানান স্লোগানে বিক্ষোভ করা হয়। ঘটনার পর গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে বহিষ্কার ও জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি আজির উদ্দিনকে শোকজ করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সমকালকে জানান, গতকাল রাতে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সদ্য বহিষ্কৃত গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে। দ্বিতীয় আসামি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সোহেল আহমদ, ওমর ফারুক, সুমন শিকদার, দেলোয়ার হোসেন দুলু, আব্দুস সালাম ও আব্দুল জলিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ