আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে কিছুই জানি না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 12th, February 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে আমার জানা মতে, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।
বুধবার সকালে গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪৫ জাতীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ আনসার সদস্যদের দেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। আনসার সদস্যরা সব জায়গায় কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের ক্রান্তিকালে তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য আলোচনা হচ্ছে।
অপারেশন ডেভিল হান্ট সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যতদিন প্রয়োজন ততদিন এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা বলেন, যে পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হওয়ার কথা সেভাবে অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে না। আমরা সেদিকেও খেয়াল রাখছি। এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমুল গনি, বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদসহ আনসার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, দেশ সেবার ব্রত নিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে অবদান অনস্বীকার্য। তিনি বলেন, এ বাহিনীর ৩৯টি পুরুষ আনসার ব্যাটালিয়ন, ২টি মহিলা আনসার ব্যাটালিয়ন, একটি বিশেষায়িত আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন (এজিবি) সহ মোট ৪২টি আনসার ব্যাটালিয়ন রয়েছে। তার মধ্যে ১৬টি আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ‘অপারেশন উত্তরণ’-এ নির্ভরশীল সহায়ক শক্তি হিসেবে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দায়িত্ব পালন করছে। সামাজিক সম্প্রীতি ও অসাম্প্রদায়িক বন্ধন দৃঢ়কল্পে শারদীয় দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে একীভূত হয়ে রাষ্ট্রের অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব আস্থার সাথে পালন করে যাচ্ছে এ বাহিনীর সদস্যরা।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ আনস র ল দ শ আনস র ও স বর ষ ট র উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
বাসাবাড়িতে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু নিয়োগ বন্ধে আইন করার সুপারিশ
বাসাবাড়ির কাজে তথা গৃহকর্মে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়োগ বন্ধে কঠোর আইন করার পাশাপাশি কার্যকরভাবে তা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।
বাংলাদেশ জাতীয় শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাজ করানো হলে তা শিশুশ্রমের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করা হয়। এ ছাড়া গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি ২০১৫-তে বলা হয়েছে, ১৪ বছরের নিচে কোনো শিশুকে গৃহকর্মে নিয়োগ করা যাবে না।
শ্রম সংস্কার কমিশন এ প্রসঙ্গে বলেছে, গৃহকর্মে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিয়োগ বন্ধে কঠোর আইন করতে হবে। একই সঙ্গে এই আইনের কার্যকর বাস্তবায়নেও গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে শ্রম সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, সেখানে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গৃহশ্রমিকদের বাংলাদেশ শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দিতে হবে। এর আগপর্যন্ত নিশ্চিত করতে হবে ‘গৃহকর্মীর কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা–২০১৫’–এর যথাযথ বাস্তবায়ন।
নিয়োগের ক্ষেত্রে আবাসিক, অনাবাসিক, খণ্ডকালীন বা স্থায়ী—সব ধরনের গৃহশ্রমিকদের জন্য কর্মঘণ্টা, বেতন, ছুটি, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সুবিধা উল্লেখ করে একটি স্বচ্ছ ও নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্মসংস্থান চুক্তি প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে শ্রমিকের কোনো অভিযোগ থাকলে সেটি কার বরাবর, কোন স্থানে এবং কীভাবে দায়ের করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাসহ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
গৃহশ্রমিকদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি ও নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মাধ্যমে গৃহকর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া গৃহকর্মীদের সংগঠন বা ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রদানেরও সুপারিশ করেছে কমিশন।
পারলারের কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে নেওয়ার পরামর্শ
এদিকে বিউটি পারলার খাতের শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে এ খাতের কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা ও তাঁদের সন্তানদের জন্য শিশু দিবাযত্নকেন্দ্র বা ডে কেয়ার সুবিধা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতের কথা বলেছে কমিশন।
অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ খাতে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড গঠনের সুপারিশও করেছে কমিশন। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মীদের কাজের মান ও ঝুঁকি বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা এবং তাঁদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে পদোন্নতি কাঠামো তৈরি করতে হবে।
দেশের সব বিউটি পারলার শ্রমিকদের পেশাগত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদা সুরক্ষার জন্য শ্রম আইন অনুযায়ী তাঁদের স্বীকৃতি দেওয়া, অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে।
বিউটি পারলারের কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান করাসহ সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা নির্দেশিকা প্রণয়নের কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
বিউটি পারলারের কর্মীদের বড় একটি অংশ রাতে বাসায় ফেরে। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে ও রাত্রিকালীন বাড়ি ফেরার সময় তাঁদের হয়রানি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব শ্রমিকের সামাজিক মর্যাদা, সুরক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে কমিউনিটিভিত্তিক উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।