সিলেটে নারী চা-শ্রমিকদের সঙ্গে উঠান বৈঠক করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফামের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে নগরের শাহী ঈদগাহ এলাকায় দলদলি চা-বাগানের নারী চা-শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

‘চা–বাগানের নারী শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে নেতৃত্ব বিকাশ’ শীর্ষক এ উঠান বৈঠকে নারী চা-শ্রমিকেরা নিজেদের কর্মক্ষেত্রের নানা সমস্যা, সমাধান ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। দলদলি চা–বাগানের অভ্যন্তরে একটি টিলার উঠানে চা-বাগানের পঞ্চায়েতের নেতৃত্বে থাকা নারী সদস্য ও চা-শ্রমিকেরা উপস্থিত ছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফামের প্রতিনিধিদলের আগমন উপলক্ষে এ বৈঠকের আয়োজন করে বেসরকারি সংগঠন ‘এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (একডো)’।

এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশে নিযুক্ত দূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান মাইকেল মিলার, পরামর্শক ইউরাটে স্মলস্কাইট মারভেলি, গভর্ন্যান্স ও মানবাধিকার শাখার কর্মসূচি ব্যবস্থাপক লায়লা জেসমিন বানু, জুই চাকমা, অক্সফামের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ ধামলী, অ্যাডভোকেসি ও যোগাযোগ বিভাগের প্রধান মো.

সাইফুল ইসলাম, কর্মসূচি সমন্বয়ক শাহজাদী বেগম, তারেক আজিজ, কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা খাদিজা আক্তার, যোগাযোগ কর্মকর্তা শামিউল ইসলাম, একডোর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নারী চা-শ্রমিকদের সার্বিক জীবনব্যবস্থার কথা শোনেন।

উঠান বৈঠকে চা-বাগান পঞ্চায়েতের নারী সদস্য অনিতা দাশ বলেন, ‘আমরা এমন এক জায়গায় বাস করছি, যেখানে আমাদের অধিকারগুলো কী, তা জানি না। এই যে আমরা চা–পাতা তোলার কাজ করে ১৭৮ টাকা দৈনিক বেতন পাই, এটা দিয়ে তো সংসার চালানো যায় না। বাগানে টয়লেটের কোনো ব্যবস্থা নেই। পানির ব্যবস্থা অপ্রতুল। অনেক কষ্টে চলাফেরা ও কাজ করতে হচ্ছে।’ চিকিৎসাব্যবস্থার অপ্রতুলতার দিকটিও তুলে ধরেন এই নারী। অনিতা দাশ বলেন, ‘এখানে সূর্য ক্লিনিক নামের একটি চিকিৎসালয় আছে। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা খুবই বাজে। এতে কোনো টয়লেট ও বসার ব্যবস্থা নেই। আমরা চাই, এটির উন্নয়ন হোক।’

প্রতিনিধিদলকে বরণ করে নেন নারী চা-শ্রমিকেরা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ