মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকার বাস্তবায়ন চায় রোড সেফটি কোয়ালিশন
Published: 13th, February 2025 GMT
রাস্তায় দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ।
সড়কের প্রতিদিনের দুর্ঘটনার চিত্র উপস্থাপনের জন্য সরকারকে কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ তৈরিরও তাগিদ দিয়েছে ৯টি সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম রোড সেফটি কোয়ালিশন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন জোটের সদস্য নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। গত বছর জারি করা মোটরযান গতিসীমা বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি মরক্কোর মারাকাসে গ্লোবাল মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স অন রোড সেফটি আয়োজন করা হয়েছে। এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘এক বিশ্ব এক সড়ক জীবনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। ওই সম্মেলনকে সামনে রেখে আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্র্যাকের রোড সেফটি ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ ও স্টেপসের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার।
ইলিয়াস কাঞ্চন তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে এখন সুনির্দিষ্ট কোনো আইন বা বিধি নেই। তাই সরকারের উচিত হবে একটি সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা, যা হতে হবে প্রমাণভিত্তিক সাফল্য সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের আলোকে। তিনি বলেন, সড়কে হতাহতের পরিসংখ্যানের জন্য কাঠামোগত ব্যবস্থা যেমন নেই, তেমনি নেই দুর্ঘটনার সুনির্দিষ্ট তথ্য। সড়কে দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র উপস্থাপনের জন্য সরকারকে একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, গত বছর মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। তবে এর বাস্তবায়ন ও প্রয়োগের নির্দেশনা না থাকায় সুফল মিলছে না। এ জন্য সরকারের উচিত দ্রুততম সময়ের মধ্যে গতিসীমা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করা।
মোটরসাইকেলের চালকদের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড হেলমেট নির্দেশিকা তৈরি করার দাবি জানান ইলিয়াস কাঞ্চন।
গত বছর জারি করা মোটরযান নির্দেশিকায় সিটি করপোরেশন এলাকায় মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন মহলের আপত্তি রয়েছে। এ বিষয়ে রোড সেফটি কোয়ালিশনের বক্তব্য কী এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর বড় বড় শহরে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ থেকে ৪০। বাংলাদেশেও এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন সড়ক পরিবহন আইন রয়েছে। কিন্তু এই আইন দিয়ে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সে জন্য তাঁরা আলাদা সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, মরক্কোর মারাকাসে শুরু হতে যাওয়া সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি বা কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। রাস্তা নিরাপদ করতে হবে। পথচারী ও সাইক্লিস্টদের নিরাপত্তার জন্য অগ্রাধিকার দিতে হবে। সড়ক নিরাপত্তা শুধু স্লোগানের মধ্যেই না রেখে এ খাতে অগ্রাধিকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র জন য দ র ঘটন গত স ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।