পোলট্রি মেলা: ‘রমজানে সহনশীল থাকবে ডিম ও মাংসের দাম’
Published: 13th, February 2025 GMT
`আসন্ন রমজানে ডিম ও মুরগির মাংসের দাম সহনশীল থাকবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে পুরো রমজান মাস সুলভ মূল্যে ডিম ও মুরগি বিক্রি করবো। শুধু রমজান নয়, ভবিষ্যৎ আমরা সুলভ মূল্যে ডিম, মুরগি বিক্রি অব্যাহত রাখবো।’
ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মসিউর রহমান বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘বিল্ডিং এ রেজিলিয়েন্ট পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রি ইন বাংলাদেশ; ইভোলুশন, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি' শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন।
ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি) এবং বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) সহায়তায় ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিষ্ট ফোরাম (এফএলজেএফ) এই সেমিনারের আয়োজন করে।
মসিউর রহমান জানান, অতিবৃষ্টি, খরা, রোগ-জীবানুর সংক্রমণ এবং বাজার দরের অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের কারণে ২০২৪ সাল ছিল পোল্ট্রি শিল্পের জন্য একটি দুর্যোগপূর্ণ বছর। অসংখ্য খামারি নিঃস্ব হয়েছেন। বেশ কয়েকটি বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানও তাদের ব্যবসা সংকুচিত করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০৫০ সালকে সামনে রেখে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প।
“স্বল্পতম সময়ে মানসম্মত প্রোটিন উৎপাদন করতে হলে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, খামার ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন ঘটাতে হবে এবং গবেষণা কাজে ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে।”
এজন্য সরকারকে পোলট্রি শিল্পের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
পোলট্রি বিজ্ঞান সম্পর্কে আধুনিক জ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাড়া এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় উল্লেখ করে মসিউর রহমান বলেন, “আমাদের এবারের মেলার আয়োজনের লক্ষ্যই হচ্ছে সেই সক্ষমতা অর্জনে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের খামারিদের সাহায্য করা।”
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে ওয়াপসা-বাংলাদেশ শাখার সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার প্রামাণিক বলেন, “২০২০ সালের পর ফিডের উৎপাদন বেশ খানিকটা হ্রাস পেয়েছিল। গত বছর উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে। আশা করা যায় চলতি বছরে আরো বাড়বে অর্থাৎ ডিম-মুরগির উৎপাদনও বাড়বে।”
তিনি বলেন, “যেকোনো কিছু খেলেই হবে না, খাদ্যকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ হতে হবে। যেহেতু আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ মধ্যম আয়ের, এ কারণে ডিম কিংবা মুরগির মাংস কীভাবে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা যায়, এ লক্ষ্যে অবিরাম কাজ করছে ওয়াপসা বাংলাদেশ শাখা।”
ব্রিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি মাহাবুবুর রহমান বলেন, “বিগত সরকারের আমলে খামারিদের লোকসান হলেও তা জোর গলায় বলার মতো পরিস্থিতি ছিল না। সে সময় যারাই পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে সামনে এসেছিলেন তাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখনও অনেকগুলো মামলা নিস্পত্তি হয়নি। এরকম পরিস্থিতি আমরা আর দেখতে চাই না।”
মাহাবুবুর রহমান বলেন, “সরকার ডিমের খুচরা মূল্য ১১.
ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, “খামারি ও উদ্যোক্তাদের ঝরে পড়া ঠেকাতে হবে। পোল্ট্রি শিল্পকে টেকসই ও মজবুত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে হবে।”
সেমিনারে বলা হয়, ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক পোলট্রি সেমিনার। আর ২০-২২ ফেব্রুয়ারি পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো।
বিশ্বের ১৭টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও পণ্যের পসরা নিয়ে এতে হাজির হবেন।
পোলট্রি মেলা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। কুড়িল বিশ্ব রোডের ৩০০ফিট থেকে সারাদিন ফ্রি শাটল বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এফএলজেএফ সভাপতি মুন্না রায়হানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম, আরটিভির হেড অব নিউজ ইলিয়াস হোসেন ও এফএলজেএফ এর সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রহম ন ব র রহম ন রমজ ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি
সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।
আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’
অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।