কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলার পাহাড়ি এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ এক রোহিঙ্গা যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম রহমত উল্লাহ (২২)। তিনি কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ই-ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ রশিদের ছেলে। আজ শুক্রবার দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের শালবাগান ২৬ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির–সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় একটি লেকের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার হয়।

পুলিশ জানায়, সকালে লাশটি দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এপিবিএনকে জানায়। তাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তির শরীরে কয়েকটি গুলির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রহমত উল্লাহ ডাকাতি, অপহরণ, খুনসহ নানা অভিযোগে উখিয়া ও টেকনাফ থানায় করা পাঁচটি মামলার আসামি।

ওসি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে দুর্বৃত্তরা রহমত উল্লাহকে তুলে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির–সংলগ্ন পাহাড়ে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফেলনা জিনিসের পণ্য রপ্তানি করে সাফল্য রহমতুল ইসলামের

কয়েক বছর আগেও পেঁপেগাছের ডালপালা বা নল ছিল ফেলনা। কাঁচা বা পাকা পেঁপে সংগ্রহের পর ছেঁটে দেওয়া ডালপালা পড়ে থাকত বাগানে। ফেলে দেওয়া এই ডাল এখন মূল্যবান রপ্তানি পণ্য। শুধু পেঁপের নলই নয়, আমগাছ ও নিমগাছের ফেলে দেওয়া চিকন ডাল, পাটচুন ঘাস, নীলকণ্ঠ ফুলের মতো ফেলনা জিনিস দিয়ে তৈরি হচ্ছে পোষা প্রাণীর খাবার ও খেলনা। এসব বিশেষায়িত পণ্য রপ্তানির বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রাও।

ফেলনা জিনিসকে রপ্তানি পণ্য বানানোর পথ দেখিয়েছেন দেশেরই একজন উদ্যোক্তা। এই উদ্যোক্তা হলেন রহমতুল ইসলাম। পোষা প্রাণীর খাবার ও খেলনা তৈরির জন্য মাগুরার প্রত্যন্ত গ্রাম জাগলায় কারখানা গড়ে তুলেছেন তিনি। সেখানে এসব পণ্য তৈরি করছেন গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত নারীরা। বোল্ড পার্টনারস লিমিটেড নামের এই কারখানায় প্রত্যক্ষ–পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে ৫০০ জনের।

গ্রামের এই ব্যতিক্রমী কারখানা দেখতে নিয়মিতই আসছেন বিদেশি ক্রেতারা। সংখ্যা কত হবে? রহমতুল ইসলাম জানালেন, গত আট বছরে কারখানা দেখতে আসা বিদেশি প্রতিনিধিদলের সংখ্যা চার শ জনের কম হবে না। মুঠোফোনে কথা বলার সময় তিনি জানালেন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে একটি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদল এখন তাঁর কারখানা ঘুরে দেখছে।

যেভাবে শুরু

মাগুরার সন্তান রহমতুল ইসলাম উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখানে পড়াশোনা শেষ করে ব্যবসা শুরু করেন। একসময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাপানে থিতু হন। তবে নিজের এলাকায় ব্যতিক্রমী কিছু করার তাড়না থেকে যায়। শুরুতে পোষা প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা থেকে প্রাণীর খাবার ও খেলনা তৈরির চিন্তা মাথায় আসে। এরপর দেশে ফিরে ২০১৮ সালে মাগুরার জাগলা গ্রামে চার–পাঁচজন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করেন। পোষা প্রাণীর দুই ধরনের খেলনা তৈরির মাধ্যমে শুরু হয় কারখানার কর্মযজ্ঞ। ওই বছর ফেব্রুয়ারিতে জাপানে প্রথমবারের মতো তিন হাজার মার্কিন ডলারের পোষা প্রাণীর খেলনা রপ্তানি করে প্রতিষ্ঠানটি।

চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ধীরে ধীরে রপ্তানিও বাড়তে থাকে। প্রয়োজন পড়ে নতুন কর্মীর। কিন্ত তাঁদের দক্ষ করে তোলার জন্য দরকার প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয় কারখানায়। কর্মী হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয় সুবিধাবঞ্চিত নারীদের। কর্মযজ্ঞ বৃদ্ধির পর জাপান ও সিঙ্গাপুরের দুটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করে এই কারখানায়। প্রায় ২০ একর জমিতে কারখানার পাশাপাশি খাবার ও খেলনা তৈরির কাঁচামালের জন্য ঘাস ও গাছ রোপণ করেন তিনি। চাহিদা পূরণ না হওয়ায় এখন কাঁচামাল সরবরাহের জন্য প্রচারণাও শুরু করেছেন। ফেলনা জিনিস এনে বিক্রি করলেই নগদ টাকা দেওয়া হয়। এমন উদ্যোগে গ্রামের লোকজন ফেলনা জিনিস কুড়িয়ে বিক্রি করতে শুরু করেন কারখানায়। এমন সরবরাহকারীর সংখ্যাও এখন প্রায় ১০০।

পেঁপের নল, গাছের চিকন ডাল ও নানা রকমের ঘাস থেকে পোষা প্রাণির খাবার ও খেলনা তৈরি করছে মাগুরার বোল্ড পার্টনারস লিমিটেড। এসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেলনা জিনিসের পণ্য রপ্তানি করে সাফল্য রহমতুল ইসলামের