শনিবার ময়মনসিংহ যাচ্ছেন আজহারী, ব্যাপক প্রস্তুতি
Published: 15th, February 2025 GMT
শনিবার ময়মনসিংহে তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে যাচ্ছেন বিশ্বনন্দিত ইসলামিক বক্তা ও স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী। নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে অনুষ্ঠিত কুরআন মাহফিলে তিনি বক্তব্য রাখবেন।
শুক্রবার বিকেলে এই উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়োজক সংগঠন আল ইসলাম ট্রাস্ট। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, মাফহিলের জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে সার্কিট হাউজ মাঠ। দুই লাখ বর্গফুটের প্যান্ডেল ছাড়াও পুরো মাঠটিতে অবস্থান নিতে পারবেন সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা। মাহফিল ঘিরে তৈরি করা হয়েছে নিরাপত্তা বেষ্টনী। সেই সঙ্গে সিসি ক্যামেরায় মাহফিলটির নজরদারি করা হবে বলেও জানানো হয়।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ কামরুল হাসান মিলন বলেন, মিজানুর রহমান আজহারী কোনো দল বা গোষ্ঠীর নন। তিনি বিশ্ববরেণ্য একজন ইসলামিক স্কলার এবং বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ। তার আগমনের দিন ময়মনসিংহে লাখ লাখ মানুষ থাকবে। যেহেতু লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন, সেহেতু মানুষের কিছু অসুবিধা হতে পারে। সে জন্য তিনি সবার কাছে আগাম দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ইসলামের স্বার্থে নগরবাসী এই অসুবিধা মেনে নেবেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিতির কারণে শহরে যানবাহন চলাচলেও কিছুটা নিয়ন্ত্রণ থাকবে ওইদিন। শম্ভুগঞ্জ ব্রিজের মোড়ে আগেই বড় যানবাহনকে আটকে দেওয়া হবে। এছাড়া ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা, আকুয়া বাইপাস ও রহমতপুর বাইপাসে আটকে দেওয়া হবে বড় যানবাহন। তবে শহরের অবস্থা অনুযায়ী ইজিবাইক (অটো) চলাচল করবে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ময়মনসিংহে। সেক্ষত্রে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য শহরে চলাচলে কোন বাধা থাকবে না। তবে মূল শহরে যানজটের আশঙ্কায় সবাইকে বাইপাস ব্যবহারের অনুরোধ জানান কামরুল হাসান মিলন।
এদিকে এই মাহফিলকে সফল করার লক্ষ্যে বিএনপি ও জামায়েত ইসলামীসহ ইসলামি দলগুলো একযোগে কাজ করছে। এছাড়াও ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশের সঙ্গে আয়োজকদের সভা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ বলেন, আমরা মাহফিল সফল করতে সব ধরনের সহযোগিতা করছি। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে এই কোরআনের মাহফিল সফল হবে।
আয়োজক সূত্র জানায়, আজহারীর মাহফিল উপলক্ষে ১০ থেকে ১২ লাখ লোকের সমাগম ঘটতে পারে। এজন্য সার্কিট হাউজ মাঠ, জিলা স্কুল মাঠ, গভর্মেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল মাঠসহ উমেদ আলী মাঠ প্রস্তুত করা হচ্ছে। জিলা স্কুল হোস্টেল মাঠ শুধু নারীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই মাঠসহ বিভিন্ন পয়েন্ট ২২টি স্থানে বড় পর্দার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও সমাগমকে কেন্দ্র করে ৩টি মেডিকেল ক্যাম্প, ৪ শতাধিক ওজুখানা ও ওয়াশরুম এবং পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা থাকবে। তাছাড়া আজহারীর বক্তৃতা প্রচারের জন্য ২ শতাধিক মাইক লাগানো হয়েছে অনুষ্ঠানস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ ম জ ন র রহম ন আজহ র ইসল ম আজহ র
এছাড়াও পড়ুন:
আরও ৩৭ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার ও নওগাঁ সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ আরও ৩৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তাদের সবাইকেই বিজিবি আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। আটকরা সবাই নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। বিভিন্ন সময় কাজের জন্য অবৈধভাবে তারা ভারতে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে গত ৪০ দিনে ১ হাজার ৪৩৫ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিল বিএসএফ।
শুক্রবার ভোরে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার অচিন্তপুর সীমান্তের ২৯৫ নম্বর মেইন পিলারের ১ নম্বর সাব-পিলার এলাকা দিয়ে একই পরিবারের ১৪ জনসহ ১৫ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করেন। আটকদের মধ্যে ৯ শিশু ও ৩ নারী রয়েছেন।
বিজিবি জানায়, আটকরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। সবার দাবি, তারা নড়াইল জেলার কালিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা। ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর তারা বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে কাজের জন্য মুম্বাই যান। তাদের বিরামপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
একই দিন ভোরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। বিজিবির নিউ পাল্লাথল বিওপির টহল দল তাদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। আটকদের মধ্যে তিন নারী ও ছয় শিশু রয়েছে। বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ জানান, আটকদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের গোলাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে গতকাল ভোরে নারী, শিশুসহ সাতজনকে ঠেলে দেয় বিএসএফ। এর মধ্যে তিন নারী, দুই পুরুষ ও দু’জন শিশু। সীমান্তের মেইন পিলার ৭৪৩-এর ১ নম্বর সাব-পিলার এলাকা থেকে তাদের আটক করে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অমরখানা ক্যাম্পের টহল দল। জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা নিজেদের বাংলাদেশি দাবি করেন। সবার দাবি, তারা নড়াইল ও যশোর এলাকার বাসিন্দা। এর আগেও চার দফায় নারী, শিশুসহ ৬০ জনকে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ।
এ ছাড়া নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে আছিয়া বেগম (৫০) নামে এক নারীকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ। গতকাল দুপুরে উপজেলার জগদ্দল মাঠের মধ্যে থেকে তাঁকে বিজিবি আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে। ওই নারী ১০ বছর ধরে ভারতের মুম্বাইতে একটি হাসপাতালে আয়ার কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি যশোর জেলার ইশবপুর নামক এলাকায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার মুন্সিপাড়া বিওপি কড়ইগড়া সীমান্ত দিয়ে দুই শিশুসহ ৯ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। তাদের মধ্যে আটজনের বাড়ি বাগেরহাট এবং একজনের ধোবাউড়ায়। তারা সবাই আট বছর ধরে ভারতের চেন্নাইয়ের বিভিন্ন স্থানে কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন।
বিজিবি জানায়, চেন্নাই পুলিশের ধাওয়া খেয়ে এই ৯ জন দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের মেঘালয়ের শীবগঞ্জ পুলিশ তাদের আটক করে।
(সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি ও সংবাদদাতার পাঠানো খবর)