ওজন কমাতে হাঁটার ‘৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ’ কতটা সাহায্য করে
Published: 15th, February 2025 GMT
নতুন বছরে নতুন করে শরীরচর্চা শুরু করার পরিকল্পনা হয়তো আমাদের অনেকেরই ছিল। ব্যস্ততা, অলসতা অথবা অন্য কোনো কারণে কেউ কেউ ভুলতে বসেছেন সেই পরিকল্পনা। তবে আপনি চাইলে আজ থেকেই শুরু করতে পারেন শরীরচর্চা। প্রথমেই কোনো ভারী ব্যায়াম দিয়ে শুরু না করে বেছে নিতে পারেন হাঁটাহাঁটি। হাঁটা সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম এবং এর উপকারিতা অনেক। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ গ্রহণ করছে হাঁটার ৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ।
হাঁটার ৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ কী
হাঁটার ৬-৬-৬ চ্যালেঞ্জ হলো সকাল ৬টা অথবা সন্ধ্যা ৬টায় ৬০ মিনিট হাঁটা। হাঁটা শুরুর আগে ৬ মিনিট ‘ওয়ার্মআপ’ এবং হাঁটা শেষের পর ৬ মিনিট ‘কুল ডাউন’ করে নেওয়া। ‘ওয়ার্মআপ’ শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে পেশিকে শিথিল করে। আর ‘কুল ডাউন’ শরীরচর্চার পর শরীরকে আবারও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। এ ছাড়া আপনি চাইলে ওয়ার্মআপের আগে এবং কুল ডাউনের পর হালকা স্ট্রেচিং করতে পারেন।
নিয়মিত হাঁটা ওজন কমাতে সাহায্য করে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্য কেন? আদিবাসী নারী শ্রমিকরা পাই না সমান মজুরি
‘‘সাম্যের গান গাই-
আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বের যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’’
কাজী নজরুল ইসলাম ‘নারী’ কবিতায় নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলেছেন। কিন্তু, এ বৈষম্য সমাজের সর্বস্তরে এখনো রয়ে গেছে। দিনাজপুরের হাকিমপুরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেও সমান মজুরি পাচ্ছেন না তারা।
হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়া ঘুরে জানা যায়, বছরে আমন এবং ইরি মৌসুমে ধানের চারা রোপণ, ক্ষেত নিড়ানিসহ ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ করেন নারী শ্রমিকেরা। পুরুষের পাশাপাশি সমান তালে এসব কাজ করেন তারা। এ কাজে পুরুষ শ্রমিকেরা ৫০০ টাকা দৈনিক মজুরি পেলেও নারী শ্রমিকেরা পান ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। শুধু ধানের মৌসুমেই নয়, অন্যান্য ফসলের ক্ষেতে কাজ করলেও তারা পুরুষের সমান মজুরি পান না। এই বৈষম্য দূর হলে আরেকটু স্বচ্ছল জীবনযাপন করা যেত বলে তারা মনে করেন।
হাকিমপুর পৌর এলাকা চন্ডিপুর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়ার নারী শ্রমিক লক্ষ্মী হাসদা ও শান্তি সরেন বলেন, ‘‘আমরা বছরে দুই সিজন ধানের চারা রোপণসহ কাটা-মাড়াই করি। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫ পর্যন্ত কাজ করি। কিন্তু মজুরি কম পাই। পুরুষরা ৫০০ টাকা পেলে আমরা পাই সাড়ে ৩০০ টাকা। এটা কেমন নিয়ম?’’
অপর নারী শ্রমিক সুরুজ মনি হেম্ব্রন বলেন, ‘‘এখন তো হামরা তেমন কাম পাই না। আলু ও সরিষার মাঠে এখন মুসলমান বেটি ছোলরা কাম করে। আগে আমরাই করতাম, এখন অনেক কাম কমে গেছে। এরপর আবার পুরুষ মানুষের চেয়ে হামাক হাজিরাও কম দেয়। হারা (আমি) চলবো কি করে?’’
একই প্রশ্ন করেন হিলির তালতলার রানী হেম্ব্রন ও বিউটি হেম্ব্রন। শ্যামলী হাড্ডি বলেন, ‘‘এই বৈষম্যের কারণে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারছি না। বৈষম্য দূর হলে আরেকটু ভালো করে চলতে পারতাম।’’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাকিমপুর উপজেলার ১ নাম্বার খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, ‘‘আমরা জানি, নারী-পুরুষ সমান অধিকারী। কিন্তু, সমাজে নারী শ্রমিকেরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তারা সঠিক মজুরি পায় না। আমি শ্রমিক ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব- আপনারা এই বৈষম্য দূর করুন। নারীর ন্যায্য মজুরির ব্যবস্থা করুন।’’
খট্রা-মাধবপাড়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি শাহানুর আলম শাহিন বলেন, ‘‘আমাদের এই অঞ্চলে অনেক আদিবাসী নারী শ্রমিক আছেন, যারা বৈষম্যের শিকার। আমি গৃহস্থ এবং কৃষকদের বলতে চাই, আপনারা বৈষম্য না করে নারী-পুরুষ শ্রমিকদের সমান মজুরি দেবেন।’’
ঢাকা/তারা