ভারতের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানসহ অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। পাকিস্তান এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, ভারতকে অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম দিলে দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে।

নয়াদিল্লিকে অত্যাধুনিক অস্ত্র-সরঞ্জাম দিতে ওয়াশিংটনের ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শুক্রবার বিবৃতি দেয় ইসলামাবাদ। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপে এই অঞ্চলে সামরিক ভারসাম্যহীনতা আরও তীব্র হবে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি ফেরানোর প্রচেষ্টায় তা বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়গুলোতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একটি সামগ্রিক ও বস্তুনিষ্ঠ অবস্থান ঠিক করার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের মুখপাত্র এ বিষয়ে বলেন, এ অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি সামগ্রিক ও বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। বাস্তব পরিস্থিতিতে অগ্রাহ্য করে একপক্ষীয় অবস্থান নিলে শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।

ট্রাম্প ভারতের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র-সরঞ্জাম বিক্রির যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা নিয়ে চুক্তি হলে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্রদেশ এবং ইসরায়েল ও জাপানের বাইরে ভারত এফ-৩৫ পাবে। এফ-৩৫ বিশ্বের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে একটি। এই যুদ্ধবিমান শত্রুপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে (স্টিলথ) লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এটা পেলে ভারতের সামরিক সক্ষমতা জোরদার হবে।

‘সন্ত্রাসীদের’ বিচার নিয়ে প্রতিবাদ

ট্রাম্প ও মোদির যৌথ সংবাদ সম্মেলন নিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে ২০০৮ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্ত ‘সন্ত্রাসীদের’ বিচারের আওতায় আনতে পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। বিষয়টি নিয়েও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ বিবৃতিতে বলেছে, পাকিস্তান নিয়ে এ ধরনের বিবৃতি একপক্ষীয়। বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম ব দ সরঞ জ ম

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ