আওয়ামী লীগ–সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠায় বগুড়া জেলা যুবদলের ৫ নেতার পদ স্থগিত
Published: 17th, February 2025 GMT
যুবদল বগুড়া জেলা শাখার সদ্য ঘোষিত কমিটির পাঁচ নেতার পদ-পদবি স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদও স্থগিত করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাদের সঙ্গে দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ও ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল রোববার যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম (মুন্না) ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলামের নির্দেশক্রমে দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তাঁদের পদ স্থগিত করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উল্লিখিত নেতাদের দলীয় সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পদ স্থগিত হওয়া পাঁচ নেতা হলেন বগুড়া জেলা যুবদলের সদ্য ঘোষিত কমিটির সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সুজাউল ইসলাম, স্বাস্থ্য সম্পাদক মো.
সাংগঠনিক সূত্রে জানা যায়, ৪ ফেব্রুয়ারি বগুড়া জেলা যুবদলের ১০১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাবেক দুই সভাপতির মধ্যে জাহাঙ্গীর আলমকে যুবদলের জেলা কমিটির সভাপতি ও আবু হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
ওই কমিটি ঘোষণার পর অন্তত পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাঁদের ব্যাপারে এ সিদ্ধান্ত হয়।
বগুড়া জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন কমিটিকে বিতর্কিত করতে ফেসবুকে কয়েকজন নেতাকে নিয়ে নানা ভিত্তিহীন ছবি ছড়ানো হয়। কমিটির পরিচিতি সভা করার পরও এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো বন্ধ না হওয়ায় যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের পদ-পদবি স্থগিত করে অভিযোগ তদন্তের জন্য আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিকে অনুরোধ করেছি। সেই মোতাবেক কেন্দ্রীয় কমিটি বিতর্ক ওঠা পাঁচজনের দলীয় পদ-পদবি স্থগিত করেছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।