কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বাবাকে খাবার দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ইটভর্তি ট্রলির ধাক্কায় সাকিম হোসেন (১২) নামে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শাকিম দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের আকবর মন্ডলের ছেলে। সে তারাগুনিয়া সরকারী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়কের মথুরাপুর ইউনিয়নের কৈপাল হিসনাপাড়া মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ট্রলিচালক পালিয়ে গেলেও তার এক সহযোগীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ। তবে ঘাতক ট্রলিটিকে আটক করা হয়েছে।

তারাগুনিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, সাকিম হোসেন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ধরনের মৃত্যু খুবই মর্মান্তিক। সড়কে অবৈধ এসব যানবাহনের কারণে সাকিমের মত প্রতিভাবান শিশুকে জীবন দিতে হলো।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবাকে পানের বরজে খাবার দিয়ে শাকিম সাইকেল চালিয়ে বাড়ির দিকে ফিরছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইটভর্তি দ্রুতগামী ট্রলি তাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় সাকিম সাইকেল থেকে ছিটকে রাস্তার ওপর পড়ে গেলে ট্রলির চাকা তার শরীরের ওপর দিয়ে উঠে যায়। এতে সে গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনার পরপরই জনগণ বিক্ষোভ করে কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়ক অবরোধ করে রাখলে প্রায় আধা ঘণ্টা সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ এসে স্থানীয়দের সহায়তায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, দুর্ঘটনার পর ট্রলিচালক পালিয়ে গেলেও তার এক সহযোগীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। ঘাতক ট্রলিটিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন দ লতপ র

এছাড়াও পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)  বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।” 

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/চন্দন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ