জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে নক্ষত্র গঠনের বিরল এক প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা। ফিনিক্স গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের মধ্যে নক্ষত্র গঠনের দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, পৃথিবী থেকে ৫৮গ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ফিনিক্স গ্যালাক্সি ক্লাস্টার। এই ক্লাস্টারে একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল রয়েছে, যার ভর প্রায় এক হাজার সৌর ভরের সমান। এই ব্ল্যাকহোল গ্যাসকে উত্তপ্ত করে পার্শ্ববর্তী তারার গঠনকে প্রভাবিত করতে পারে। জেমস ওয়েবের ডেটা, হাবল স্পেস টেলিস্কোপ, চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরি ও বিভিন্ন স্থলভিত্তিক টেলিস্কোপের মাধ্যমে এমন এক শীতল গ্যাসের প্রবাহ সম্পর্কে জানা গেছে, যা নক্ষত্রের জন্মের জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। এই গ্যাস গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের বিবর্তন সম্পর্কে দীর্ঘকাল ধরে চলমান নানা তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে।

বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, জেমস ওয়েবের বর্ণালির তথ্য ক্লাস্টারের মধ্যে শীতল গ্যাসের একটি বিশদ মানচিত্র সম্পর্কে ধারণা দেয়। ফিনিক্স ক্লাস্টারে ব্যতিক্রমী উচ্চসংখ্যক নক্ষত্র গঠনের হার লক্ষ্য করা গেছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী মাইকেল ম্যাকডোনাল্ড বলেন, পূর্ববর্তী বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ বিভিন্ন তাপমাত্রায় গ্যাসের অসামঞ্জস্যপূর্ণ শীতলীকরণের হার দেখিয়েছিল। জেমস ওয়েব মধ্যবর্তী-তাপমাত্রার গ্যাস শনাক্ত করেছে, যা তারা গঠনের উষ্ণতম ও ঠান্ডা পর্যায়ের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করে। জেমস ওয়েবের মিড-ইনফ্রারেড ইন্সট্রুমেন্ট (এমআইআরআই) ব্যবহার করে এই পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা যাচ্ছে। এই গ্যাস প্রায় ৫ লাখ ৪০ জাচার ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার। এই শীতল গ্যাসের উপস্থিতি পূর্ববর্তী বিভিন্ন গবেষণার অসংগতি সমাধান করে ক্লাস্টারের তারকা গঠন চক্রের পূর্ণ চিত্র প্রদান করে।

আরও পড়ুনমহাবিশ্বের শুরু কখন২৩ নভেম্বর ২০২৪

বিজ্ঞানী মাইকেল রিফ জানিয়েছেন, জেমস ওয়েবের সংবেদনশীলতার কারণে নিয়ন সিক্স নির্গমন শনাক্তকরণের সুযোগ আছে। এটি মধ্য-ইনফ্রারেড বর্ণালিতে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে। গ্যাসের সন্ধান বিস্তৃত স্কেলে তারার গঠন বোঝার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

সূত্র: গ্যাজেটস৩৬০

আরও পড়ুনমহাবিশ্বের বৃহত্তম কাঠামোর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, কত বড় জানেন১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র গঠন র

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরা শুরু, চাঁদপুরের মাছঘাটে কর্মব্যস্ততা

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ৭০ কিলোমিটার নদীর অভয়াশ্রমে দুই মাস পর ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরা শুরু হয়েছে। সরকারি পর্যায়ের আদেশে জাটকা রক্ষা ও অন্যান্য মাছ বৃদ্ধিতে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৬০ দিন শিকার বন্ধের পর বুধবার মধ্যরাত থেকেই জেলেরা নদীতে শিকারে নেমেছে। কর্মব্যস্ততা ফিরেছে চাঁদপুরের মাছঘাটে। তবে প্রথম দিনে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলেরা।

মাছ আহরণ কম হওয়ায় প্রথম দিনে আড়তে তেমন ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১০ মণ ইলিশও আসেনি মাছের বড় ঘাট বড় স্টেশনে। তাছাড়া বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, সন্দ্বীপসহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ আজ দুপুর পর্যন্ত পৌঁছেনি চাঁদপুর মাছ ঘাটে। নদী তীরে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইলিশের কার্গো ও নৌকাও আসেনি। ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইলিশের পাইকারি বাজার চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন পর বেচাকেনা কিছুটা শুরু হওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে।

পুরান বাজারের হরিসভা অঞ্চলের জেলে বাবুল, সেলিম, মনির হোসেন বলেন, ভোরে মাছ ধরতে নেমেছি। নদীতে তেমন মাছ নাই। ইলিশ না পেলেও পোয়া, পাঙাশ, চিংড়িসহ বিভিন্ন দেশীয় মাছ পাওয়া যাচ্ছে। মাছ বিক্রির জন্য বড়স্টেশন মাছঘাটে এসেছি। তবে এই মাছে তেলের টাকাও উঠছে না।

ব্যবসায়ীরা জানান, আজকের আড়তে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজারে। এক কেজির কম ওজনের ২ হাজার ৫০০ টাকায়। সরবরাহ না বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তারা।

এদিকে শহরের সবচেয়ে বড় বাজার পালবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানের খুচরা ব্যবসায়ীরা আড়ত থেকে ইলিশই আনেননি। ‘কারণ’ হিসাবে কিরন নামে একজন ব্যবসায়ী বললেন, ‘তিন হাজার টাকার কেজিতে ইলিশ কে কিনবো বলেন? কয়জনে কিনবো? আমরা বেঁচমো কতো?’ 
 
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, এখন নদীতে পানি কম। স্রোত ও বৃষ্টিও কম। ফলে এ সময়ে ইলিশ কম পাওয়া যায়।

চাঁদপুরের ইলিশ ক্রেতা মোহন মাছঘাটে এসেছেন ইলিশ কিনতে। দাম শুনেই ফিরে গেলেন। তিনি সমকালকে বললেন, ‘আমাদের চাঁদপুরের মানুষের ইলিশ খাওয়া বড় কঠিন হয়ে পড়ছে। আজকেও যেমন আবার ভরা মৌসুমেও দেখবো দাম আর কমবে না!’

সম্পর্কিত নিবন্ধ