সদ্যই শেষ হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসর। এই আসরের আয়োজন নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। সফলতা-ব্যর্থতা দুই দিক নিয়েই আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনা শেষ না হতেই বিপিএলের আগামী আসর নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সেই সঙ্গে দিলেন আরো এক সুখবর। আগামী আসর থেকে লভ্যাংশের শেয়ার পাবেন ফ্র্যাঞ্চাইজি মানিকরা।

মিরপুরে সাবেক অধিনায়কদের সঙ্গে বৈঠকের পর এক ভিডিও বার্তা দেন ফারুক আহমেদ। খোলামেলা জানিয়েছেন বিপিএল নিয়ে নিজের পরিকল্পনা এবং আসর শেষে কি পেলেন না পেলেন।

ফারুক বলেন, ‘‘অগাস্ট মাসে নির্বাচিত হওয়ার পর আমার বেশ কিছু কমিটমেন্ট ছিল। আমি মনে করেছিলাম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে টিকিট বিক্রি একটা জায়গা যেখান থেকে আমরা ভালো একটা লাভ অর্জন করতে পারি, বিশেষত বিপিএলের মতো টুর্নামেন্ট থেকে।’’

আরো পড়ুন:

চার্টার্ড বিমানে শিরোপা নিয়ে বরিশালে তামিমরা

চারে এসে সফল শান্ত-হৃদয়

বিপিএলের এবারের আসরে টিকিট বিক্রি থেকে বড় একটা অংশ লাভ করেছে বিসিবি। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা এবার অবিশ্বাস্যরকম সফলভাবে টিকিট বিক্রি করেছি। এটার বিরাট কারণ ছিল আমরা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে গিয়েছি ১০০ ভাগ, আপনারা জানেন অত্যন্ত সিকিউরড, বিশ্বকাপে যেভাবে টিকিট বিক্রি হয় ওভাবে। আমরা যদিও পুরোপুরি অনলাইন যেতে পারিনি, জাস্ট নতুন একটা সিস্টেম দেখার জন্য। প্রথম রাউন্ডে আমরা ৩৫% টোটাল টিকিটের, পরের রাউন্ডে ৪০% গিয়েছিলাম অনলাইনে।’’

‘‘পুরো বিপিএলে আমরা প্রায় ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি করেছি। ছোট্ট একটা কম্পারিজন যদি আপনাদের দেই। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড গত ১০ আসরে যে টিকিট বিক্রি করেছে, আপনার ১৫ কোটি টাকার মতো। সেটা বিবেচনা করলে আমরা এক বছরেই সেটার কাছাকাছি চলে গিয়েছে। আমরা টিকিট সত্ত্ব বিক্রি বাবদও তিন বছর চুক্তি করেছি এক কোটি টাকা করে। এটা একটা বিরাট মাইলফলক।’’- আরো যোগ করেন ফারুক।

বিপিএলের আগামী আসরে সবচেয়ে বড় চমকটা পাবেন ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা। এবারের আসরে লভ্যাংশ শেয়ার নিয়ে তাদের যেই দাবি ছিল, সেটা আগামী আসরে বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছেন ফারুক।

ফারুক আরো বলেন, ‘‘ফ্র্যাঞ্চাইজিদের একটা বিরাট দাবি ছিল রেভিনিউ শেয়ারিং। তখন আমি তাদের বলেছিলাম, আমি আসলে লাভটা কত কী হয় এটাই আমি জানি না। আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। সব ফ্র‌্যাঞ্চাইজির সুখবর, যদিও রেভিনিউ শেয়ারিং বলতে সব ক্ষেত্রেই বোঝায়, অন্যগুলো ওরকম করে করতে পারিনি। তবে টিকিট বিক্রির একটা ভালো ভাগ তাদের দেবো।’’

এবারের আসরে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারী দলকেও পুরস্কৃত করেছে। সে সঙ্গে বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের জন্য প্রাইজমানিও বাড়িয়েছে। যেটা উন্নতির লক্ষণ বলে জানিয়েছেন ফারুক, ‘‘এবার আমরা থার্ড ও ফোর্থ পুরস্কার দিয়েছি। প্রাইজমানি ৭০% ইনক্রিজ করেছি।’’

এবারের আসরে নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে বিসিবি। আগামী আসরেও এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ফারুক, ‘‘বিপিএলে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। প্রথম দিকে টিকিট যেহেতু নতুন একটা সিস্টেম ঝামেলা ছিল। দুয়েকটা ফ্র্যাঞ্চাইজি টাকা দেওয়ার ব্যাপারেও একটু অসুবিধার সৃষ্টি করেছে। এটা নিয়ে অনেক নেতিবাচক নিউজ হয়েছে। তবে যদি ওভার অল দর্শক, উইকেট, টিকিট বিক্রি, দর্শকদের অংশগ্রহণ এবং আমাদের যে টিভি প্রডাকশন…। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’’

‘‘আগামীর বিপিএল নিয়ে এখনই কাজ শুরু করে দিয়েছি। একটা উইন্ডো বের করেছি আমরা। এখন তো সব দেশে অনেকগুলো টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হয়, ওগুলো ক্ল্যাশ হয়। আমরা একটু অন্যরকম করে যেন করতে পারি যেন একটু মানসম্পন্ন বিদেশি পাই।’’- সবশেষ যোগ করেন তিনি।

রিয়াদ/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ফ র য ঞ চ ইজ ব প এল র

এছাড়াও পড়ুন:

‘কলঙ্কমুক্ত হলো কী না’ প্রশ্নে যা বললেন আবাহনী কোচ

এমন একটা অবস্থা ছিল, ঢাকা লিগ শুরুর আগেই আবাহনীকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ধরা হতো। দল চালানো থেকে বাইশ গজে নানা সুযোগ-সুবিধা পেতো ক্রিকেটাঙ্গনে এমন আলোচনা ছিল ওপেন সিক্রেট।

এবার দেশের পট পরিবর্তনের সঙ্গে বদলে যায় ক্রীড়াঙ্গনের দৃশ্যও। ঢাকা লিগে এবার আর্থিক কারণে দল গড়তে হিমশিম খেয়েছে। নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল ক্লাবটি। এক ক্রিকেটার স্বাক্ষর করেও টাকা কম দেখে চলে যান অন্য দলে।

সব মিলিয়ে আবাহনীর জন্য মাঠে নামাও চ্যালেঞ্জিং ছিল। সব ছাপিয়ে আবাহনী চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, দাপুটে ক্রিকেটে বিগ বাজেটের দলগুলোকে হারিয়ে শেষপর্যন্ত চব্বিশতম ট্রফি ঘরে তোলে ক্লাবটি।

আরো পড়ুন:

টিম গড়া থেকে সবকিছুতেই চ্যালেঞ্জ ছিল, এ বছরের ট্রফি স্পেশাল: মোসাদ্দেক

দর্শককে মারতে গেলেন মাহমুদউল্লাহ

আবাহনীর কোচিংয়েও এসেছিল বদল। নির্বাচক পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে কোচিং বেছে নেন হান্নান সরকার। আবাহনীর হয়ে প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই সফল এই কোচ।

ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন হান্নান, “আমার কাছে মনে হয় ঢাকা ক্রিকেট লিগে আবাহনী বা মোহামেডানের জার্সি পড়লে বাড়তি মোটিভেশন চলে আসে।’’

আবাহনী কি এবার কলঙ্কমুক্ত হয়েছে? উত্তরে হান্নান বলেন, “এর আগে আবাহনীর চ্যাম্পিয়নশিপকে অনেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে আলোচনায় এনেছে। এবার দেশের প্রেক্ষাপট বদলানোর পর সব দলকে নিউট্রাল জায়গা থেকে চিন্তা করতে পারেন। অনেক দিক থেকে বিতর্ক হয়েছে, আম্পায়ারিং নিয়ে কথা হয়েছে। তবে দিন শেষে সবাই যার যার জায়গায় ফেয়ার থাকার চেষ্টা করেছে।”

“ঠিক একইভাবে মাঠের ক্রিকেটে সবাই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। মাঠের ক্রিকেটে যদি ভালো খেলে যদি চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় তাতে আলাদা তৃপ্তি কাজ করে। আমার মনে হয় এবার আবাহনীর সেভাবেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবার অনেকে মন থেকেই আবাহনীর জন্য দোয়া করেছে। এটা নিশ্চয়ই অন্যরকম ফিলিংস, বিতর্ক ছাড়া চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আলাদা ভালো লাগা থাকে।’’

এবার বাইরের কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা ছিল না। দলটির প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে অবদান রেখেছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন হান্নান।

“আগে আবাহনী অনেক টাকা খরচ করে দল বানাতো চ্যাম্পিয়ন মোটামুটি ধরে নেওয়াই যেতো। সেজন্য মাঠের ক্রিকেটকে আপনি ছোট করে দেখতে পারবেন না। এবার ভারি নাম ছিল না, মাঠের ক্রিকেটে ভিন্ন স্ট্রাটেজি সাজিয়ে জিততে হয়েছে, এটার তৃপ্তি অন্যরকম।’’

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘কলঙ্কমুক্ত হলো কী না’ প্রশ্নে যা বললেন আবাহনী কোচ