ফেনীতে কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে পিকআপের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ঢাকার ধামরাইয়ে গাড়িচাপায় স্বামী-স্ত্রীসহ প্রাণ গেছে তিনজনের। রাজধানীর মাতুয়াইলে পিকআপের ধাক্কায় প্রাণ গেছে আরেক দম্পতির। এ ছাড়া পিরোজপুরের নাজিরপুরে বাবা-ছেলে, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দু’জন এবং নওগাঁর ধামইরহাট, নাটোরের বড়াইগ্রাম, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে একজন করে নিহত হয়েছেন। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ঘন কুয়াশায় পাঁচ গাড়ির সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ২২ জন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনীর হাফিজিয়া এলাকায় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে পিকআপের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। মহিপাল হাইওয়ে থানার ওসি হারুনুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ জানান, আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পিকআপে বেশ কয়েকজন শ্রমিক ছিলেন।

ঢাকার ধামরাইয়ে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী ও এক মানসিক ভারসাম্যহীন প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। তারা হলেন বাবুল হোসেন (৩০), তাঁর স্ত্রী শারমিন আক্তার (২৮) ও সুভাষ লৌহকার (৭৪)। গত রোববার রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের বাথুলি এলাকায় গাড়িচাপায় প্রাণ যায় মোটরসাইকেল আরোহী দম্পতির। তারা টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বাসিন্দা। ধামরাইয়ে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। এর আগে একই সড়কের বালিথা এলাকায় গাড়িচাপায় নিহত হন পথচারী সুভাষ লৌহকার। 

রাজধানী যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে রাস্তা পার হওয়ার সময় পিকআপের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন স্বামী-স্ত্রী। গুরুতর আহত হয়েছে মেয়ে জুঁই আক্তার। স্বজনের মৃত্যুর সংবাদ শুনে মাতুয়াইলের বাসা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যাওয়ার পথে গতকাল সকালে যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল সাদ্দাম মার্কেটের সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত দম্পতি হলেন আবদুল জব্বার ও রুনা খানম।

পিরোজপুরের নাজিরপুরে বাসের ধাক্কায় ভ্যানযাত্রী বাবা-ছেলে নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার উপজেলার রুহিতলাবুনিয়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন চালিতাবাড়ী গ্রামের মাহাবুব মোল্লা (৪৫) ও তাঁর ছেলে ইয়াত মোল্লা (১৫)। দুর্ঘটনায় তিনজন আহত হন। এ ছাড়া মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাউশিয়া এলাকায় অজ্ঞাত গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন পুড়াজক বাউশিয়া গ্রামের নাঈম মৃধা (২৫) ও মধ্য বাউশিয়া গ্রামের সজিব প্রধান (২৩)। আহত হয়েছেন পুড়াচক বাউশিয়ার মো.

হামজা। 

নওগাঁর ধামইরহাটে মোটরসাইকেল গাছে ধাক্কা খেয়ে আসাদুজ্জামান রঞ্জু (৩৮) নামে এক পশুচিকিৎসকের প্রাণ গেছে। তিনি উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের বস্তাবর গ্রামের ওয়ারেছ আলী মণ্ডলের ছেলে। 

নাটোরের বড়াইগ্রামে তিন গাড়ির সংঘর্ষে পিকআপচালক নাহিদ হোসেন (৩০) নিহত হয়েছেন। সামনে থাকা সারবাহী ট্রাকের গতি কমিয়ে দিলে পেছনের চিটাগুড়বাহী লরি মাঝখানে থাকা ফলবাহী পিকআপকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপ দুমড়েমুচড়ে গিয়ে চালক নাহিদের প্রাণ যায়। তিনি নওগাঁ জেলার রেজ্জাকপুর এলাকার শাহিন আলমের ছেলে। 

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বাবাকে খাবার দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ইটভর্তি ট্রলির ধাক্কায় সাকিম হোসেন (১২) নামে এক শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে। সে দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের আকবর মণ্ডলের ছেলে ও স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গতকাল সকালে মথুরাপুর ইউনিয়নের কৈপাল হিসনাপাড়া মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রফিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের উপজেলার ভাঙ্গাপোল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। রফিতুলের বাড়ি মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামে। তিনি দৈনিক ৭১ বাংলাদেশ পত্রিকার সাংবাদিক।

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কামারখোলা এলাকায় গতকাল সকালে ঘন কুয়াশায় পাঁচটি গাড়ির সংঘর্ষ হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। যাত্রীরা জানান, ঘন কুয়াশা ও গাড়ির চালকদের অসাবধানতার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা)

 


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন র উপজ ল র এ দ র ঘটন র স ঘর ষ গতক ল স প কআপ র জন আহত এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 

রাখাইন রাজ্যের বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠাতে করিডোরের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

ঢাকার জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় সমকালকে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা।

জাতিসংঘ অন্য অংশীদারকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন জোরদার করবে। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে যে কোনো মানবিক সহায়তা বা সরবরাহের জন্য প্রথমে দুই সরকারের মধ্যে সম্মতি প্রয়োজন। সীমান্ত অতিক্রম করে সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর অনুমতি নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি ছাড়া জাতিসংঘের সরাসরি ভূমিকা সীমিত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রোববার এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের ব্যাপারে সম্মত। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, অবশ্যই আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সহযোগিতা করব।’ 

এ খবর চাউর হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা করছে রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাকথিত মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কারও সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনা হয়নি বলে দাবি করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গত অক্টোবরে জাতিসংঘের উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে ১২ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে রাখাইনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কথা উল্লেখ করা হয়। রাখাইনের পণ্য প্রবেশের জন্য আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সীমান্ত বন্ধ রয়েছে, আয়ের কোনো উৎস নেই। ভয়াবহ মূল্যস্থিতি, অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনে ধস, জরুরি সেবা এবং সামাজিক সুরক্ষায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ